Ajker Patrika

১৯৯২, ২০০৯ ও ২০১৭ ’র মতো এবারের পাকিস্তান

লাইছ ত্বোহা, ঢাকা
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২২, ২৩: ৫৩
১৯৯২, ২০০৯ ও ২০১৭ ’র মতো এবারের পাকিস্তান

ক্রিকেট একটাই খেলা। কিন্তু বাকিরা যা খেলে, পাকিস্তান যেন একই খেলা ভিন্নভাবে খেলে। কখনো জেতার ম্যাচ হেরে যায়, কখনোবা শেষ দুই বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ১১ নম্বর ব্যাটারও ম্যাচ জিতিয়ে ফেরে। ক্রিকেট সমর্থকদের স্মৃতিপটে স্পষ্ট হয়ে থাকার কথা–গত এশিয়া কাপে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ জেতানো নাসিম শাহের দুটি ছক্কা। 

চলতি অস্ট্রেলিয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কথা–ভারতের বিপক্ষে যে ম্যাচ জেতার, তা হেরে গেল শেষ বলে গিয়ে। পরের ম্যাচে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১ রানে হেরে রীতিমতো অবাকই করে দিয়েছিল ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ দল। তখনই তো বাড়ি ফেরার প্রহর গোনার কথা বাবর আজমদের।

পরের গল্পটা কেমন হলো–টানা তিন ম্যাচে জিতে পাকিস্তান এখন সেমিফাইনালে। নেদারল্যান্ডসের কাছে ‘চোকার্স’ খ্যাত দক্ষিণ আফ্রিকার ১৩ রানে হার পাল্টে দেয় শেষ চারের চিত্রই।

অথচ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জিতলেই নাট্যমঞ্চে এত অভিনয়ের প্রয়োজন হত না বাবর আজমদের। শেষ তিন ম্যাচে–দক্ষিণ আফ্রিকা, নেদারল্যান্ডস ও বাংলাদেশকে হারিয়ে কঠিন কাজটিই করল পাকিস্তান। এজন্যই অন্যদের চেয়ে ভিন্ন দল তারা। আগামী বুধবার সিডনিতে প্রথম সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে লড়বে বাবর বাহিনী।

পাকিস্তানের ক্রিকেট ইতিহাস এবং আইসিসির সেরা প্রতিযোগিতাগুলোর ইতিহাস বলছে, পাকিস্তান ওয়ানডে বিশ্বকাপ, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এবং চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি যেবারই জিতেছে, ওই প্রতিযোগিতাগুলোর প্রথম ম্যাচটি হেরেছে তারা। পরের পর্বে যেতে দলটির বরাবরই হিমশিম খাওয়ার অভ্যাস পুরনো। কিন্তু প্রশ্ন হলো–এবারও কী পাকিস্তান নিজেদের ইতিহাস ধরে চলবে? কারণ, দলটির সেমিফাইনাল পর্যন্ত আসার পথটা পূর্বের ইতিহাসের মতোই। তবুও শেষটা কী হবে, তা সময় বলে দেবে।

দেখা যেতে পারে আরও আগের ইতিহাসও। দলটি তাদের সব বড় ট্রফি ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়াতে জিতেছে। ২০০৯ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দ্য ওভালে গ্রুপ পর্বে প্রথম ম্যাচেই ইংল্যান্ডের কাছে ৪৮ রানে হারে পাকিস্তান। সুপার এইটেও প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে ১৯ রানে হারে দলটি। কিন্তু লর্ডসে ফাইনালে লঙ্কানদের ৮ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবার টি-টোয়েন্টি চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল শহিদ আফ্রিদিরা।

১৯৯২ ওয়ানডে বিশ্বকাপ হয়েছিল ৯টি দল নিয়ে। রবিন রাউন্ড লিগ পদ্ধতিতে প্রত্যেক দল খেলেছিল ৮টি করে ম্যাচ। এক দল অপর দলের বিপক্ষে একটি করে ম্যাচ খেলেছিল। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়। বাকি ৭ ম্যাচে ৪ টিতে জয় ও ৩ টিতে হারে ইমরান খানের দল। পাকিস্তানের শুরুটা হয়েছিল হার দিয়ে। মেলবোর্নে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে ১০ উইকেটে হেরে প্রতিযোগিতা শুরু করে দলটি।

পয়েন্ট টেবিলের উপরের চার দল নিয়ে সেমিফাইনাল হয়েছিল। ৯ পয়েন্ট নিয়ে ৪ নম্বর দল হিসেবে সেমিফাইনালে উঠেছিল পাকিস্তানও। সেমিতে রবিন রাউন্ডের শীর্ষ দল নিউজিল্যান্ডকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পায় পাকিস্তান। কিন্তু ইনজামাম-উল হক ও ওয়াসিম আকরামরাদের নৈপুণ্যে কিউইদের ৪ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে দল।

মেলবোর্ন ফাইনালে ইংল্যান্ডকে ২২ রানে হারিয়ে ওয়ানডে বিশ্বকাপের পঞ্চম মঞ্চে শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছিল ইমরান খানরা।

আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির বর্তমান চ্যাম্পিয়নও পাকিস্তান। ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে গ্রুপ পর্বে ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন (ডিএলএস) পদ্ধতিতে প্রথম ম্যাচেই ভারতের বিপক্ষে ১২৪ রানে হেরেছিল সরফরাজ আহমেদের দল। কিন্তু লন্ডনের দ্য ওভালে ফাইনালে ভারতকে নিয়ে এক রকম ছেলেখেলায় মেতে উঠেছিল পাকিস্তান। ১৮০ রানের বিশাল ব্যবধানে বিরাট কোহলিদের হারিয়ে ট্রফি জেতে মোহাম্মদ আমির-হাসান আলিরা।

চলতি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও নিভু নিভু থেকে জ্বলে ওঠা। আবারও সেই অস্ট্রেলিয়া। যেখানে’ ৯২–এর ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতেছিল পাকিস্তান। এবারও কী একই রকম ইতিহাস লিখতে পারবে ইমরান-ওয়াসিমদের উত্তসূরীরা?

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত