সম্পাদকীয়
এই তো অল্প কিছুদিন আগে ফেসবুকজুড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল এক আশ্চর্য বিজ্ঞপ্তি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সেই বিজ্ঞপ্তিটি লেখা হয়েছিল বাংলা ভাষায়। সেখানে ছিল ভুলের পরে ভুল বানান। ৬ লাইনের বিজ্ঞপ্তিতে ভুল ছিল ২২টি। তা নিয়েই যোগাযোগমাধ্যমে ছিল হাসাহাসি।
সবাই বাংলা ভাষা শুদ্ধভাবে লিখবেন, এত বড় আশা করা অন্যায় হবে। অনেকেই আছেন, যাঁরা একবর্ণ বাংলা লিখতে পারেন না। আমরা আসলে তাঁদের নিয়ে কথা বলছি না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যিনি এ বিজ্ঞপ্তিটি লিখেছেন, তিনি যে অক্ষরজ্ঞানহীন নন, সে কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়। এখানে চাকরি পেতে হলে নিশ্চয়ই পরীক্ষা দিয়ে নিজেকে প্রমাণ করতে হয়। এ রকম একটি বিজ্ঞপ্তি যিনি লিখলেন, তিনি আসলে চাকরির পরীক্ষায় কী প্রমাণ করেছিলেন, সেই প্রশ্নটা ওঠে। তার চেয়েও বড় কথা, বিজ্ঞপ্তিটি লাগানোর আগে তিনি কি কাউকেই দেখিয়ে নেননি? নিতে হয় না?
শুদ্ধভাবে ইংরেজি বলতে না পারলে আমরা হাসাহাসি করি। কিন্তু শুদ্ধভাবে বাংলা বলা বা লেখা হয়তোবা আমাদের মনে সে রকম রেখাপাত করে না। নিজ ভাষার প্রতি এই অবহেলা ঔপনিবেশিক আমলের দাস্য মনোভাব কি না, কে জানে।
একটি বৃহৎ বিদ্যাপীঠে বাংলা লেখার এহেন অবস্থা নিজেদের দৈন্যকেই উলঙ্গভাবে প্রকাশ করে। নিজ ভাষার প্রতি দায়িত্ব, মমত্ব, ভালোবাসা কিছুই যে হালে পানি পাচ্ছে না, অর্থাৎ ধীরে ধীরে আমরা আমাদের আত্মপরিচয় হারিয়েও দিব্যি সুখে রয়েছি, সেটাই মূর্ত হয়। রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো ভেঙে পড়তে থাকলে ধীরে ধীরে এ পতনটি টের পাওয়া যায়, তার আগে নয়।
শিক্ষা নিয়ে গর্ব করার মতো অতীত নিশ্চয়ই আমাদের আছে। কিন্তু চর্চার অভাবে তাতে জং ধরেছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় গবেষণা আর সুষ্ঠুভাবে জ্ঞানচর্চার সুযোগ কমে গেছে। বিভিন্ন প্রকল্প, ক্লাসের বাইরেই অর্থ উপার্জনের নানা পথ খুলে যাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আসল কাজটাই শিথিল হয়ে পড়ছে। আর এর ফাঁকফোকর দিয়ে ঢুকে পড়ছে এ ধরনের শিক্ষাহীন চর্চা।
যাঁরা ‘স্বশরীরে’, ‘ক্লাশে’, ‘অংশগ্রহন’ শব্দগুলো লিখতে পারেন না, তাঁরা কীভাবে চাকরি পেলেন, সেটাই তো প্রশ্ন। যাঁরা তাদের মনোনীত করেছেন, তাঁদের কি কোনো দায় নেই?
কে না জানে, মাতৃভাষার শক্তি অন্য যেকোনো ভাষার চেয়ে প্রবল। শুধু আত্মবিস্মৃত জাতি সে কথা স্বীকার করতে চায় না। তারা গ্রহণ-বর্জন বলতে বোঝে নিজেরটা বর্জন, অন্যেরটা গ্রহণ। ফলে গ্রহণে-বর্জনে সংস্কৃতি আর চাঙা হয়ে ওঠে না।
যিনি এ রকম এক অসাধারণ বাংলা লিখেছেন, তাঁকে তাঁর ভুল ধরিয়ে দেওয়া কি হয়েছে? তাঁকে কি বোঝানো হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে মাতৃভাষা নিয়ে এ রকম হেলাফেলা করতে নেই? এখানে নতুন করে ভাষা আন্দোলনের কথা আনলাম না। মাতৃভাষা কোন পর্যায়ে আছে, তা জানতে হলে টেলিভিশনে চোখ রাখুন, করপোরেট সংস্কৃতির ভেতরে ঢুকে যান, যোগ দিন ওয়াজ মাহফিলে। দেখবেন, বাংলাদেশ বাংলা ছাড়াই এগিয়ে চলেছে!
এই তো অল্প কিছুদিন আগে ফেসবুকজুড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিল এক আশ্চর্য বিজ্ঞপ্তি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সেই বিজ্ঞপ্তিটি লেখা হয়েছিল বাংলা ভাষায়। সেখানে ছিল ভুলের পরে ভুল বানান। ৬ লাইনের বিজ্ঞপ্তিতে ভুল ছিল ২২টি। তা নিয়েই যোগাযোগমাধ্যমে ছিল হাসাহাসি।
সবাই বাংলা ভাষা শুদ্ধভাবে লিখবেন, এত বড় আশা করা অন্যায় হবে। অনেকেই আছেন, যাঁরা একবর্ণ বাংলা লিখতে পারেন না। আমরা আসলে তাঁদের নিয়ে কথা বলছি না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যিনি এ বিজ্ঞপ্তিটি লিখেছেন, তিনি যে অক্ষরজ্ঞানহীন নন, সে কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়। এখানে চাকরি পেতে হলে নিশ্চয়ই পরীক্ষা দিয়ে নিজেকে প্রমাণ করতে হয়। এ রকম একটি বিজ্ঞপ্তি যিনি লিখলেন, তিনি আসলে চাকরির পরীক্ষায় কী প্রমাণ করেছিলেন, সেই প্রশ্নটা ওঠে। তার চেয়েও বড় কথা, বিজ্ঞপ্তিটি লাগানোর আগে তিনি কি কাউকেই দেখিয়ে নেননি? নিতে হয় না?
