Ajker Patrika

‘টি-টোয়েন্টিতে খারাপ দল নয় বাংলাদেশ’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
‘টি-টোয়েন্টিতে খারাপ দল নয় বাংলাদেশ’

‘টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ খুব ভালো দল নয়’—এমন প্রশ্নে গতকাল অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে হেসে উঠলেও বাংলাদেশ কোচ রাসেল ডমিঙ্গোর মনের ভেতরে আসলে জমে ছিল অভিমানের পাহাড়!

সেই পাহাড় ঠেলে নিজেকে হালকা করতেই কিনা ডমিঙ্গো কোনো রাখঢাক না রেখেই বললেন, ‘বাংলাদেশ দল সম্পর্কে টানা নেতিবাচক লেখা পড়তে পড়তে আমি হতাশ। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ খুব ভালো নয়, এটি শোনা খুবই হতাশার। আমরা টি-টোয়েন্টিতে ভালো নই, এটাতে একেবারেই একমত নই। টি-টোয়েন্টিতে আমরা কিছু দুর্দান্ত খেলোয়াড় পেয়েছি।’

কাল মিরপুরে অনুশীলনের ফাঁকে ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ডমিঙ্গো যতই আত্মপক্ষ সমর্থন করুন, পরিসংখ্যান তাঁর হয়ে কথা বলছে না। এটা ঠিক, টেস্টে বাংলাদেশ এখনো সেভাবে নিজেদের চেনাতে পারেনি। তবে ওয়ানডেতে পাঁচ-ছয় বছরে ধারাবাহিক সফল সাকিব-তামিমরা। সেখানে সাদা বলেরই আরেক সংস্করণে (টি-টোয়েন্টি) খেলতে গেলেই নিয়মিত পা হড়কায় বাংলাদেশ। সর্বশেষ জিম্বাবুয়ে সফরেও সেটি দেখা গেছে। সফরে একটা ম্যাচই বাংলাদেশ হেরেছে, সেটি টি-টোয়েন্টি।

পরিসংখ্যানও বলছে, টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বাংলাদেশ দল এখনো পড়ে আছে ‘তৃতীয় বিশ্বে’। গত ১৫ বছরে বাংলাদেশ ১০২ টি-টোয়েন্টি খেলে জিতেছে ৩৪টি। হেরেছে ৬৬টি। তিন ভাগের দুই ভাগ ম্যাচেই হারের হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে বাংলাদেশকে। এই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও র‍্যাঙ্কিংয়ের দশ নম্বর দল বাংলাদেশকে খেলতে হবে বাছাইপর্ব পেরিয়ে, সরাসরি নয়।

ডমিঙ্গো যে নিজেদের ‘ভালো দল’ বলতে চাইছেন, সেটি প্রমাণের ভালো একটা পরীক্ষা তাঁদের দিতে হবে কাল থেকে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাহমুদউল্লাহদের প্রথম পাঁচ ম্যাচের দ্বিপক্ষীয় সিরিজটি শুরু হচ্ছে আগামীকাল সন্ধ্যায়। টি-টোয়েন্টিতে এখনো বিশ্বকাপ না জিতলেও পাঁচবারের ওয়ানডে বিশ্বকাপজয়ীদের বিপক্ষে বাংলাদেশের পরীক্ষাটা একটু কঠিনই হবে।

অস্ট্রেলিয়া-পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে তিন দিনের রুম কোয়ারেন্টিন শেষে গতকাল সকালে মাঠে নেমেছেন সাকিব-মাহমুদউল্লাহরা। বাংলাদেশ টিম ম্যানেজমেন্টকে যথেষ্ট ভাবতে হচ্ছে কার্যকর একাদশ সাজাতে। জিম্বাবুয়েতে টি-টোয়েন্টি সিরিজে সৌম্য সরকার-মোহাম্মদ নাঈম ওপেন করেছেন। দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে জিম্বাবুয়ে সফরের শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে সৌম্যর চোট পাওয়াটা। যদিও কাল টিম ম্যানেজমেন্টকে স্বস্তি দিয়ে এই বাঁহাতি টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান নেটে ব্যাটিং করেছেন। কোনো কারণে যদি না খেলতে পারেন, সৌম্যর বিকল্প হিসেবে সাকিব-মিঠুনকে ওপেনিংয়ে পাঠানোর চিন্তা আছে বাংলাদেশের। যদিও ১৫ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে তিন সংস্করণে ৩৫২টি ম্যাচ খেললেও সাকিব কখনো ওপেন করেননি।

ডমিঙ্গো বেশ গুরুত্ব দিয়েই বললেন, ‘আমরা এটা (ওপেনিং সমস্যা) নিয়ে অনেক ভেবেছি। সাকিব আছে, সে ওপেনিংয়ে উঠে আসতে পারে। মোহাম্মদ মিঠুন দলে ফিরেছে। যদিও সে মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান, এই সংস্করণে প্রয়োজনে সে ওপেন করতে পারে, যদি কোনো ওপেনার চোট পায়।’

মিঠুনের অবশ্য ওপেন করার অভিজ্ঞতা আছে। ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলা দুই দলের সর্বশেষ ম্যাচে ওপেনিংয়ে নেমে ২৩ রান করেছিলেন মিঠুন। 

জিম্বাবুয়ে সফরে সিনিয়র ক্রিকেটারদের সঙ্গে তরুণেরাও ভালো করেছেন। যদিও তরুণ ক্রিকেটারদের অনেকেই এবার প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেলবেন। তবু সৌম্য-শরিফুলদের নিয়ে আশাবাদী কোচ, ‘আমি তরুণদের অগ্রগতি দেখে খুবই খুশি।’

মিরপুরের উইকেট কিছুটা মন্থর ও নিচু হয়। তবে বিশ্বকাপের ভাবনা মাথায় রেখে ডমিঙ্গো ইঙ্গিত দিলেন, এবার ভালো ব্যাটিং উইকেটই হচ্ছে! ভালো ব্যাটিং উইকেটে মিচেল স্টার্ক-অ্যাডাম জাম্পার বিপক্ষে বাংলাদেশ কেমন রানের পাহাড় গড়তে পারে, সেটিই দেখার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত