Ajker Patrika

নোট বই

আজকের পত্রিকা ডেস্ক
আপডেট : ০৫ আগস্ট ২০২১, ১৯: ৫৮
নোট বই

ষাটের দশকের শুরুতে আইয়ুব খানের সামরিক শাসনের সময়েই দানা বেঁধে উঠেছিল ছাত্র আন্দোলন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে মোনায়েম খানের আসা বন্ধ হয়ে গেল। সে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিলেন মূলত ছাত্রলীগ আর ছাত্র ইউনিয়নের নেতারা। সে সময় রাজনৈতিক দলাদলি থাকলেও পারস্পরিক সৌহার্দ্য ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় ছিল একটা বড় পরিবারের মতো। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিশতেন, শাসন করতেন এবং আদর করতেন।

সে সময়ের একটি ঘটনা বলছেন খালেদ শামস। খালেদ ক্যাম্পাসে যেতেন সাইকেলে চড়ে। পুরোনো আর্টস বিল্ডিংয়ের (তখন কলাভবন বলা হতো না, বলা হতো আর্টস বিল্ডিং) সামনে বটতলা ঘিরে ছিল একটি সবুজ চত্বর। এক দিন তিনি পাকা রাস্তা দিয়ে সাইকেল না চালিয়ে সাইকেলে চড়েই পার হলেন সবুজ লন। তারপর নির্দিষ্ট জায়গায় সাইকেল তালাবদ্ধ করে আর্টস বিল্ডিংয়ের সামনে এসে দাঁড়ালেন। সিঁড়ি দিয়ে ওঠার সময় হঠাৎ দেখেন, কে যেন তাঁর কাঁধে হাত দিয়ে দাঁড়িয়েছেন।

তিনি ছিলেন প্রক্টর নূরুল মোমেন। সাহিত্যিক হিসেবে নামডাক তাঁর।

তিনি বললেন, ‘এই ছেলে, তোমার নাম কী হে?’

‘আমার নাম খালেদ শামস, স্যার। একটা পঞ্চাশের ক্লাসে যাচ্ছি।’

‘তুমি কি আজকাল শুধু নোটবই পড়?’

খালেদ শামস বুঝতেই পারলেন না, হঠাৎ এমন প্রশ্ন কেন!

‘মানে বুঝলাম না, স্যার। নোটবই পড়ব কেন?’

‘না, মনে হচ্ছে তুমি আজকাল নোটবই পড়ছ। শর্টকাট করে জীবনে বেশি দূর এগোতে পারবে না।’

খালেদ শামস কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না।

এবার খালেদের পিঠে হাত দিয়ে খোলাসা করলেন নূরুল মোমেন।

‘সাইকেলে পাকা রাস্তা দিয়ে না এসে তুমি লনের মধ্য দিয়ে শর্টকাট করলে। লনটাও নষ্ট হলো। জীবনে সব জায়গায় শর্টকাট করা যায় না–মনে রেখো।’

সূত্র: খালেদ শামস, আমারে তুমি অশেষ করেছ, পৃষ্ঠা: ২৮৫-২৮৬

বিষয়:

আড্ডা
Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত