Ajker Patrika

৫ বছর ৬ মাস ২২ দিন পর ফিরলেন দেশের এই লেগ স্পিনার

তাসনীম হাসান
৫ বছর ৬ মাস ২২ দিন পর ফিরলেন দেশের এই লেগ স্পিনার

ঢাকা: টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটে কত দিন পর জুবায়ের হোসেন লিখন! রেকর্ড বলছে ৫ বছর ৬ মাস ২২ দিন পর ফিরেছেন তিনি। ২০১৫ সালের ১৩ নভেম্বর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক জুবায়েরের। অভিষেক মন্দ হয়নি, ২ ওভারে ২ উইকেট নিয়েছিলেন এই লেগ স্পিনার। এরপর কোথায় নিজেকে ছাড়িয়ে যাবেন, সেটি তো হয়ইনি। গত সাড়ে পাঁচ বছরে আন্তর্জাতিক দূরে থাক, ঘরোয়া টি–টোয়েন্টিতেও খেলা হয়নি জুবায়েরের। অবশেষে আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে তাঁর সুযোগ মিলল টি–টোয়েন্টি খেলার।

ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের (ডিপিএল) দিনের প্রথম ম্যাচে পারটেক্স স্পোর্টিংয়ের হয়ে মাঠে নামেন জুবায়ের। ২৫ বছর বয়সী লেগ স্পিনারের ফেরাটা অবশ্য রঙিন হয়নি। বৃষ্টির কবলে পড়ে ১৫ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে পারটেক্স আগে ব্যাটিং করে ১৫ ওভারে করতে পারে ৪ উইকেটে ৭৭ রান। জুবায়ের যখন বোলিংয়ে এলেন ততক্ষণে ম্যাচ অর্ধেক শেষ। ওল্ড ডিওএইচএস ৫ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে তুলে ফেলে ৩৯ রান। তবে জুবায়েরের তৃপ্তি, ৩ ওভারের উইকেটশূন্য থাকলেও দলের সবচেয়ে নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছেন তিনিই, দিয়েছেন ১৫ রান। তাঁর দল হেরেছে ১০ উইকেটে।

লিগ স্পিনার নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেটের চির হাহাকার পূরণের স্বপ্ন দেখিয়ে জুবায়েরের আবির্ভাব। তাঁকে নিয়ে চন্ডিকা হাথুরুসিংহে এতটাই আগ্রহী ছিলেন, ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে আরেকটু পরিণত হওয়ার সুযোগ না দিয়েই ২০১৪ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে অভিষেক করিয়ে দেন। ওই সিরিজে ১১ উইকেট নিয়ে নিজের সামর্থ্যের জানানও দিয়েছিলেন। পরের বছর ভারতের বিপক্ষে ফতুল্লা টেস্টে বিরাট কোহলিকে যেভাবে বোল্ড করেছিলেন জুবায়ের, তা আজও ভোলার কথা নয় ক্রিকেটপ্রেমীদের। সেদিন জুবায়েরের বোলিংয়ে মুগ্ধ হয়েছিলেন সাকিব আল হাসানও, ‘ও এমন এক স্পিনার, যার দেশের হয়ে টেস্টে ৩০০-৪০০ উইকেট নেওয়ার ক্ষমতা আছে। তার লেগ স্পিন ভালো হচ্ছে, যথেষ্ট ঘুরছে। আমাদের জন্য সে অনেক বড় সম্পদ হবে, বিশেষ করে টেস্টে।’

জুবায়ের আর ‘বড় সম্পদ’ হয়ে উঠতে পারেননি পরের পাঁচ বছরে। ২০১৫ সালের জুলাইয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঢাকা টেস্টেই তাঁর শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তিন সংস্করণে ১০ ম্যাচে ২২ উইকেট পাওয়া জুবায়ের বাংলাদেশ ক্রিকেটের বড় এক আক্ষেপের নাম। এখন তো ঘরোয়া ক্রিকেটও নিয়মিত খেলার সুযোগ মেলে না জুবায়েরের। বাংলাদেশের ক্রিকেটে অপার সম্ভাবনা জাগিয়ে আসা জুবায়ের গত তিন বছরে ঘরোয়া ক্রিকেটের শীর্ষ পর্যায়ে খেলতে পেরেছেন মোটে ৭ ম্যাচ! তাঁর জায়গা মেলে না বিসিবির কোনো দলে।

 ২০১৯ সালের নভেম্বরে সর্বশেষ জুবায়ের ঘরোয়া ক্রিকেট খেলেছেন। রাজশাহী বিভাগের বিপক্ষে সেই ম্যাচেও তাঁকে সেভাবে ব্যবহার করেননি ঢাকা অধিনায়ক নাদিফ চৌধুরী। দুই ইনিংস মিলিয়ে রাজশাহী বিভাগ ১৮৩.৩ ওভার ব্যাটিং করলেও জুবায়ের বোলিংয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন ১৭ ওভার। তাতেই ২ উইকেট পেয়েছিলেন তিনি। এরপর আর স্বীকৃত কোনো লিগ কিংবা টুর্নামেন্টে তাঁকে দেখা যায়নি তাঁকে।

সুযোগ না পেতে পেতে হতাশার চোরাবালিতে হাবুডুবু খাওয়া জুবায়ের অবশেষে খেলার সুযোগ পেয়েছেন। আজ বোলিংটা দুর্দান্ত না হলেও কৃপণ বোলিংয়ে জানিয়ে রেখেছেন, তাঁর প্রতি আস্থা রাখা যায়! সমস্যাটা তো এখানেই, ঘরোয়া ক্রিকেটে কোনো দলই যে সহজেই দেশের একজন লেগ স্পিনারের ওপর ভরসা করতে পারে না! এবার ডিপিএলে তাঁর দল পারটেক্স কতটা আস্থা রাখে, সেটাই দেখার।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত