Ajker Patrika

রাজধানীতে ‘বাধাহীন’ বিএনপি, ঢাকায় প্রবেশের মুখে বাধার অভিযোগ

শাহরিয়ার হাসান, ঢাকা
আপডেট : ১২ জুলাই ২০২৩, ১৬: ২৯
রাজধানীতে ‘বাধাহীন’ বিএনপি, ঢাকায় প্রবেশের মুখে বাধার অভিযোগ

ঢাকার আশপাশের জেলাগুলো থেকে ঢাকায় প্রবেশের মুখে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। নয়াপল্টনে সমাবেশের উদ্দেশে আসা নেতা-কর্মীদের বাস থেকে নামিয়ে হেনস্তার অভিযোগ পাওয়া গেছে। কোথাও কোথাও চেকপোস্ট বসিয়ে মোবাইল ফোন চেক করে আটক করা হচ্ছে। জব্দ করে রাখা হচ্ছে সমাবেশের উদ্দেশে আসা বাস। জেলা পুলিশের বিরুদ্ধে সমাবেশে আসা নেতা-কর্মীদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেলেও রাজধানীর চিত্র ভিন্ন। ঢাকা মেট্রোপলিটনের পুলিশ (ডিএমপি) সদস্যদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক তল্লাশি বা অহেতুক জেরার অভিযোগ করেননি বিএনপির কোনো নেতা-কর্মী। একরকম বাধাহীনভাবেই তাঁরা সমাবেশে যোগদান করতে পারছেন। 

সমাবেশে দায়িত্বে থাকা ঢাকা মহানগর পুলিশের পদস্থ এক কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ডিএমপিতে ও জেলা পুলিশে তাহলে ভিন্ন ভিন্ন বার্তা গেছে। সমাবেশ শান্তিপূর্ণ ও ভালো নিরাপত্তা দিতে ডিএমপির পুলিশ সদস্যদের কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঢাকার বাইরে থেকে আসা কোনো নেতা-কর্মীকে অপ্রয়োজনীয় হয়রানি করতেও নিষেধ করা হয়েছে।’ 

ব্যক্তিগত গাড়িও তল্লাশি করছে পুলিশ। ছবি: আজকের পত্রিকাপুলিশের একটি সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, গতকাল মঙ্গলবার বেলা ২টায় ঢাকা মহানগর পুলিশের সদর দপ্তরে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও ইউনিটপ্রধানদের নিয়ে বৈঠক করেছেন পুলিশ কমিশনার। বিএনপির সমাবেশে তাঁদের অবস্থা নিয়ে সে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। পরে সন্ধ্যা ৬টায় নিজ নিজ ইউনিট নিয়ে বসেছিলেন ইউনিটপ্রধানেরা। সেখানে বলা হয়েছে, বিএনপির আজকের এ সমাবেশে নিরপেক্ষ থেকে পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে। 

সূত্রটি বলছে, সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিনিধিদল ঢাকায় অবস্থান করছে। এমন কিছু করা যাবে না, যার ফলে পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সেই বার্তা নিয়ে দিনভর দায়িত্ব পালনে মাঠে নেমেছে পুলিশ। 

কিন্তু উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে শহরের প্রবেশমুখগুলোতে। সমাবেশকে কেন্দ্র করে কয়েকটি সড়কে চেকপোস্ট বসিয়ে গণপরিবহন, যাত্রী ও সন্দেহভাজন পথচারীদের তল্লাশি করতে দেখা গেছে। অনেকেরই আবার মোবাইল ফোনও চেক করা হচ্ছে। 

হেঁটে গন্তব্যের উদ্দেশে সাধারণ মানুষ। ছবি: আজকের পত্রিকাআমিনবাজার বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন এলাকায় সাভার মডেল থানা ও আমিনবাজার পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা বাসের যাত্রী, সন্দেহভাজন পথচারীদের তল্লাশি করেছেন। 

বাধা দেওয়া কথা শোনা গেছে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ ও পদ্মা সেতু এলাকাতেও। সেখানে পুলিশের কড়া চেকপোস্টে আটকে দেওয়া হয়েছে সমাবেশের উদ্দেশে আসা নেতা-কর্মীদের। 

পল্টনে বিপুলসংখ্যক পুলিশ অবস্থান নিলেও কোনো প্রকারের বাধে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়নি। ছবি: আজকের পত্রিকানাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যাত্রী বলেন, বিএনপির সমাবেশে যাচ্ছি কি না, মোবাইল ফোনে কী কী আছে, কোন জেলার নেতা-কর্মী ইত্যাদি প্রশ্ন করা হচ্ছে। 

জানতে চাইলে সাভার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা বলেন, সমাবেশকে ঘিরে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যেন না ঘটে সে জন্য তল্লাশি করা হচ্ছে। তবে এভাবে জেরার করার বিষয়ে তিনি কথা বলেননি। 

নয়াপল্টনে জড়ো হয়েছেন বিএনপির নেতা-কর্মী। ছবি: আজকের পত্রিকা এদিকে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল অভিযোগ করে বলেছেন, সমাবেশে যোগ দেওয়ার পথে ফরিদপুর জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হাসান কায়েসসহ জেলা ছাত্রদলের ১৩ জন নেতাকে আটক করা হয়েছে। তাঁদের আটক করে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ। অন্যদিকে মাদারীপুর থেকে ঢাকার সমাবেশে আসার পথে দুটি বাসসহ নেতা-কর্মীদের পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানায় নেওয়া হয়েছে। 

মানুষের ‘ভোটাধিকার’ আদায়ের লক্ষ্যে আজ বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে সরকার পতনের এক দফার চূড়ান্ত আন্দোলনের ঘোষণা দিতে যাচ্ছে বিএনপি। রাজধানীর ১২টি জায়গা থেকে যুগপৎভাবে একই ঘোষণা দেবে গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, এলডিপি, গণ অধিকার পরিষদ, গণফোরাম, এবি পার্টিসহ ৩৭টি রাজনৈতিক দল ও জোট। অপর দিকে সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে শান্তি সমাবেশ করছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত