Ajker Patrika

৩ ম্যাচে বাংলাদেশের ১৩ গোল হজমের ব্যাখ্যা কী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৩ মার্চ ২০২৪, ১৩: ৩৯
৩ ম্যাচে বাংলাদেশের ১৩ গোল হজমের ব্যাখ্যা কী

যাকে বলে স্রেফ উড়ে যাওয়া, গত পরশু রাতে ফিলিস্তিনের কাছে ঠিক সেভাবেই হেরেছে বাংলাদেশ ফুটবল দল। র‍্যাঙ্কিংয়ের ৮৬ ধাপ এগিয়ে থাকা ফিলিস্তিনের সঙ্গে প্রথম ৪০ মিনিট চোখে চোখ রেখে লড়াই করার পরও বাংলাদেশ ১০ মিনিটে চার গোল হজম করে যেভাবে বিধ্বস্ত হয়েছে, সেটা যথেষ্ট দৃষ্টিকটু ঠেকেছে বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের চোখে। কেন, কী কারণে জামাল ভূঁইয়ারা ৫-০ গোলে হারলেন, সেটিই এখন বড় প্রশ্ন।

বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ‘আই’ গ্রুপে প্রথম ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৭-০ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। সেই ম্যাচ নিয়ে খুব বেশি উচ্চবাচ্য হয়নি; কিন্তু ফিলিস্তিন ম্যাচ নিয়ে হচ্ছে। আগের চার হারের কোনোটিতেই ফিলিস্তিনের কাছে ২ গোলের বেশি ব্যবধানে হারেনি বাংলাদেশ। সাফের সেমিফাইনালে খেলা, ঘরের মাঠে লেবাননকে ঠেকিয়ে দেওয়ার পর ফিলিস্তিনের বিপক্ষে লাল-সবুজদের কাছে ন্যূনতম লড়াই চেয়েছিলেন দর্শক। কিন্তু ৪০ মিনিটের পর কোন ভুলে বাংলাদেশের এমন দশা, সেই কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না কোচ হাভিয়ের কাবরেরাও, ‘ম্যাচের শুরুর ৪০ মিনিট আমরা দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি, ফিলিস্তিনের মতো খুবই শক্তিশালী দলের বিপক্ষে চোখে চোখ রেখে লড়াই করেছি; কিন্তু প্রথমার্ধে যেভাবে আমাদের খেলার মান পড়ে গিয়েছিল। আমরা জানতাম ফিলিস্তিনের বিপক্ষে খেলার সময় কোনো একপর্যায়ে এমন কিছু হতে পারে, কিন্তু প্রথমার্ধের শেষ দিকে মান অনেক বেশি পড়ে যায় এবং আমি মনে করি, সেটার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়া দলের জন্য খুব কঠিন ছিল।’

শুরুর ৪০ মিনিট ভালো খেলার পর বাংলাদেশ প্রথম গোল হজম করে ৪৩ মিনিটে গিয়ে। ভালো খেলার পর ওই গোলটাই বাংলাদেশের রক্ষণের মনোবল নষ্ট করেছে বলে মনে করেন জাতীয় দলের সাবেক ফরোয়ার্ড জাহিদ হাসান এমিলি, ‘প্রথম গোলটা হওয়ার পরই আমরা ম্যাচ থেকে বের হয়ে গেছি। মনোবল ছিল না, আর এ কারণে প্রচুর ভুল হয়েছে। বেশির ভাগ গোল হয়েছে বক্সের ভেতরে। প্রতিপক্ষকে মার্কিং করাটা একদমই ঠিকঠাক হয়নি।’

বিশ্বকাপ বাছাইয়ে তিন ম্যাচে ১৩ গোল হজম করেছে বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়া ও ফিলিস্তিন ম্যাচে গোলরক্ষক ছিলেন মিতুল মারমা। ১২ গোল হজম করে এই গোলরক্ষক পাস মার্ক পেলেও বিশ্লেষকদের কাঠগড়ায় কোচের কৌশল ও দলের রক্ষণভাগ। তারিক কাজী না থাকায় পরশু ম্যাচে সেন্টারব্যাক হিসেবে খেলেছেন বিশ্বনাথ ঘোষ, যিনি এখন বাংলাদেশের সেরা রাইটব্যাক। সেন্টারব্যাক পজিশনে নড়বড়েই দেখা গেছে বিশ্বনাথকে। দলে শাকিল হোসেনের মতো সেন্টারব্যাক থাকার পরও কেন বিশ্বনাথকে পজিশনে খেলানো হলো, সেই জবাবে বসুন্ধরা কিংসের গোলরক্ষক কোচ নুরুজ্জামান নয়নের উত্তর, ‘কোচ সৌদিতে ১৫ দিন ক্যাম্প করিয়ে হয়তো বুঝতে পেরেছেন শাকিলের চেয়ে বিশ্বনাথের সামর্থ্য বেশি। সে কিন্তু বসুন্ধরায় সেন্টারব্যাক পজিশনেও খেলেছে। দলে বসুন্ধরার ডিফেন্ডার ছিল, তাদের বোঝাপড়া যেমনটা হওয়া উচিত ছিল. ম্যাচে সেটা একদমই খুঁজে পাওয়া যায়নি।’

ফিলিস্তিনের বিপক্ষে বাংলাদেশের রক্ষণ শুরুতে একটু ওপরেই খেলেছে, যাকে বলা হয় হাইলাইন ডিফেন্স। গতিময় প্রতিপক্ষকে অফসাইডের ফাঁদে আটকে অস্বস্তিতে ফেলতে গিয়ে বাংলাদেশ শেষটায় হয়েছে বিধ্বস্ত। রক্ষণের চার ডিফেন্ডারের মধ্যে বোঝাপড়ার অভাবটা ছিল স্পষ্ট। জাতীয় দলের সাবেক তারকা ফরোয়ার্ড ও মোহামেডান কোচ আলফাজ আহমেদ মনে করেন, অতি আত্মবিশ্বাসে শেষটায় এমন হারের স্বাদ পেতে হয়েছে বাংলাদেশকে। তিনি বলেছেন, ‘মনে রাখা উচিত ছিল, ম্যাচটা আমাদের ৯০ মিনিট খেলতে হতো, ৪০ মিনিট নয়। দলে তারিক কাজীর মতো একজন সত্যিকার স্টপার ছিল না। মানসম্মত খেলোয়াড় ছিল না। আসলে আমাদের প্রতিপক্ষ কারা সেটাও মাথায় রাখা উচিত ছিল।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত