Ajker Patrika

মিরপুরে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর আ. লীগের হামলার অভিযোগ, আহত অনেকে

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
মিরপুরে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ওপর আ. লীগের হামলার অভিযোগ, আহত অনেকে

জ্বালানি, নিত্যপণ্যের দাম ও গণপরিবহনের ভাড়া বৃদ্ধি এবং পুলিশের গুলিতে নুরে আলম, আব্দুর রহিম ও শাওনের মৃত্যুর প্রতিবাদে বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে যাওয়ার সময় দলটির নেতা-কর্মীদের ওপর আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা হামলা করেছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুরে এ হামলায় দলের শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছে বলে দাবি করেছে বিএনপি। 

বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান জানিয়েছেন, বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, মিরপুর ৬ নম্বর সেকশন বাজারের পাশের মুকুল ফৌজ মাঠে বৃহস্পতিবার বিএনপি প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে। এতে যোগ দিতে দলটির নেতা-কর্মীরা যাওয়ার পথে তাদের ওপর আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা হামলা চালায়। আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা তাদের লাঠিপেটা করেছেন এবং ধাওয়া দিয়েছেন। একই সঙ্গে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস এবং গুলি চালিয়েছে। এতে দলটির প্রায় শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। 

সারা দেশের পর ঢাকার ১৬টি স্থানে সমাবেশ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার মিরপুরে সমাবেশ শুরু আগেই দুপুর থেকে থেমে থেমে বিভিন্ন এলাকায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপি কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এর আগে উত্তরার কামারপাড়া সমাবেশেও ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা হামলা চালিয়েছিল বলে দলটির পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুপুর ২টার দিকে লাঠিসোঁটা হাতে নিয়ে কয়েক শ অজ্ঞাত সন্ত্রাসী সমাবেশস্থলে হামলা চালায়। ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে তারা মঞ্চ, পার্কিং করা মোটরসাইকেল ও আশপাশের দোকান ভাঙচুর করে। তবে এ বিষয়ে পুলিশ বা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। 

বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন বলেন, ‘পূর্বঘোষণা অনুযায়ী আজ বৃহস্পতিবার এই সমাবেশ হওয়ার কথা। সে অনুযায়ী বিপুলসংখ্যক নেতা-কর্মীসহ সমাবেশস্থলে যাওয়ার সময় আগে থেকে অবস্থান নেওয়া আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অস্ত্রসহ হামলা চালায়। 

ঘটনা সম্পর্কে আমান উল্লাহ আমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আজ দুপুর ১টায় সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। ঠিক ২টায় আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা অতর্কিতে লাঠিসোঁটা, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা করে। এই হামলায় এখন পর্যন্ত শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হয়েছে। যখন বিএনপি নেতা-কর্মীরা প্রতিরোধ করেছে, তখন পুলিশ আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সঙ্গে নিয়ে টিয়ারগ্যাস, গুলি চালিয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করব। এটা আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। আওয়ামী লীগ সভা করতে পারলে বিএনপি কেন পারবে না? সমাবেশস্থল থেকে আমাদের মাইক, ট্রাক নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এভাবে যদি হামলা হয়, তাহলে এই সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন কীভাবে সম্ভব?’ 

দলটির ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্যসচিব আমিনুল হক বলেন, ‘বেলা ১টার দিকে মঞ্চ বানানোসহ সার্বিক প্রস্তুতি চলছিল। এরই মধ্যে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগ অস্ত্রসহ নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। যখন এই হামলা হয় তখন পুলিশ নীরব ছিল। একটু পর সমাবেশস্থল থেকে তাঁরা চলে যান। পরে পুলিশও নেতা-কর্মীদের ওপর টিয়ারশেল, গুলি ও লাঠি চার্জ শুরু করে।’ 

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি দুটি দলের পক্ষ থেকেই পল্লবীর ১২ নম্বর ‘ডি’ ব্লক ঈদগাহ মাঠে জনসভা করার জন্য আবেদন করা হয়েছিল। একই স্থানে ও একই সময়ে বৃহস্পতিবার সভাটির অনুমতি চেয়ে দুপক্ষই মিরপুরের উপপুলিশ কমিশনারের (ডিসি) কাছে চিঠি দেন। তবে আওয়ামী লীগকে ওই মাঠে সমাবেশের অনুমতি দিয়ে বিএনপিকে ৬ নম্বরের মুকুল ফৌজ মাঠে জনসভার অনুমতি দেয় ডিএমপি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত