মতামত

আমার এক বন্ধু বহু বছর আগে দেশাত্মবোধক গানের মধ্যে একটা বড় ধরনের ত্রুটি আবিষ্কার করেছিলেন। ত্রুটিটি কমবেশি সব কবি-গীতিকারই করেছেন। দেশাত্মবোধক গানের মধ্যে প্রকৃতির যে বর্ণনা থাকে সেইভাবে মানুষের কথা থাকে না। যে সংগীতে আবার মানুষের কথা থাকে, তাকে গণসংগীত আখ্যা দেওয়া হয়।

কয়েক দিন আগে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এক গবেষণা প্রতিবেদনে জানিয়েছে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ক্ষমতাচ্যুত সরকারের আমলে সড়ক ও সেতু খাতে ৫১ হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। জাতির জন্য দুর্ভাগ্যের বিষয় এই যে স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত কেউই দেশ ও জাতির স্বার্থের দিকটি মাথায় রেখে এক টাকার কাজকে ন

বাংলা ভাষায় অতিপরিচিত একটি শব্দ হলো ময়নাতদন্ত। বিশেষ করে চিকিৎসা-আইন-আদালতের পরিভাষায় কমবেশি আমরা সবাই শব্দটির প্রয়োগ দেখতে পাই। আমরা ময়নাতদন্তের ইংরেজি পোস্টমর্টেম শব্দটির সঙ্গেও পরিচিত।

শুধু যেন রাজনৈতিক পটপরিবর্তন না, রাজনীতিটাই পরিবর্তিত রূপে জেল্লা দেখাচ্ছে। আমরা এমন একটি অন্তর্বর্তী সরকার পেয়েছি, যেখানে উপদেষ্টাদের অধিকাংশ সরাসরি আগে রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন না বরং রাজনীতির অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। সেই তাঁদের কাছেই দেশের মানুষের যত আশা, যত দাবি।

ডিসেম্বর বাঙালির বিজয়ের মাস। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণ বাঙালির ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয় ঘোষণা করে। এই দিনটি শুধু বাংলাদেশের ভৌগোলিক স্বাধীনতার নয়, একটি জাতির আত্মমর্যাদা, সম্মান ও অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতীক।

পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) সমর্থকদের ‘ডু অর ডাই’ (করব অথবা মরব) শীর্ষক বিক্ষোভ সমাবেশের আগের কথা। গত ২২ নভেম্বর একটি বিরল ভিডিও বার্তা দিলেন পিটিআই-প্রধান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবি।

অন্ধ অনুসরণে ব্যস্ত ভেতো বাঙালির বুঝতে বুঝতে আজও বড্ড সময় লেগে যায়। মজ্জাগত এই স্বভাব যে আমাদের ভীষণ প্রবল, ‘তোরা পথের ধারে ব্যথা নিয়ে করিস ঘাঁটাঘাঁটি— কেবল করিস ঘাঁটাঘাঁটি।।’

ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর বালু লুটের হাতবদল হয়েছে মাত্র। আগে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ জেলার প্রভাবশালী নেতারা ড্রেজার মেশিন দিয়ে নদী থেকে বালু তুলতেন। এখন তাঁদের আত্মগোপনের সুযোগে বিএনপির স্থানীয় একটি অংশের প্রভাবশালী নেতাদের বিরুদ্ধে একইভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে আজকের পত্রিকায়

রাষ্ট্র সংস্কারের কথা প্রথম জোরেশোরে উঠেছিল ওয়ান-ইলেভেনে। তবে অনেক কসরত করেও তখনকার সরকার কোনো অর্থবহ সংস্কার করতে পারেনি। একটি মোটামুটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিয়েই তাদের বিদায় নিতে হয় প্রায় দুই বছর পর। অতঃপর যারা ক্ষমতায় আসে, তারা টানা সাড়ে ১৫ বছর দেশ চালিয়ে গত আগস্টে বিদায় নিয়েছে নজিরবিহীন গণ-অভ্যুত

আমরা যাঁরা লেখাপড়া জানা মানুষ, তাঁরা ‘মধ্যবিত্ত’ কথাটি প্রায়ই ব্যবহার করে থাকি। এমনিতে বিত্তের দিক থেকে যাঁরা মাঝে থাকেন, তাঁরাই মধ্যবিত্ত। যদিও মধ্যবিত্তের সংজ্ঞা নির্ধারণ করা কঠিন। সাধারণভাবে দৈনিক আয়সীমার ভিত্তিতে বিশ্বের জনগোষ্ঠীকে পাঁচটি শ্রেণিতে ভাগ করার রীতি আছে। পিউ রিসার্চ সেন্টার মধ্যবিত্ত

প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের পাঠ্যবইয়ে বড় পরিবর্তন আনা হচ্ছে। শনিবার আজকের পত্রিকায় এই শিরোনামে একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে—পাঠ্যবইয়ে বড় পরিবর্তন, বাদ পড়ছে ‘অতিরঞ্জন’। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নতুন শিক্ষাক্রম বাতিল করেছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার।

যাঁরা একটু পুরোনো আমলের মানুষ, তাঁদের মনে এখনো আমেরিকা-রাশিয়া নিয়ে অনেক আগ্রহ। পৃথিবী বদলে গেছে। এই রাশিয়া যে বিগত সোভিয়েত ইউনিয়নের আদর্শিক উত্তরসূরি নয়, সে কথাও সবাই জানে। তার পরও সত্তর ও আশির দশকের ঠান্ডা লড়াইকালের রাশিয়া-আমেরিকাকেই এখনো মনের মধ্যে স্থান দিয়ে রাখা হয়েছে।

ভেবেছিলাম, সমাজ বিনির্মাণে রাজনীতি নিয়ে লিখব। পরে আমার মনে হলো বিনির্মাণ কেন? নির্মাণের আগে যে ‘বি’ উপসর্গটি যুক্ত, তা ইতিবাচক অর্থে ব্যবহার করা হয়। যে দেশের রাজনীতিতে ইতিবাচকতা বলে আসলে কিছুই আর নেই, সেই সমাজে ‘সমাজ বিনির্মাণে রাজনীতি’ শিরোনাম কি যুক্তিযুক্ত?

প্রবীণ জীবনে স্ত্রীর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেবাযত্ন, ওষুধপত্র, খাবারদাবার ইত্যাদি বিষয়ে স্ত্রীর নজরদারি থাকে। আমাদের সমাজব্যবস্থায় দাম্পত্যজীবনে স্বামীকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার রেওয়াজ চালু রয়েছে। কার্যত সংসারে স্ত্রীর অভিভাবক স্বামী।

প্রতিদিনের সংবাদপত্রে অসংখ্য খারাপ খবর পাঠ করে পাঠক যখন ক্লান্ত, ত্যক্তবিরক্ত, ঠিক তখন ২৯ নভেম্বর আজকের পত্রিকায় ‘এবার সবচেয়ে চিকন ধান উদ্ভাবন নূরের’ শিরোনামে প্রকাশিত খবরটি পড়ে পাঠক খুশি হবেন, আনন্দিত হবেন।

সার্বিকভাবে আমরা রাষ্ট্র-সমাজ গঠনের কোনো কাজই আজ পর্যন্ত শুরু করিনি। একাত্তর সালে আমরা কেবল একটা ভূখণ্ড পেয়েছি। সেই ভূখণ্ড নিয়ে আমরা শুধু রাজনীতিটাই করেছি ৫৩ বছর ধরে। এই নিয়ে কম বা বেশি সব দলই রাজনীতি করেছে। এ কারণে সমাজের মধ্যে নানা মতের দ্বন্দ্ব আজ চরম সাংঘর্ষিক বিভাজনে রূপ নিয়েছে।

আহা কী আনন্দের দিনগুলোই না ছিল। হেমন্ত এলেই বাড়ি বাড়ি নবান্নের ধুম পড়ে যেত। নতুন ধানের নতুন চাল, চালের গুঁড়ির শিন্নি আর পিঠা—সারা পাড়া যেন মেতে উঠত উৎসবে! সে আনন্দ উৎসবের কেন্দ্রবিন্দু ছিল নতুন ধান। মাঠে মাঠে কত রকমের ধান যে ফলত! একেকজন কৃষক একেক রকমের ধান চাষ করতেন একেক কাজের জন্য। বাড়িতে বড় কুটুম