আন্দোলন-আন্দোলন খেলা বন্ধ করে নির্বাচনে আসুন: ১৪ দলের সমাবেশে হানিফ

দেশের বিচার বিভাগকে বিতর্কিত ও অপদস্থ করতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলা করেছে বিএনপি। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির সঙ্গে কোনো আপস বা সংলাপ হবে না। বিদেশিরা বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচন নয়, অসাংবিধানিক সরকার নিয়ে আসতে চায়। আজ সোমবার এক বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেছেন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের নেতারা।

বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ১৪ দলের এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়। বিএনপি-জামায়াত কর্তৃক ‘পুলিশ হত্যা, রাজারবাগ পুলিশ লাইনস হাসপাতালে অগ্নিসংযোগ, প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার’ প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সমাবেশে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেন, বিএনপি সন্ত্রাস-নৈরাজ্য করেছে ২০১৩-১৪ সালে, এবার আবার শুরু করেছে। ইসরায়েল যেমন গাজার ওপর হামলা করছে বিএনপি তাই শুরু করেছে। বিচার বিভাগকে অপদস্থ করার জন্য প্রধান বিচারপতির বাড়িতে হামলা করা হয়েছে। দেশকে অকার্যকর করতে, পাকিস্তান বানাতে যারা সংবিধানের ওপর আঘাত করছে, আর ছাড় নয়।

সংবিধান অনুযায়ী আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে বলে উল্লেখ করে আমু বলেন, আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য করলে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে। দেশের জনগণের জানমাল রক্ষায় নেতা–কর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে। অবরোধে আর যাতে কোনো নৈরাজ্য করতে না পারে, তাদের প্রতিহত করতে রাস্তায় থাকতে হবে নেতা–কর্মীদের। এখন থেকে শুরু করে নির্বাচন পর্যন্ত মাঠে থাকবে ১৪ দল।

ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, বিএনপি আবারও লেজ গুটিয়ে পালাবে। বিদেশিদের লক্ষ্য সুষ্ঠু নির্বাচন নয়। পৃথিবী জুড়ে আমেরিকা তাণ্ডব চালাচ্ছে। বিএনপি–জামায়াতকে দিয়ে বাংলাদেশে তাণ্ডব চালাতে চায় আমেরিকা।

জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, বিএনপির নব্য উপদেষ্টা পিটার হাস পুলিশ হত্যার পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। রাষ্ট্রদূত থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন পিটার হাস। শিষ্টাচার বহির্ভূত কর্মকাণ্ড, দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপের জন্য পিটার হাসকে প্রত্যাহার করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, আবার বাসে আগুন দিলে, নৈরাজ্য করলে বাংলাদেশ থেকে বিএনপিকে বিতাড়িত করা হবে।

সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া বলেন, এবার তত্ত্বাবধায়ক সরকার আসলে ৫ বছর থাকবে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, বিএনপি এত দিন বিদেশি প্রভুর ওপর ভর করে তাদের সাহসে আন্দোলন করেছে। তারা জনগণকে বিশ্বাস করে না। এবার জনগণ বিএনপির আন্দোলন আন্দোলন খেলা শেষ করে দিয়েছে।

তিনি বলেন, ‘বিএনপির ভরসা বিদেশি প্রভু। তাদের ওপর ভর করে করা আপনাদের আন্দোলন শেষ হয়ে গেছে। আহ্বান জানাব, এখনো সময় আছে আন্দোলন-আন্দোলন খেলা বন্ধ করে নির্বাচনে আসুন। আপনাদের আন্দোলনের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক নেই। আমরা আগেও বলেছি যে আন্দোলনে মানুষের সম্পর্ক নেই, সেই আন্দোলন সফল হতে পারে না। আজ তা প্রমাণ হয়েছে।’

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টি-জেপির মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী প্রমুখ।