Ajker Patrika

দেশে সব ব্যবসাই একদিন ই-কমার্সের মাধ্যমে হবে

আপডেট : ০৩ মে ২০২১, ১৩: ২৬
দেশে সব ব্যবসাই একদিন ই-কমার্সের মাধ্যমে হবে

কাজী কাওছার সুইট। বর্তমানে ইলহাম লাইফস্টাইল লিমিটেডের হেড অব ই-কমার্স। এর আগে তিনি অথবা ডটকম এবং দীর্ঘ সময় রকমারি ডটকমে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে ছিলেন। বাংলাদেশে ই-কমার্সের ক্ষেত্রটা কেমন, ই-কমার্স নিয়ে কী প্রত্যাশা, এ ক্ষেত্রে নতুন প্রজন্মের জন্য কী সম্ভাবনা অপেক্ষা করছে– প্রভৃতি বিষয় নিয়ে তিনি আজকের পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন। তার সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন নাসিম আহমেদ।

ই-কমার্সের সঙ্গে কীভাবে জড়িত হলেন?

২০১২ সালের কথা। তখন আমি ঢাকার ইস্টার্ন প্লাজার একটা মার্কেটিং কনসালটেন্সি ফার্মে জব করতাম। আমার বাবা কোরবানির ঈদের সকালে আমাদের এক আত্মীয়ের বাড়িতে নিয়ে গেলেন। সেখানেই কথা হলো রকমারি ডটকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে। পরে ঢাকায় ফিরে রকমারির হেড অফিসে গিয়ে কথা হলো। তখনও জানতাম না অনলাইনে এভাবে কেনাকাটা করা যায়। বিভিন্ন আলোচনা শেষে এটাই ঠিক হলো যে, ই-কমার্সেই কাজ করবো। এরপরই শুরু হলো ই-কমার্স–এর সাথে পথচলা।

বাংলাদেশে ই-কমার্সের ক্ষেত্রটা কেমন দেখছেন?

দেশে ই-কমার্স–এর ক্ষেত্রটা বিশাল। ১৬৭ মিলিয়ন মানুষের দেশে যেমন ই-কমার্স ব্যবসা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে তেমনিভাবে কর্মসংস্থানও তৈরি হচ্ছে। সরকার এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠান মিলে অনেকেই কাজ করছে এই খাতে। ই-ক্যাবের তথ্য মতে বাংলাদেশে রেজিস্টার্ড ই-কমার্স কোম্পানির সংখ্যা ১ হাজার ৩০০–এর বেশি। আর যদি আমরা এফ-কমার্স–এর কথা বলি তাহলে বর্তমানে প্রায় চার লাখের বেশি উদ্যোক্তা রয়েছে।

কী কী সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন, আপনার অভিজ্ঞতা থেকে বলুন

বাংলাদেশে ই-কমার্সের ক্ষেত্রে বড় সমস্যা লজিস্টিকস। সঠিক সময়ে পণ্য ডেলিভারি করার জন্য এখনও কুরিয়ারের ওপর নির্ভর করতে হয়। কিন্তু এখনো তেমন কোনো ভালো কুরিয়ার কোম্পানি গড়ে ওঠেনি। যারা কাজ করছে তারা রিমোট এরিয়াতে ডেলিভারি করতে পারে না। ফলে প্রান্তিক পর্যায়ের গ্রাহকদের এই সেবার আওতায় আনা যাচ্ছে না।

বড় সমস্যার মধ্যে অন্যতম আরেকটি হলো ইন্টারনেটের ধীর গতি। যেহেতু এই ব্যবসা ইন্টারনেটনির্ভর, তাই ধীর গতির ইন্টারনেট দিয়ে আসলে দ্রুততম সময়ে সার্ভিস দেওয় সম্ভব হচ্ছে না। ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো যে স্পিডের কথা বলে তা কেবল কাগজে–কলমে। অন্যদিকে মোবাইলে যারা ইন্টারনেট ব্যবহার করেন তারাও কাঙ্ক্ষিত মানের সেবা পাচ্ছেন না। ফলে ই-কমার্স দ্রুত বাড়তে পারছে না।

মূলধন সংকটও বর্তমানে বড় বাধা। যারা উদ্যোক্তা হতে চাইছেন বা ব্যবসা বড় করতে চাইছেন প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে সেটা করতে পারছেন না। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সরকারের অন্যান্য সংস্থা সহজশর্তে ঋণ দেওয়ার কথা বললেও সে সুবিধা অনেকেই নিতে পারছেন না। অন্যদিকে দেশের বড় ব্যবসায়ীরাও এখানে তেমন বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

ই-কমার্স ব্যবসার কেমন ভবিষ্যৎ দেখতে চান?

ই-কমার্স থেকে প্রত্যাশা অনেক। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে হলে ই-কমার্সের বিকল্প নেই। আমি আশা করি আগামীতে ই-কমার্সই বাংলাদেশের বাজার দখল করবে। আজকে যতো ধরনের ব্যবসা আমরা দেখছি তার সবই একদিন ই-কমার্সের মাধ্যমে হবে। একইসঙ্গে বড় যে কাজ হবে, ই-কমার্স ব্যবসার প্রসারের সাথে সাথে লাখ লাখ লোকের কর্মসংস্থান তৈরি হবে।

নতুন প্রজন্মের যারা ই–কমার্স ব্যবসায় আসার কথা ভাবছে তাদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?

নতুন প্রজন্মের যারা এই পেশা বা ব্যবসায় আসতে চায় তাদের জন্য মেসেজ হলো, প্রথমেই এ বিষয়ে পড়াশোনা করতে হবে। গোটা বিষয় সম্পর্কে জানতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না হলেও ই-ক্যাব ব্লগ এবং গুগলের মাধ্যমে ইন্টারনেট থেকে সহজেই প্রয়োজনীয় তথ্য জানা যাবে। যার ফলে যেকেউ সহজেই এই সেক্টর সম্পর্কে জানতে পারবে এবং উদ্যোক্তা কিংবা চাকরিজীবী যেটা হতেই চাইবে সেটা সহজ হবে। না জেনে না বুঝে কোনো কিছু করা উচিত না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত