সম্পাদকীয়
পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় গত বৃহস্পতিবার শেষ রাতে হাজী মুসা ম্যানশনের নিচতলায় রাসায়নিকের গুদামে আগুন লেগে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত ব্যক্তিদের একজন ওই ভবনেরই নিরাপত্তাকর্মী রাসেল। আগুন লাগার পর রাসেল ছয়তলা ভবনের বিভিন্ন তলায় গিয়ে কলিংবেল টিপে আর ডাকাডাকি করে সবাইকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন রাসেল। কিন্তু নিজে আর বাঁচতে পারেননি। তিন ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর চারজনের মৃতদেহ উদ্ধার করে, যাঁদের মধ্যে নিরাপত্তাকর্মী রাসেলও ছিলেন। অন্য তিনজন হলেন আরেক নিরাপত্তাকর্মী শহীদুল ইসলাম, রাসেলের ভাগ্নে অলিউল্লা এবং ইডেন কলেজের ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার। নিজের জীবন রক্ষার জন্য পালিয়ে না গিয়ে রাসেল যে দায়িত্ববোধের পরিচয় দিয়েছেন, সে জন্য তাঁকে অভিবাদন।
হাজী মুসা ম্যানশনের নিচের দুটি তলায় ছিল রাসায়নিকের গুদাম। উপরের ফ্লোরগুলোতে ভাড়াটিয়ারা থাকতেন। সাহ্রির আগে যখন নিচতলায় আগুন লাগে, তখন অনেকেই ছিলেন ঘুমে। নিরাপত্তাকর্মী রাসেল সবাইকে ডেকে তোলেন এবং আগুন লাগার ঘটনা জানান। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। ভবনের ছাদে ও বিভিন্ন ফ্ল্যাটে আটকে পড়া বাসিন্দাদের জানালা ও বারান্দার গ্রিল কেটে বের করে আনা হয়।
কয়েক বছর ধরে ওই ভবনে বাস করেও অনেক ভাড়াটিয়া জানতেন না যে, নিচতলায় রাসায়নিকের গুদাম আছে। রাসায়নিকের গুদামের উপরে বসবাস যে নিরাপদ নয়, যেকোনো সময় যে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, সেটা ভবনমালিকের না জানার কথা নয়। তারপরও কেন মানুষকে এই মৃত্যুকূপে বসবাস করতে দিয়েছেন—এর জবাব একটাই—ভাড়ার টাকার লোভ। একজনের লোভ যে কতজনের জীবন সংহারের কারণ হতে পারে তা মুসা ম্যানশনের অগ্নিকা-ে আবার প্রমাণ হলো।
আবাসিক এলাকায় রাসায়নিক পদার্থের ব্যবসা বা গুদাম না রাখার কথা আগে বহুবার বলা হয়েছে। কারণ, পুরান ঢাকায় এ রকম আগুন লাগার ঘটনা এবারই প্রথম ঘটেনি। এর আগে যখনই এভাবে আগুন লেগেছে, মানুষের জীবন ও সহায়-সম্পদের ক্ষতি হয়েছে; তখন এ নিয়ে দিনকয়েক শোরগোল হয়, নানা পরামর্শ নানাজনের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়। তারপর আবার সবকিছু আগের নিয়মে চলতে থাকে।
পুরান ঢাকায় ঘনবসতি ও সঙ্কীর্ণ রাস্তাঘাটের জন্য মানুষের বসবাস এমনিতেই ঝুঁকিপূর্ণ। এই ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয় নানা দাহ্য পদার্থের ব্যবসা। দাহ্য পদার্থের মজুদ, আনা-নেওয়ার জন্য যে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন, অগ্নিনির্বাপণের যথাযথ ব্যবস্থা রাখা দরকার—তার কোনোটাই না করায় দুর্ঘটনা একটি নিয়মিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষের জীবন নিয়ে এমন উদাসীনতা পৃথিবীর আর কোনো দেশে আছে বলে মনে হয় না।
