ইশতিয়াক হাসান
কানাডার নোভা স্কটিয়ার হেলিফাক্সের ১৮০ মাইল দক্ষিণ-পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগরে সেবল দ্বীপের অবস্থান। এখানে মানুষের স্থায়ী বসতি নেই। জায়গাটি বিখ্যাত এখানে অবস্থান করা প্রায় ৫০০ বুনো ঘোড়ার জন্য।
সাগরের মাঝখানে অবস্থিত প্রায় ২৫ মাইল লম্বা বালুর তৈরি একটি দ্বীপ বলতে পারেন একে। এটি জাহাজের ধ্বংসাবশেষের জন্যও পরিচিত। এক সময় এর বালুর চড়ায় ধাক্কা খেয়ে অনেক জাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনা ঘটে। তাই অনেকে একে আটলান্টিকের সমাধিক্ষেত্র বা জাহাজের সমাধিক্ষেত্র হিসেবেও ডাকে।
তবে সেবল দ্বীপকে মানুষ সবচেয়ে বেশি চেনে এখানে অবস্থান করা প্রায় ৫০০ বুনো ঘোড়ার জন্য। কানাডিয়ান সরকার এই বুনো ঘোড়াগুলো সংরক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছে এবং জায়গাটিতে জাতীয় উদ্যান বা ন্যাশনাল পার্ক ঘোষণা করেছে। গবেষণার কাজে অল্প কিছু বিজ্ঞানী সাধারণত অবস্থান করেন দ্বীপটিতে। তাও সারা বছর নয়। পর্যটকেরা দ্বীপটি ভ্রমণ করতে পারেন কেবল জুন থেকে অক্টোবরের মধ্য। তারপরও আবহাওয়া এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখে।
দ্বীপের এই ঘোড়াগুলো বুনো হলেও এগুলোকে সে অর্থে বন্যপ্রাণী বলা মুশকিল। কারণ এগুলো এই দ্বীপে আনায় ভূমিকা মানুষেরই। অবশ্য এ নিয়ে নানা ধরনের তত্ত্ব আছে। একটি ধারণা হলো জাহাজে করে ঘোড়া নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল কোনো জায়গায়। ওই জাহাজ দ্বীপের কিনারে বিধ্বস্ত হয়। সে সময় যে ঘোড়াগুলো বেঁচে যায় এর বংশধর এগুলো। অন্য একটি মত হলো, পর্তুগিজ অভিযাত্রী কিংবা নর্সম্যানরা এদের দ্বীপে ফেলে যায়।
তবে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য তত্ত্ব হলো ১৮ শতকের দিকে ঘোড়াগুলো এখানে আনা হয়। সম্ভবত নোভা স্কটিয়া থেকে আকাডিয়ানদের সরিয়ে নেওয়ার সময় তাদের ঘোড়াগুলোকে দ্বীপে ছাড়া হয়। এগুলোর পরবর্তী প্রজন্ম এই বুনো ঘোড়া। আকাডিয়ানদের পূর্বপুরুষেরা ছিল ফরাসি। এদিকে কানাডার এই অঞ্চলটি তখন ছিল ব্রিটিশদের একটি উপনিবেশ। বোস্টনের এক জাহাজ মালিক ও ব্যবসায়ী থমাস হেনককের ওপর দায়িত্ব চাপে আকাডিয়ানদের আমেরিকার কোনো উপনিবেশে পৌঁছে দেওয়ার। হেনকক কী করলেন, জাহাজে করে যাওয়ার সময় সেবল দ্বীপে ঘোড়াগুলো নামিয়ে দিয়ে গেলেন। সৌভাগ্যক্রমে দ্বীপের বৈরী পরিবেশে ঘোড়াগুলো নিজেদের মানিয়ে নেয়, বংশবিস্তারও করে।
অবশ্য মাঝখানে একবার কালো মেঘ হানা দিয়েছিল এ ঘোড়াদের জীবনে। ১৯৫০ সালের দিকে কিছু গবেষক দাবি করলেন, এ দ্বীপের বাস্তুসংস্থানের জন্য ঘোড়াগুলো ঝুঁকি। অতএব দ্বীপ থেকে ঘোড়াগুলোকে বিতাড়িত করার ব্যাপারে ভাবা শুরু হলো। প্রাণীগুলোকে মূল ভূমিতে ফিরিয়ে নিয়ে সেখানকার কয়লার খনির কাজে লাগানোর কিংবা মাংসের জন্য মারার বিষয়েও চিন্তা-ভাবনা শুরু হয়। যদিও পরে নানা কারণে এই পরিকল্পনা আর বাস্তবায়িত হয়নি। এরপর ঘোড়াগুলোর সেবল দ্বীপেই স্বাধীনভাবে বিচরণে আর বাধা আসেনি। এমনকি কানাডা সরকার জায়গাটিকেই সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করে।
দ্বীপে এখন ৪০-৫০ টির মতো ঘোড়ার দল বিচরণ করে। সাধারণত সর্বোচ্চ ৫০টি পর্যন্ত ঘোড়া থাকে এক একটি দলে।
উপকূলীয় এলাকা হলেও এখানে পরিবেশ অনেক শীতল। এমনকি গ্রীষ্মেও তাপমাত্রা থাকে অনেক কম। এই দ্বীপে কখনো কখনো তুষারপাতও ঘটে।
শীতল আবহাওয়া আর বালুময় জমির কারণে এখানে খুব বেশি গাছপালা জন্মায় না। এখানে অবশ্য বুনো গোলাপের ঝাড় আছে। দ্বীপের মাঝে সাগর মোটামুটি এক মাইল দূরে এমন জায়গাগুলোতে হালকা লবণাক্ত পানির কিছু ডোবা পাওয়া যায়। সেখানে বিশেষ ধরনের স্পঞ্জ পাওয়া যায়। মাঝখানে অটোয়া থেকে নানা ধরনের গাছ এনে লাগানো হয় এখানে। এগুলোর মধ্যে কেবল একটি স্কট পাইন বাঁচে। গবেষণা স্টেশনের পাশে ছোট্ট এক প্রাকৃতিক বনসাই হিসেবে এটি টিকে যায়। এখন নিশ্চয় জানতে ইচ্ছা করছে এখানকার ঘোড়ারা কী খেয়ে বাঁচে? দ্বীপে শক্ত এক ধরনের ঘাস হয়। বলা চলে এটা ঘোড়াদের অন্যতম খাবার। আবার সৈকতে জন্মানো মটরের মতো এক ধরনের উদ্ভিদও খায়। এরা সাগরের শৈবালও খায়।
তবে দ্বীপটি কিন্তু পাখিপ্রেমীদের কাছে রীতিমতো স্বর্গরাজ্য। এ পর্যন্ত ৩৫০ প্রজাতির পাখি এখানে আস্তানা গাড়ার রেকর্ড আছে। এগুলোর মধ্যে ১৬ প্রজাতি এখানেই বংশবিস্তার করে। দ্বীপটিতে কিন্তু প্রচুর সিলও আছে। বিশেষ করে ধূসর সিলদের প্রচুর দেখবেন সেবল দ্বীপের সৈকতে। ঘোড়াদের দেখবেন দিব্যি সিলের পাশে চরে বেড়াচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে তাই দুর্গম এই দ্বীপে ভ্রমণের কথা ভাবাই যায়, কী বলেন?
সূত্র: এটলাস অবসকিউরা, ডিসকভার হেলিফেক্স
কানাডার নোভা স্কটিয়ার হেলিফাক্সের ১৮০ মাইল দক্ষিণ-পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগরে সেবল দ্বীপের অবস্থান। এখানে মানুষের স্থায়ী বসতি নেই। জায়গাটি বিখ্যাত এখানে অবস্থান করা প্রায় ৫০০ বুনো ঘোড়ার জন্য।
সাগরের মাঝখানে অবস্থিত প্রায় ২৫ মাইল লম্বা বালুর তৈরি একটি দ্বীপ বলতে পারেন একে। এটি জাহাজের ধ্বংসাবশেষের জন্যও পরিচিত। এক সময় এর বালুর চড়ায় ধাক্কা খেয়ে অনেক জাহাজ বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনা ঘটে। তাই অনেকে একে আটলান্টিকের সমাধিক্ষেত্র বা জাহাজের সমাধিক্ষেত্র হিসেবেও ডাকে।
তবে সেবল দ্বীপকে মানুষ সবচেয়ে বেশি চেনে এখানে অবস্থান করা প্রায় ৫০০ বুনো ঘোড়ার জন্য। কানাডিয়ান সরকার এই বুনো ঘোড়াগুলো সংরক্ষণের দায়িত্ব নিয়েছে এবং জায়গাটিতে জাতীয় উদ্যান বা ন্যাশনাল পার্ক ঘোষণা করেছে। গবেষণার কাজে অল্প কিছু বিজ্ঞানী সাধারণত অবস্থান করেন দ্বীপটিতে। তাও সারা বছর নয়। পর্যটকেরা দ্বীপটি ভ্রমণ করতে পারেন কেবল জুন থেকে অক্টোবরের মধ্য। তারপরও আবহাওয়া এ ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখে।
দ্বীপের এই ঘোড়াগুলো বুনো হলেও এগুলোকে সে অর্থে বন্যপ্রাণী বলা মুশকিল। কারণ এগুলো এই দ্বীপে আনায় ভূমিকা মানুষেরই। অবশ্য এ নিয়ে নানা ধরনের তত্ত্ব আছে। একটি ধারণা হলো জাহাজে করে ঘোড়া নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল কোনো জায়গায়। ওই জাহাজ দ্বীপের কিনারে বিধ্বস্ত হয়। সে সময় যে ঘোড়াগুলো বেঁচে যায় এর বংশধর এগুলো। অন্য একটি মত হলো, পর্তুগিজ অভিযাত্রী কিংবা নর্সম্যানরা এদের দ্বীপে ফেলে যায়।
তবে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য তত্ত্ব হলো ১৮ শতকের দিকে ঘোড়াগুলো এখানে আনা হয়। সম্ভবত নোভা স্কটিয়া থেকে আকাডিয়ানদের সরিয়ে নেওয়ার সময় তাদের ঘোড়াগুলোকে দ্বীপে ছাড়া হয়। এগুলোর পরবর্তী প্রজন্ম এই বুনো ঘোড়া। আকাডিয়ানদের পূর্বপুরুষেরা ছিল ফরাসি। এদিকে কানাডার এই অঞ্চলটি তখন ছিল ব্রিটিশদের একটি উপনিবেশ। বোস্টনের এক জাহাজ মালিক ও ব্যবসায়ী থমাস হেনককের ওপর দায়িত্ব চাপে আকাডিয়ানদের আমেরিকার কোনো উপনিবেশে পৌঁছে দেওয়ার। হেনকক কী করলেন, জাহাজে করে যাওয়ার সময় সেবল দ্বীপে ঘোড়াগুলো নামিয়ে দিয়ে গেলেন। সৌভাগ্যক্রমে দ্বীপের বৈরী পরিবেশে ঘোড়াগুলো নিজেদের মানিয়ে নেয়, বংশবিস্তারও করে।
অবশ্য মাঝখানে একবার কালো মেঘ হানা দিয়েছিল এ ঘোড়াদের জীবনে। ১৯৫০ সালের দিকে কিছু গবেষক দাবি করলেন, এ দ্বীপের বাস্তুসংস্থানের জন্য ঘোড়াগুলো ঝুঁকি। অতএব দ্বীপ থেকে ঘোড়াগুলোকে বিতাড়িত করার ব্যাপারে ভাবা শুরু হলো। প্রাণীগুলোকে মূল ভূমিতে ফিরিয়ে নিয়ে সেখানকার কয়লার খনির কাজে লাগানোর কিংবা মাংসের জন্য মারার বিষয়েও চিন্তা-ভাবনা শুরু হয়। যদিও পরে নানা কারণে এই পরিকল্পনা আর বাস্তবায়িত হয়নি। এরপর ঘোড়াগুলোর সেবল দ্বীপেই স্বাধীনভাবে বিচরণে আর বাধা আসেনি। এমনকি কানাডা সরকার জায়গাটিকেই সংরক্ষিত এলাকা ঘোষণা করে।
দ্বীপে এখন ৪০-৫০ টির মতো ঘোড়ার দল বিচরণ করে। সাধারণত সর্বোচ্চ ৫০টি পর্যন্ত ঘোড়া থাকে এক একটি দলে।
উপকূলীয় এলাকা হলেও এখানে পরিবেশ অনেক শীতল। এমনকি গ্রীষ্মেও তাপমাত্রা থাকে অনেক কম। এই দ্বীপে কখনো কখনো তুষারপাতও ঘটে।
শীতল আবহাওয়া আর বালুময় জমির কারণে এখানে খুব বেশি গাছপালা জন্মায় না। এখানে অবশ্য বুনো গোলাপের ঝাড় আছে। দ্বীপের মাঝে সাগর মোটামুটি এক মাইল দূরে এমন জায়গাগুলোতে হালকা লবণাক্ত পানির কিছু ডোবা পাওয়া যায়। সেখানে বিশেষ ধরনের স্পঞ্জ পাওয়া যায়। মাঝখানে অটোয়া থেকে নানা ধরনের গাছ এনে লাগানো হয় এখানে। এগুলোর মধ্যে কেবল একটি স্কট পাইন বাঁচে। গবেষণা স্টেশনের পাশে ছোট্ট এক প্রাকৃতিক বনসাই হিসেবে এটি টিকে যায়। এখন নিশ্চয় জানতে ইচ্ছা করছে এখানকার ঘোড়ারা কী খেয়ে বাঁচে? দ্বীপে শক্ত এক ধরনের ঘাস হয়। বলা চলে এটা ঘোড়াদের অন্যতম খাবার। আবার সৈকতে জন্মানো মটরের মতো এক ধরনের উদ্ভিদও খায়। এরা সাগরের শৈবালও খায়।
তবে দ্বীপটি কিন্তু পাখিপ্রেমীদের কাছে রীতিমতো স্বর্গরাজ্য। এ পর্যন্ত ৩৫০ প্রজাতির পাখি এখানে আস্তানা গাড়ার রেকর্ড আছে। এগুলোর মধ্যে ১৬ প্রজাতি এখানেই বংশবিস্তার করে। দ্বীপটিতে কিন্তু প্রচুর সিলও আছে। বিশেষ করে ধূসর সিলদের প্রচুর দেখবেন সেবল দ্বীপের সৈকতে। ঘোড়াদের দেখবেন দিব্যি সিলের পাশে চরে বেড়াচ্ছে। সবকিছু মিলিয়ে তাই দুর্গম এই দ্বীপে ভ্রমণের কথা ভাবাই যায়, কী বলেন?
সূত্র: এটলাস অবসকিউরা, ডিসকভার হেলিফেক্স
ডলফিনকে প্রাণিজগতের সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রজাতির একটি হিসেবে গণ্য করা হয়। সমুদ্রজীব বিজ্ঞানীদের মতে, ডলফিন শুধু শিকার ধরতে নয়, নিজেদের আনন্দ কিংবা কৌতূহল মেটাতেও নানা ধরনের বুদ্ধি খাটায়। এবার সেই বুদ্ধিমত্তার নতুন এক দিক উঠে এসেছে বিবিসি ওয়ানের নতুন তথ্যচিত্রে—যেখানে দেখা গেছে, তরুণ ডলফিনেরা পাফার মাছ।
২৫ দিন আগেতবে এটি মোটেও শখ করে বাজানো হয় না। বরং, নতুন এই ফ্যাশন গরুকে আরামদায়ক রাখার চেষ্টার পাশাপাশি দুধের মান এবং উৎপাদন বাড়ানোর নতুন উপায় হিসেবেও দেখা হচ্ছে। এই প্রবণতা টিকটকসহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে এবং কোটি কোটি দর্শক এর ভিডিও দেখে মুগ্ধ হয়েছেন।
১১ আগস্ট ২০২৫গত ১৫ বছরে ব্রিটেনে রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে একমাত্র স্থিতিশীলতার প্রতীক ল্যারি—ডাউনিং স্ট্রিটের বিখ্যাত বিড়াল। এই ট্যাবি বিড়াল এরই মধ্যে পাঁচ প্রধানমন্ত্রীর ‘অধীনে’ ডাউনিং স্ট্রিটের ‘চিফ মাউজার’ বা প্রধান ইঁদুর শিকারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে ফেলেছে। বর্তমানে সে ষষ্ঠ প্রধানমন্ত্রীর অধীনে দায়িত্ব
১০ আগস্ট ২০২৫ডেনমার্কের একটি চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ সেখানকার মাংসাশী প্রাণীদের খাদ্য হিসেবে ছোট পোষা প্রাণী দান করার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
০৯ আগস্ট ২০২৫