সৌদি আরবে সাড়ে চার হাজার বছর আগের একটি মহাসড়ক নেটওয়ার্ক আবিষ্কার করেছেন প্রত্নতাত্ত্বিকেরা। এই সড়কের পাশেই রয়েছে সুসংরক্ষিত প্রাচীন সমাধির সারি।
সমাধিগুলোর বেশিরভাগই হয় প্যানডেন্ট আকৃতির বা আংটির মতো। আংটির মতো সমাধিগুলো দুই মিটার পর্যন্ত উচ্চতার প্রাচীর দ্বারা বেষ্টিত একটি পাথরের ফলকের মতো। আর প্যানডেন্ট আকৃতিরগুলোতে লেজের মতো বর্ধিত অংশ আছে।
রেডিওকার্বন ডেটিং ব্যবহার করে গবেষকরা নির্ধারণ করেছেন, একটি নমুনা ২ হাজার ৬০০ থেকে ২০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ আগের। যদিও সমাধিগুলো প্রায় এক হাজার বছর আগে পর্যন্ত পুনর্ব্যবহার করা হতো বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার গবেষকরা গত বছর জুড়ে এ নিয়ে বিস্তর অনুসন্ধান চালিয়েছেন। এর মধ্যে ছিল হেলিকপ্টার দিয়ে আকাশ থেকে পরিচালিত জরিপ, স্থল জরিপ এবং খনন। এছাড়া স্যাটেলাইট চিত্রও পরীক্ষা হয়েছে।
গত ডিসেম্বরে হোলোসিন জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর-পশ্চিম আরবের আল-উলা এবং খায়বার কাউন্টি দুটিতে বিশাল দূরত্ব পর্যন্ত বিস্তৃত এ মহাসড়ক। এটি মূলত ‘অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পথ’, অর্থাৎ শবযাত্রার জন্য ব্যবহৃত হতো বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গবেষক ম্যাথিউ ডাল্টন মার্কিন সম্প্রচার মাধ্যম সিএনএনকে বলেন, ‘এই অঞ্চলে বসবাসকারী লোকেরা হাজার হাজার বছর ধরে এই সড়ক সম্পর্কে জানে। কিন্তু আমি মনে করি, আমরা স্যাটেলাইট ইমেজ পাওয়ার আগে পর্যন্ত জানা যায়নি এই প্রত্নস্থানটি কতটা ব্যাপক।’
ডাল্টন বলেন, শেষকৃত্যের পথগুলো, যা তিনি হেলিকপ্টার থেকে দেখেছিলেন, শত শত, হয়তো হাজার হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। বর্তমানেও প্রধান সড়কে ভ্রমণকারীরা প্রায়শই একই রুট অনুসরণ করে।
ডাল্টন আরও বলেন, ‘প্রধান রাস্তাগুলোও একই রুট অনুসরণ করে কারণ দুটি স্থানের মধ্যে এটিই সংক্ষিপ্ততম পথ। কিছু ক্ষেত্রে সমাধিগুলো এতো ঘন ঘন স্থাপিত যে আপনি সড়ক ব্যবহারে বাধ্য হবেন।’
গবেষক মেলিসা কেনেডি সিএনএনকে বলেন, ‘সমাধিগুলো ৪ হাজার ৫০০ বছর পুরোনো। এগুলো এখনও যে তাদের আসল উচ্চতায় দাঁড়িয়ে আছে, সেটি সত্যিই অবাক করার মতো। আমি মনে করি, এটিই বিশেষ করে সৌদি আরবকে বাকি অঞ্চল থেকে আলাদা করে। এগুলো যেভাবে সংরক্ষিত হয়েছে সেটি অবিশ্বাস্য!’
কেনেডির বিশ্বাস, এককভাবে বা ছোট ছোট গ্রুপকে এখানে সমাহিত করা হতো। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পথ বরাবর প্রায় ১৮ হাজার সমাধি চিহ্নিত করেছেন তাঁরা। এর মধ্যে নমুনা হিসেবে খননের জন্য ৮০টিকে বেছে নেওয়া হয়েছে।
গবেষকরা মনে করছেন, সমাধিগুলোর অনেক আগে থেকেই রাস্তাটি ছিল। তবে তাঁরা এখনও নিশ্চিত নন, কেন সমাধিগুলো সড়ক বরাবর তৈরি করা হয়েছিল। যদিও পরবর্তীতে গ্রিস এবং রোমে জমির মালিকানার সঙ্গে সম্পর্কিত একই ধরনের প্রথার দিকে ইঙ্গিত করেছেন কেনেডি।
কেনেডি বলেন, ‘সম্ভবত মালিকানা বোঝানোর একটি উপায় হিসেবে সমাধিগুলো নির্মিত হয়েছে। কারণ আপনি আপনার প্রিয়জনকে আপনার চলাচলের রাস্তার পাশেই সমাধিস্থ করবেন, যাতে প্রায়শই তাঁদের কবর অতিক্রম করেন এবং তাঁদের কথা আপনার স্মরণ হয়।’
প্রত্নতাত্ত্বিক দলটির জন্য পরবর্তী পদক্ষেপ হবে আরও রেডিওকার্বন ডেটিং করা এবং ডেটা বিশ্লেষণ করা। ডাল্টন বলছেন, সড়কগুলো ইয়েমেন পর্যন্ত প্রসারিত হতে পারে। কারণ ইয়েমেন এবং উত্তর সিরিয়ায় একই ধরনের সমাধি দেখতে পাওয়া যায়।
কেনেডি বলছেন, তৃতীয় সহস্রাব্দ একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়কাল। কারণ এই সময়টাতেই মিশরের পিরামিড নির্মিত হয়। এখানে অনেকগুলো ভিন্ন সংস্কৃতির যোগাযোগ ঘটেছে। ফলে এই সময়কালে সৌদি আরবে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার নিদর্শনটি নতুন গবেষণার পথে খুলে দিতে পারে।
বিজ্ঞান সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
সৌদি আরবে সাড়ে চার হাজার বছর আগের একটি মহাসড়ক নেটওয়ার্ক আবিষ্কার করেছেন প্রত্নতাত্ত্বিকেরা। এই সড়কের পাশেই রয়েছে সুসংরক্ষিত প্রাচীন সমাধির সারি।
সমাধিগুলোর বেশিরভাগই হয় প্যানডেন্ট আকৃতির বা আংটির মতো। আংটির মতো সমাধিগুলো দুই মিটার পর্যন্ত উচ্চতার প্রাচীর দ্বারা বেষ্টিত একটি পাথরের ফলকের মতো। আর প্যানডেন্ট আকৃতিরগুলোতে লেজের মতো বর্ধিত অংশ আছে।
রেডিওকার্বন ডেটিং ব্যবহার করে গবেষকরা নির্ধারণ করেছেন, একটি নমুনা ২ হাজার ৬০০ থেকে ২০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ আগের। যদিও সমাধিগুলো প্রায় এক হাজার বছর আগে পর্যন্ত পুনর্ব্যবহার করা হতো বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার গবেষকরা গত বছর জুড়ে এ নিয়ে বিস্তর অনুসন্ধান চালিয়েছেন। এর মধ্যে ছিল হেলিকপ্টার দিয়ে আকাশ থেকে পরিচালিত জরিপ, স্থল জরিপ এবং খনন। এছাড়া স্যাটেলাইট চিত্রও পরীক্ষা হয়েছে।
গত ডিসেম্বরে হোলোসিন জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর-পশ্চিম আরবের আল-উলা এবং খায়বার কাউন্টি দুটিতে বিশাল দূরত্ব পর্যন্ত বিস্তৃত এ মহাসড়ক। এটি মূলত ‘অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পথ’, অর্থাৎ শবযাত্রার জন্য ব্যবহৃত হতো বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গবেষক ম্যাথিউ ডাল্টন মার্কিন সম্প্রচার মাধ্যম সিএনএনকে বলেন, ‘এই অঞ্চলে বসবাসকারী লোকেরা হাজার হাজার বছর ধরে এই সড়ক সম্পর্কে জানে। কিন্তু আমি মনে করি, আমরা স্যাটেলাইট ইমেজ পাওয়ার আগে পর্যন্ত জানা যায়নি এই প্রত্নস্থানটি কতটা ব্যাপক।’
ডাল্টন বলেন, শেষকৃত্যের পথগুলো, যা তিনি হেলিকপ্টার থেকে দেখেছিলেন, শত শত, হয়তো হাজার হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। বর্তমানেও প্রধান সড়কে ভ্রমণকারীরা প্রায়শই একই রুট অনুসরণ করে।
ডাল্টন আরও বলেন, ‘প্রধান রাস্তাগুলোও একই রুট অনুসরণ করে কারণ দুটি স্থানের মধ্যে এটিই সংক্ষিপ্ততম পথ। কিছু ক্ষেত্রে সমাধিগুলো এতো ঘন ঘন স্থাপিত যে আপনি সড়ক ব্যবহারে বাধ্য হবেন।’
গবেষক মেলিসা কেনেডি সিএনএনকে বলেন, ‘সমাধিগুলো ৪ হাজার ৫০০ বছর পুরোনো। এগুলো এখনও যে তাদের আসল উচ্চতায় দাঁড়িয়ে আছে, সেটি সত্যিই অবাক করার মতো। আমি মনে করি, এটিই বিশেষ করে সৌদি আরবকে বাকি অঞ্চল থেকে আলাদা করে। এগুলো যেভাবে সংরক্ষিত হয়েছে সেটি অবিশ্বাস্য!’
কেনেডির বিশ্বাস, এককভাবে বা ছোট ছোট গ্রুপকে এখানে সমাহিত করা হতো। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পথ বরাবর প্রায় ১৮ হাজার সমাধি চিহ্নিত করেছেন তাঁরা। এর মধ্যে নমুনা হিসেবে খননের জন্য ৮০টিকে বেছে নেওয়া হয়েছে।
গবেষকরা মনে করছেন, সমাধিগুলোর অনেক আগে থেকেই রাস্তাটি ছিল। তবে তাঁরা এখনও নিশ্চিত নন, কেন সমাধিগুলো সড়ক বরাবর তৈরি করা হয়েছিল। যদিও পরবর্তীতে গ্রিস এবং রোমে জমির মালিকানার সঙ্গে সম্পর্কিত একই ধরনের প্রথার দিকে ইঙ্গিত করেছেন কেনেডি।
কেনেডি বলেন, ‘সম্ভবত মালিকানা বোঝানোর একটি উপায় হিসেবে সমাধিগুলো নির্মিত হয়েছে। কারণ আপনি আপনার প্রিয়জনকে আপনার চলাচলের রাস্তার পাশেই সমাধিস্থ করবেন, যাতে প্রায়শই তাঁদের কবর অতিক্রম করেন এবং তাঁদের কথা আপনার স্মরণ হয়।’
প্রত্নতাত্ত্বিক দলটির জন্য পরবর্তী পদক্ষেপ হবে আরও রেডিওকার্বন ডেটিং করা এবং ডেটা বিশ্লেষণ করা। ডাল্টন বলছেন, সড়কগুলো ইয়েমেন পর্যন্ত প্রসারিত হতে পারে। কারণ ইয়েমেন এবং উত্তর সিরিয়ায় একই ধরনের সমাধি দেখতে পাওয়া যায়।
কেনেডি বলছেন, তৃতীয় সহস্রাব্দ একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়কাল। কারণ এই সময়টাতেই মিশরের পিরামিড নির্মিত হয়। এখানে অনেকগুলো ভিন্ন সংস্কৃতির যোগাযোগ ঘটেছে। ফলে এই সময়কালে সৌদি আরবে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার নিদর্শনটি নতুন গবেষণার পথে খুলে দিতে পারে।
বিজ্ঞান সম্পর্কিত আরও পড়ুন:
নতুন এক বৈপ্লবিক তত্ত্বের মাধ্যমে মহাবিশ্বের উৎপত্তি নিয়ে প্রচলিত ‘বিগ ব্যাং’ ধারণাকে চ্যালেঞ্জ জানালেন আন্তর্জাতিক পদার্থবিদদের এক দল। তাদের দাবি, আমাদের মহাবিশ্বের উৎপত্তি বিগ ব্যাং থেকে নয়, বরং ব্ল্যাকহোল কবা কৃষ্ণগহবর থেকেই সৃষ্টি হয়েছে
১২ আগস্ট ২০২৫নিয়মিত আকাশপথে ভ্রমণ করা যাত্রীদের জন্য টার্বুলেন্স বা ঝাঁকুনি কোনো নতুন অভিজ্ঞতা নয়। শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে চলমান বাণিজ্যিক বিমান চলাচলের ইতিহাসে এই টার্বুলেন্স মোকাবিলায় ব্যাপক উন্নতি হয়েছে।
১১ আগস্ট ২০২৫বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও চিকিৎসাক্ষেত্রে অগ্রণী কিছু ভবিষ্যৎদ্রষ্টা মনে করছেন, মানুষ এখন আর আগের মতো কেবল শতবর্ষ আয়ুর স্বপ্ন দেখছে না। বরং এমন এক সময় আসছে, যখন আমরা স্বাভাবিক আয়ুর চেয়ে ১০ গুণ বেশি সময়, অর্থাৎ হাজার বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারি।
১০ আগস্ট ২০২৫আমাদের সূর্যের চেয়ে ৩৬০০ গুণ বেশি ভরের বিশালাকৃতির ব্ল্যাকহোল খুঁজে পেলেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। এটি এখন পর্যন্ত খুঁজে পাওয়া সবচেয়ে বড় ব্ল্যাকহোলগুলোর একটি এবং সম্ভবত সর্ববৃহৎ। ব্ল্যাকহোলটি অবস্থান করছে ‘কসমিক হর্সশু’ নামের একটি গ্যালাক্সির কেন্দ্রে, যা পৃথিবী থেকে প্রায় ৫০০ কোটি আলোকবর্ষ দূরে।
১০ আগস্ট ২০২৫