মুসা ম্যানশনের রাসায়নিক গুদাম সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। আমরা মনে করি, এটুকুই যথেষ্ট নয়। রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যবসা এবং গুদাম নিরাপদ স্থানে সরিয়ে না নিলে এবং কোন কোন এলাকায় চোরাগুপ্তা অবস্থায় এ রকম গুদাম আরও আছে, তা খুঁজে বের না করলে আসলে আরও দুর্ঘটনাকেই স্বাগত জানাতে অপেক্ষা করতে হবে।
প্রশাসনকে যেমন সক্রিয়তা দেখাতে হবে, তেমনি নাগরিক সমাজকেও সচেতন হতে হবে। আপনি কোথায় বসবাস করেন, সেটা আপনার এবং আপনার পরিবারের জন্য কতটুকু নিরাপদ, সেটা দেখার প্রাথমিক দায়িত্ব আপনার। নীরবতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে আমাদের দুঃখ-দুর্দশা-কষ্ট কোনোটাই আপনি-আপনি কমবে না।
পুরান ঢাকার আরমানিটোলায় গত বৃহস্পতিবার শেষ রাতে হাজী মুসা ম্যানশনের নিচতলায় রাসায়নিকের গুদামে আগুন লেগে চারজনের মৃত্যু হয়েছে। মৃত ব্যক্তিদের একজন ওই ভবনেরই নিরাপত্তাকর্মী রাসেল। আগুন লাগার পর রাসেল ছয়তলা ভবনের বিভিন্ন তলায় গিয়ে কলিংবেল টিপে আর ডাকাডাকি করে সবাইকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন রাসেল। কিন্তু নিজে আর বাঁচতে পারেননি। তিন ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর চারজনের মৃতদেহ উদ্ধার করে, যাঁদের মধ্যে নিরাপত্তাকর্মী রাসেলও ছিলেন। অন্য তিনজন হলেন আরেক নিরাপত্তাকর্মী শহীদুল ইসলাম, রাসেলের ভাগ্নে অলিউল্লা এবং ইডেন কলেজের ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার। নিজের জীবন রক্ষার জন্য পালিয়ে না গিয়ে রাসেল যে দায়িত্ববোধের পরিচয় দিয়েছেন, সে জন্য তাঁকে অভিবাদন।
হাজী মুসা ম্যানশনের নিচের দুটি তলায় ছিল রাসায়নিকের গুদাম। উপরের ফ্লোরগুলোতে ভাড়াটিয়ারা থাকতেন। সাহ্রির আগে যখন নিচতলায় আগুন লাগে, তখন অনেকেই ছিলেন ঘুমে। নিরাপত্তাকর্মী রাসেল সবাইকে ডেকে তোলেন এবং আগুন লাগার ঘটনা জানান। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। ভবনের ছাদে ও বিভিন্ন ফ্ল্যাটে আটকে পড়া বাসিন্দাদের জানালা ও বারান্দার গ্রিল কেটে বের করে আনা হয়।
কয়েক বছর ধরে ওই ভবনে বাস করেও অনেক ভাড়াটিয়া জানতেন না যে, নিচতলায় রাসায়নিকের গুদাম আছে। রাসায়নিকের গুদামের উপরে বসবাস যে নিরাপদ নয়, যেকোনো সময় যে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে, সেটা ভবনমালিকের না জানার কথা নয়। তারপরও কেন মানুষকে এই মৃত্যুকূপে বসবাস করতে দিয়েছেন—এর জবাব একটাই—ভাড়ার টাকার লোভ। একজনের লোভ যে কতজনের জীবন সংহারের কারণ হতে পারে তা মুসা ম্যানশনের অগ্নিকা-ে আবার প্রমাণ হলো।
আবাসিক এলাকায় রাসায়নিক পদার্থের ব্যবসা বা গুদাম না রাখার কথা আগে বহুবার বলা হয়েছে। কারণ, পুরান ঢাকায় এ রকম আগুন লাগার ঘটনা এবারই প্রথম ঘটেনি। এর আগে যখনই এভাবে আগুন লেগেছে, মানুষের জীবন ও সহায়-সম্পদের ক্ষতি হয়েছে; তখন এ নিয়ে দিনকয়েক শোরগোল হয়, নানা পরামর্শ নানাজনের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়। তারপর আবার সবকিছু আগের নিয়মে চলতে থাকে।
পুরান ঢাকায় ঘনবসতি ও সঙ্কীর্ণ রাস্তাঘাটের জন্য মানুষের বসবাস এমনিতেই ঝুঁকিপূর্ণ। এই ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে দেয় নানা দাহ্য পদার্থের ব্যবসা। দাহ্য পদার্থের মজুদ, আনা-নেওয়ার জন্য যে বিশেষ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন, অগ্নিনির্বাপণের যথাযথ ব্যবস্থা রাখা দরকার—তার কোনোটাই না করায় দুর্ঘটনা একটি নিয়মিত বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। মানুষের জীবন নিয়ে এমন উদাসীনতা পৃথিবীর আর কোনো দেশে আছে বলে মনে হয় না।
মুসা ম্যানশনের রাসায়নিক গুদাম সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে। আমরা মনে করি, এটুকুই যথেষ্ট নয়। রাসায়নিক দ্রব্যের ব্যবসা এবং গুদাম নিরাপদ স্থানে সরিয়ে না নিলে এবং কোন কোন এলাকায় চোরাগুপ্তা অবস্থায় এ রকম গুদাম আরও আছে, তা খুঁজে বের না করলে আসলে আরও দুর্ঘটনাকেই স্বাগত জানাতে অপেক্ষা করতে হবে।
প্রশাসনকে যেমন সক্রিয়তা দেখাতে হবে, তেমনি নাগরিক সমাজকেও সচেতন হতে হবে। আপনি কোথায় বসবাস করেন, সেটা আপনার এবং আপনার পরিবারের জন্য কতটুকু নিরাপদ, সেটা দেখার প্রাথমিক দায়িত্ব আপনার। নীরবতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে আমাদের দুঃখ-দুর্দশা-কষ্ট কোনোটাই আপনি-আপনি কমবে না।
শান্তিতে নোবেল পুরস্কার একসময় ছিল আন্তর্জাতিক নৈতিকতার শীর্ষ সম্মান—যেখানে পুরস্কার পেতেন তাঁরা, যাঁদের জীবন ও কর্ম বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় এক অনন্য দৃষ্টান্ত। আজ সেই পুরস্কার অনেকটা হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজনৈতিক সৌজন্য উপহার। যা দেওয়া হয় যখন কারও হাত মলতে হয়, অহংকারে তেল দিতে হয় বা নিজের অ্যাজেন্ডা...
১২ আগস্ট ২০২৫গত বছর জুলাই মাস থেকে আমাদের আন্দোলনকারী তরুণ ছাত্রছাত্রীদের মুখে ও কিছু কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মুখে, বেশি বেশি করে কয়েকটি বাক্য উচ্চারিত হয়ে আসছিল। বাকিগুলোর মধ্যে প্রথম যে বাক্যটি সবার কানে বেধেছে, সেটা হলো ‘বন্দোবস্ত’।
১২ আগস্ট ২০২৫প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন সম্প্রতি রংপুরে অনুষ্ঠিত এক সভায় যে কথাগুলো বলেছেন, তা দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি অকপটে স্বীকার করেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা এখন নির্বাচন কমিশনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
১২ আগস্ট ২০২৫জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকার অবসানের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর পূর্ণ হয়েছে। এ উপলক্ষে কয়েক দিন ধরে পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশনের টক শোতে চলছে এক বছরের মূল্যায়ন।
১১ আগস্ট ২০২৫