অলকানন্দা রায়, ঢাকা
স্বপ্ন ছিল যাঁর চিকিৎসক হওয়ার, তিনি আজ পুরোদস্তুর শিল্পী ও ব্যবসায়ী। ছুরি-কাঁচির বদলে হাতে তুলে নিয়েছেন রং, তুলি আর কাদা। খাবার টেবিলই যেন তাঁর ক্যানভাস। রংতুলির ছোঁয়ায় কাদামাটির কাঠামোয় বানানো থালা, বাটি, গ্লাস বাহারি নকশায় রঙিন করে তুলছেন দিনের পর দিন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় সিরামিকস বিষয়ে পড়াশোনা শেষে রেহানা আক্তার গড়ে তুলেছেন নিজের প্রতিষ্ঠান ‘ক্লে ইমেজ’।
লোকে যত্নের কাছে নত হয়
নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ২০০৩ সালে ঢাকার মিরপুরের একটি তিনতলা বাড়ির দুটো ঘরে শুরু হয়েছিল ক্লে ইমেজের যাত্রা। উজ্জ্বল রঙে, দেশীয় ঢঙে রোজ এখানে যত্নে তৈরি হয় থালা, বাটি, মগ, গ্লাস, হাঁড়ি, পাতিল, কড়াই, কাপ, পিরিচ, জগ এবং অন্দরসজ্জার জিনিসপত্র। সেগুলোর গায়ের নকশায় রয়েছে দেশীয় নন্দনতত্ত্বের ছোঁয়া। রয়েছে উজ্জ্বল রঙের বাহার। যেখানে বাজারভর্তি বিভিন্ন শেড আর হালকা রঙের বাসনপত্রের ছড়াছড়ি, সেখানে এমন উজ্জ্বল রঙের ব্যবহার যেন সিরামিকস দুনিয়াকে জানান দেওয়া এক নতুন ফর্মের কথা, ‘লোকে যত্নের কাছে নত হয়’।
পরিবেশবান্ধব উপকরণ
সিরামিকসের জিনিসপত্র বানাতে প্রয়োজন হয় বিশেষ একধরনের কাদা। রেহানা সেসব সংগ্রহ করেন বিভিন্ন সিরামিকস কারখানা থেকে। পরিত্যক্ত কাদা সংগ্রহ করে বিভিন্ন উপায়ে পুনরায় ব্যবহারের উপযোগী করে সেই কাদার মণ্ড দিয়ে ক্লে ইমেজে বানানো হয় হাঁড়ি, কড়াই, থালা, বাটি। এগুলো বানাতে ব্যবহার করা হয় অক্সাইড ও স্টেইন কালার। এ দুটো রং পরিবেশবান্ধব। এরপর পণ্যটির অবয়বের গায়ে চকচকে ভাব আনতে কিছু দ্রব্যের সমন্বয়ে তৈরি একটি বিশেষ পদার্থের প্রলেপ দিয়ে ধাপে ধাপে পোড়ানো হয়। সিরামিকস পণ্য তৈরির তিনটি মাধ্যমের মধ্যে স্টোনওয়ার মাধ্যমটি নিয়ে কাজ করেন রেহানা আক্তার। এই মাধ্যম ব্যবহার করে বানানো পণ্যের রং আইভরি বা অফ হোয়াইট হয়ে থাকে। এগুলো ওজনে একটু ভারী এবং দেখতে একটু মোটা হয়।
মেশিনেও হাতের ছোঁয়া
ক্লে ইমেজের জিনিসপত্র শুরুতে কুমারদের চাকা ব্যবহার করে বানানো হতো। বর্তমানে পণ্যের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ইলেকট্রিক জিগার মেশিন ব্যবহার করা হয়। সে মেশিনের ডায়াসে সহজে কোনো কিছুর অবয়ব তৈরি করে নিলেও মগ কিংবা কড়াইয়ের হ্যান্ডেল, নকশার ফ্রেম আঁকা, ফ্রেম ধরে রং করা, পাত্রের গায়ে চকচকে ভাব আনা—সবই করতে হয় হাতে।
বড় পরিবার
ক্লে ইমেজ প্রতিষ্ঠানটিতে এখন কাজ করছেন প্রায় ৭৫ জন মানুষ। রেহানা আক্তার মনে করেন, এরা সবাই তাঁর সন্তান। মায়ের মতো আগলে রাখেন তাঁদের। তাঁরাও ভালো কাজের মাধ্যমে শতগুণে ফিরিয়ে দেন। মনে আনন্দ নিয়ে একেকজন একেক সেক্টরে কাজ করেন। তাঁদের মধ্যে কেউ হয়তো এসেছিলেন দরিদ্র পরিবার থেকে, ছিলেন অক্ষরজ্ঞানহীন বা কারও পড়াশোনায় ছিল প্রবল আগ্রহ। রেহানা তাঁদের যত্ন নিয়ে কাজ শেখানোর পাশাপাশি পড়াশোনার দিকটিও খেয়াল রেখেছেন। নিজ খরচে শিক্ষক রেখে তাঁদের পড়িয়েছেন। রেহানার এই সন্তানদের কেউ কেউ খুব ছোট বয়সে কাজে এলেও সময় গড়াতে গড়াতে তাঁরা আজ বয়সের সঙ্গে শিক্ষায়, কর্মে, নৈপুণ্যে বেশ পরিণত ও দক্ষ হয়ে উঠেছেন।
হাতের নাগালে দাম
ক্লে ইমেজের নান্দনিক জিনিসপত্রের দাম হাতের নাগালেই। আকার ও নকশাভেদে বিভিন্ন জিনিসের দাম বিভিন্ন রকম। যেমন কড়াই ও বাটি ২৫০ টাকা থেকে শুরু হয়ে ৭০০ টাকা, প্লেট ২৫০ থেকে ১ হাজার টাকা এবং মগ ১৫০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে কেনা যাবে। পণ্য বিপণনের জন্য আগে বিভিন্ন জায়গায় শোরুম থাকলেও বর্তমানে সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ক্লে ইমেজ এখন কেবল অনলাইনে এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে ডিলারশিপের মাধ্যমে বিক্রি করে থাকে। ডিলাররা তাঁর এসব পণ্য বিক্রি করেন প্রায় ৩৫টি দেশে।
পাঠ্যবইয়ে রেহানা
ক্লে ইমেজ নামের প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করতে গিয়ে রেহানা আক্তারের ব্যক্তিগত অর্জনও কম নয়। বিবিএ অনার্স (এসএমই এবং ক্ষুদ্র অর্থায়ন) চতুর্থ বর্ষের বইয়ের ৭ নম্বর ‘নীতি এবং আইনগত অবকাঠামো’ নামের অধ্যায়ে রয়েছে রেহানা আক্তারের জীবনী।
শ্রেষ্ঠ ১০০ তালিকায়
গত ৫০ বছরের লাখ লাখ উদ্যোক্তার মধ্যে শ্রেষ্ঠ ১০০ উদ্যোক্তার তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন রেহানা আক্তার এবং ক্লে ইমেজ। সেই ১০০ উদ্যোক্তাকে নিয়ে লেখা হয়েছে ‘১০০ উদ্যোক্তা’ নামের একটি বই। লেখক মো. কামরুজ্জামান। ২০২২ ও ২০২৩ সালে পরপর দুবার পেয়েছেন
নারী উদ্যোক্তার পুরস্কার।
স্বপ্ন ছিল যাঁর চিকিৎসক হওয়ার, তিনি আজ পুরোদস্তুর শিল্পী ও ব্যবসায়ী। ছুরি-কাঁচির বদলে হাতে তুলে নিয়েছেন রং, তুলি আর কাদা। খাবার টেবিলই যেন তাঁর ক্যানভাস। রংতুলির ছোঁয়ায় কাদামাটির কাঠামোয় বানানো থালা, বাটি, গ্লাস বাহারি নকশায় রঙিন করে তুলছেন দিনের পর দিন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় সিরামিকস বিষয়ে পড়াশোনা শেষে রেহানা আক্তার গড়ে তুলেছেন নিজের প্রতিষ্ঠান ‘ক্লে ইমেজ’।
লোকে যত্নের কাছে নত হয়
নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ২০০৩ সালে ঢাকার মিরপুরের একটি তিনতলা বাড়ির দুটো ঘরে শুরু হয়েছিল ক্লে ইমেজের যাত্রা। উজ্জ্বল রঙে, দেশীয় ঢঙে রোজ এখানে যত্নে তৈরি হয় থালা, বাটি, মগ, গ্লাস, হাঁড়ি, পাতিল, কড়াই, কাপ, পিরিচ, জগ এবং অন্দরসজ্জার জিনিসপত্র। সেগুলোর গায়ের নকশায় রয়েছে দেশীয় নন্দনতত্ত্বের ছোঁয়া। রয়েছে উজ্জ্বল রঙের বাহার। যেখানে বাজারভর্তি বিভিন্ন শেড আর হালকা রঙের বাসনপত্রের ছড়াছড়ি, সেখানে এমন উজ্জ্বল রঙের ব্যবহার যেন সিরামিকস দুনিয়াকে জানান দেওয়া এক নতুন ফর্মের কথা, ‘লোকে যত্নের কাছে নত হয়’।
পরিবেশবান্ধব উপকরণ
সিরামিকসের জিনিসপত্র বানাতে প্রয়োজন হয় বিশেষ একধরনের কাদা। রেহানা সেসব সংগ্রহ করেন বিভিন্ন সিরামিকস কারখানা থেকে। পরিত্যক্ত কাদা সংগ্রহ করে বিভিন্ন উপায়ে পুনরায় ব্যবহারের উপযোগী করে সেই কাদার মণ্ড দিয়ে ক্লে ইমেজে বানানো হয় হাঁড়ি, কড়াই, থালা, বাটি। এগুলো বানাতে ব্যবহার করা হয় অক্সাইড ও স্টেইন কালার। এ দুটো রং পরিবেশবান্ধব। এরপর পণ্যটির অবয়বের গায়ে চকচকে ভাব আনতে কিছু দ্রব্যের সমন্বয়ে তৈরি একটি বিশেষ পদার্থের প্রলেপ দিয়ে ধাপে ধাপে পোড়ানো হয়। সিরামিকস পণ্য তৈরির তিনটি মাধ্যমের মধ্যে স্টোনওয়ার মাধ্যমটি নিয়ে কাজ করেন রেহানা আক্তার। এই মাধ্যম ব্যবহার করে বানানো পণ্যের রং আইভরি বা অফ হোয়াইট হয়ে থাকে। এগুলো ওজনে একটু ভারী এবং দেখতে একটু মোটা হয়।
মেশিনেও হাতের ছোঁয়া
ক্লে ইমেজের জিনিসপত্র শুরুতে কুমারদের চাকা ব্যবহার করে বানানো হতো। বর্তমানে পণ্যের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ইলেকট্রিক জিগার মেশিন ব্যবহার করা হয়। সে মেশিনের ডায়াসে সহজে কোনো কিছুর অবয়ব তৈরি করে নিলেও মগ কিংবা কড়াইয়ের হ্যান্ডেল, নকশার ফ্রেম আঁকা, ফ্রেম ধরে রং করা, পাত্রের গায়ে চকচকে ভাব আনা—সবই করতে হয় হাতে।
বড় পরিবার
ক্লে ইমেজ প্রতিষ্ঠানটিতে এখন কাজ করছেন প্রায় ৭৫ জন মানুষ। রেহানা আক্তার মনে করেন, এরা সবাই তাঁর সন্তান। মায়ের মতো আগলে রাখেন তাঁদের। তাঁরাও ভালো কাজের মাধ্যমে শতগুণে ফিরিয়ে দেন। মনে আনন্দ নিয়ে একেকজন একেক সেক্টরে কাজ করেন। তাঁদের মধ্যে কেউ হয়তো এসেছিলেন দরিদ্র পরিবার থেকে, ছিলেন অক্ষরজ্ঞানহীন বা কারও পড়াশোনায় ছিল প্রবল আগ্রহ। রেহানা তাঁদের যত্ন নিয়ে কাজ শেখানোর পাশাপাশি পড়াশোনার দিকটিও খেয়াল রেখেছেন। নিজ খরচে শিক্ষক রেখে তাঁদের পড়িয়েছেন। রেহানার এই সন্তানদের কেউ কেউ খুব ছোট বয়সে কাজে এলেও সময় গড়াতে গড়াতে তাঁরা আজ বয়সের সঙ্গে শিক্ষায়, কর্মে, নৈপুণ্যে বেশ পরিণত ও দক্ষ হয়ে উঠেছেন।
হাতের নাগালে দাম
ক্লে ইমেজের নান্দনিক জিনিসপত্রের দাম হাতের নাগালেই। আকার ও নকশাভেদে বিভিন্ন জিনিসের দাম বিভিন্ন রকম। যেমন কড়াই ও বাটি ২৫০ টাকা থেকে শুরু হয়ে ৭০০ টাকা, প্লেট ২৫০ থেকে ১ হাজার টাকা এবং মগ ১৫০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে কেনা যাবে। পণ্য বিপণনের জন্য আগে বিভিন্ন জায়গায় শোরুম থাকলেও বর্তমানে সেগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ক্লে ইমেজ এখন কেবল অনলাইনে এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে ডিলারশিপের মাধ্যমে বিক্রি করে থাকে। ডিলাররা তাঁর এসব পণ্য বিক্রি করেন প্রায় ৩৫টি দেশে।
পাঠ্যবইয়ে রেহানা
ক্লে ইমেজ নামের প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করতে গিয়ে রেহানা আক্তারের ব্যক্তিগত অর্জনও কম নয়। বিবিএ অনার্স (এসএমই এবং ক্ষুদ্র অর্থায়ন) চতুর্থ বর্ষের বইয়ের ৭ নম্বর ‘নীতি এবং আইনগত অবকাঠামো’ নামের অধ্যায়ে রয়েছে রেহানা আক্তারের জীবনী।
শ্রেষ্ঠ ১০০ তালিকায়
গত ৫০ বছরের লাখ লাখ উদ্যোক্তার মধ্যে শ্রেষ্ঠ ১০০ উদ্যোক্তার তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন রেহানা আক্তার এবং ক্লে ইমেজ। সেই ১০০ উদ্যোক্তাকে নিয়ে লেখা হয়েছে ‘১০০ উদ্যোক্তা’ নামের একটি বই। লেখক মো. কামরুজ্জামান। ২০২২ ও ২০২৩ সালে পরপর দুবার পেয়েছেন
নারী উদ্যোক্তার পুরস্কার।
গত বছর আমার বিয়ে হয় ছেলের ইচ্ছার বিরুদ্ধে। বিয়ের কয়েক দিন পরে সে আমাকে ছেড়ে চলে যায়। আর কখনো খোঁজখবর নেয়নি। তখন আমাদের বিয়ে রেজিস্ট্রি হয়েছিল। কিন্তু তখন আমার স্বামীর বয়স কম ছিল। তার বিরুদ্ধে আমি মামলা করতে চাইলে কাজি সাহেব আমাদের বিয়ের কাবিলনামা অস্বীকার করেন। তখন আমি আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন আই
০৬ আগস্ট ২০২৫গ্রহ-নক্ষত্র আর মহাবিশ্বের মতিগতি বোঝার জন্য রাজপরিবারে একজন জ্যোতির্বিদ থাকবেন না, তা কি হয়? সে কারণে প্রায় ৩৫০ বছর আগে, ১৬৭৫ সালে রাজা দ্বিতীয় চার্লস ব্রিটিশ রাজপরিবারে একজন জ্যোতির্বিজ্ঞানীকে নিয়োগ দেন। এই মর্যাদাপূর্ণ পদকে বলা হয় ‘অ্যাস্ট্রোনমার রয়্যাল’।
০৬ আগস্ট ২০২৫চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ জান্নাতুল মাওয়া। তাঁকে অনেকে চেনে অনলাইনে চাঁদপুরের ইলিশ ও নদীর সুস্বাদু তাজা মাছ বিক্রির জন্য। এখন তিনি ‘ইলিশ রানি’ নামে বেশ পরিচিত। জীবন তাঁকে টেনে এনেছে এখানে।
০৬ আগস্ট ২০২৫চলতি বছরের জুলাই মাসে ২৩৫ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতন ও সহিংসতার শিকার হয়েছে। বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ জানিয়েছে, তাদের মধ্যে ৮৬ জন কন্যা ও ১৪৯ জন নারী। মহিলা পরিষদের দেওয়া মাসিক প্রতিবেদনের তথ্য পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত মোট ১ হাজার ৭৯০ জন নারী ও কন্যাশিশু সহিংসতা...
০৬ আগস্ট ২০২৫