শুদ্ধভাবে ইংরেজি বলতে না পারলে আমরা হাসাহাসি করি। কিন্তু শুদ্ধভাবে বাংলা বলা বা লেখা হয়তোবা আমাদের মনে সে রকম রেখাপাত করে না। নিজ ভাষার প্রতি এই অবহেলা ঔপনিবেশিক আমলের দাস্য মনোভাব কি না, কে জানে।
একটি বৃহৎ বিদ্যাপীঠে বাংলা লেখার এহেন অবস্থা নিজেদের দৈন্যকেই উলঙ্গভাবে প্রকাশ করে। নিজ ভাষার প্রতি দায়িত্ব, মমত্ব, ভালোবাসা কিছুই যে হালে পানি পাচ্ছে না, অর্থাৎ ধীরে ধীরে আমরা আমাদের আত্মপরিচয় হারিয়েও দিব্যি সুখে রয়েছি, সেটাই মূর্ত হয়। রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো ভেঙে পড়তে থাকলে ধীরে ধীরে এ পতনটি টের পাওয়া যায়, তার আগে নয়।
শিক্ষা নিয়ে গর্ব করার মতো অতীত নিশ্চয়ই আমাদের আছে। কিন্তু চর্চার অভাবে তাতে জং ধরেছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় গবেষণা আর সুষ্ঠুভাবে জ্ঞানচর্চার সুযোগ কমে গেছে। বিভিন্ন প্রকল্প, ক্লাসের বাইরেই অর্থ উপার্জনের নানা পথ খুলে যাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আসল কাজটাই শিথিল হয়ে পড়ছে। আর এর ফাঁকফোকর দিয়ে ঢুকে পড়ছে এ ধরনের শিক্ষাহীন চর্চা।
যাঁরা ‘স্বশরীরে’, ‘ক্লাশে’, ‘অংশগ্রহন’ শব্দগুলো লিখতে পারেন না, তাঁরা কীভাবে চাকরি পেলেন, সেটাই তো প্রশ্ন। যাঁরা তাদের মনোনীত করেছেন, তাঁদের কি কোনো দায় নেই?
কে না জানে, মাতৃভাষার শক্তি অন্য যেকোনো ভাষার চেয়ে প্রবল। শুধু আত্মবিস্মৃত জাতি সে কথা স্বীকার করতে চায় না। তারা গ্রহণ-বর্জন বলতে বোঝে নিজেরটা বর্জন, অন্যেরটা গ্রহণ। ফলে গ্রহণে-বর্জনে সংস্কৃতি আর চাঙা হয়ে ওঠে না।
যিনি এ রকম এক অসাধারণ বাংলা লিখেছেন, তাঁকে তাঁর ভুল ধরিয়ে দেওয়া কি হয়েছে? তাঁকে কি বোঝানো হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে মাতৃভাষা নিয়ে এ রকম হেলাফেলা করতে নেই? এখানে নতুন করে ভাষা আন্দোলনের কথা আনলাম না। মাতৃভাষা কোন পর্যায়ে আছে, তা জানতে হলে টেলিভিশনে চোখ রাখুন, করপোরেট সংস্কৃতির ভেতরে ঢুকে যান, যোগ দিন ওয়াজ মাহফিলে। দেখবেন, বাংলাদেশ বাংলা ছাড়াই এগিয়ে চলেছে!
শান্তিতে নোবেল পুরস্কার একসময় ছিল আন্তর্জাতিক নৈতিকতার শীর্ষ সম্মান—যেখানে পুরস্কার পেতেন তাঁরা, যাঁদের জীবন ও কর্ম বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় এক অনন্য দৃষ্টান্ত। আজ সেই পুরস্কার অনেকটা হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজনৈতিক সৌজন্য উপহার। যা দেওয়া হয় যখন কারও হাত মলতে হয়, অহংকারে তেল দিতে হয় বা নিজের অ্যাজেন্ডা...
১২ আগস্ট ২০২৫গত বছর জুলাই মাস থেকে আমাদের আন্দোলনকারী তরুণ ছাত্রছাত্রীদের মুখে ও কিছু কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মুখে, বেশি বেশি করে কয়েকটি বাক্য উচ্চারিত হয়ে আসছিল। বাকিগুলোর মধ্যে প্রথম যে বাক্যটি সবার কানে বেধেছে, সেটা হলো ‘বন্দোবস্ত’।
১২ আগস্ট ২০২৫প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন সম্প্রতি রংপুরে অনুষ্ঠিত এক সভায় যে কথাগুলো বলেছেন, তা দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি অকপটে স্বীকার করেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা এখন নির্বাচন কমিশনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
১২ আগস্ট ২০২৫জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকার অবসানের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর পূর্ণ হয়েছে। এ উপলক্ষে কয়েক দিন ধরে পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশনের টক শোতে চলছে এক বছরের মূল্যায়ন।
১১ আগস্ট ২০২৫