সম্পাদকীয়
দেশে একের পর এক পিলে চমকানো হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। নৃশংসতায় একটি আরেকটিকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। শিশুসন্তানের সামনে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার বর্বরতা ভুলতে–না–ভুলতেই বাসার ভেতর গলা কেটে হত্যার পর লাশে আগুন ধরিয়ে দেওয়া, খুনের পর দেহ টুকরা টুকরা করে খণ্ডিত অংশ রাস্তায় ছড়িয়ে–ছিটিয়ে রাখার মতো নৃশংসতার খবরও শুনতে হচ্ছে।
শুধু পেশাদার অপরাধীরা এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত তা নয়; নিকটাত্মীয় থেকে শুরু করে এমন মানুষও হিংস্র হয়ে উঠছেন, খুনোখুনির মতো ভয়ানক অপরাধ সংঘটিত করছেন, যাদের দেখে আপাত নিরীহ বলেই মনে হয়।
গত দুই সপ্তাহে দেশের বিভিন্ন এলাকায় কমপক্ষে ১৪টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের ধরন ও নৃশংসতার বিবরণ মানুষকে হতবাক করেছে।
প্রশ্ন হলো, কেন এমন হচ্ছে? নানা কারণে মানুষের মধ্যে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে। ফলে ব্যক্তির বিরুদ্ধে সহিংস অপরাধও বাড়ছে। পারস্পরিক অবিশ্বাস ও সন্দেহের কারণে স্ত্রী স্বামীকে কিংবা স্বামী স্ত্রীকে হত্যা করছে। সম্পত্তির লোভে এবং প্রযুক্তির কু-প্রভাবেও নৃশংসতা বাড়ছে। সমাজবিজ্ঞানী ও অপরাধবিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সুস্থ সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক উপাদান কমে যাওয়ায় মানুষ অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে। সমাজে হিংস্রতা বাড়ছে।
বর্তমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় সামাজিক বন্ধনগুলো দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। একটা সময়ে সমাজের একজনের ভালোতে সবাই আনন্দ পেত। নেতিবাচক দিকগুলো সমাজের লোকজন ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করত। এখন সে ব্যবস্থা উঠেই গেছে বলা যায়। টিকে থাকার জন্য পারিবারিক বন্ধনগুলো ছিন্ন হয়ে গেছে। সবাই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। এসব কারণে অনেকের কাছে সামাজিক, পারিবারিক ও সম্পত্তির কারণে প্রতিশোধের স্পৃহাটা নেশা হয়ে ওঠে। প্রতিশোধ নিতে গিয়ে কেউ কেউ হিংস্র হতে দ্বিধা করে না।
জনপ্রতিনিধি আছেন বা ছিলেন, আইনপ্রণেতা ছিলেন এমন ব্যক্তিরা নিজের ব্যবসায়িক বা অন্য কোনো ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য নিজে অপরাধ করছেন অথবা চিহ্নিত অপরাধীদের ভাড়া করে নৃশংস ঘটনা ঘটাচ্ছেন। অপরাধ করে শাস্তির আওতায় না আসা, বিচারকাজের দীর্ঘসূত্রতা, রাজনৈতিক ও আর্থিক প্রভাব প্রভৃতি কারণে অপরাধের মাত্রা ক্রমাগত বেড়ে যাচ্ছে বলে মনে করার কারণ আছে।
আবার এমনও মনে করা হয়, প্রত্যাশা-প্রাপ্তিতে ব্যাঘাত ঘটলে মানুষ প্রতিশোধপ্রবণ হয়ে ওঠে—এটা স্বাভাবিক। পাওয়া না পাওয়ার দ্বন্দ্বেও মানুষ আগ্রাসী ও হিংস্র হয়ে উঠতে পারে। সুস্থ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উপাদানগুলো কমে গেলে সমাজে এমন হিংস্রতা বাড়বেই।
সমাজবিজ্ঞানীরা মনে করেন, মানুষ এখন সনাতনি বা নিজস্ব সংস্কৃতি থেকে দূরে সরে গেছে। আবার পশ্চিমা সংস্কৃতিতেও পুরোপুরি মিশতে পারেনি। খণ্ডিত সংস্কৃতির প্রভাবে মাঝামাঝি অবস্থায় থেকে চলমান সামাজিক বাস্তবতায় মানুষ তার অবৈধ সম্পর্কগুলো প্রকাশ করতে পারে না।
সেই সম্পর্কগুলো নির্বিঘ্ন করতেই খুনোখুনির মতো ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া চলমান করোনা মহামারির সময়ে মানুষের আয়ের পথ অনেকটা রুদ্ধ হয়ে গেছে। একপক্ষ সম্পদ হারানোর ভয়ে থাকলেও অন্যপক্ষ সম্পদ ধরে রাখতে আগ্রাসী হয়ে উঠছে। এসব অসহিষ্ণু মনোভাবের প্রভাব প্রকাশ পাচ্ছে নৃশংসতায়।
কেউ মনে করেন, সহিংস ও নৃশংস ঘটনার পেছনে পারিবারিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণই বড়। বড় ধরনের ক্ষোভ, নিজের চাহিদা আদায়ে বাধা দেওয়া বা টানা নির্যাতনের কারণে অতি-ক্ষোভে মানুষ সহিংস হয়ে ওঠে। এসব রোধে সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে হবে। কমিউনিটি লেভেলে সংহতি বাড়াতে হবে।
অপরাধবিজ্ঞানীরা মনে করেন, পারিবারিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিমণ্ডল বিশ্লেষণ করে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড হওয়ার আগেই প্রতিরোধের উপায় বের
করতে হবে। এ জন্য এসব বিষয়ে সবার অবস্থান থেকে নজরদারি করতে হবে। সমাজ ও রাষ্ট্রকে পরিকল্পিত পদক্ষেপ নিতে হবে।
দেশে একের পর এক পিলে চমকানো হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। নৃশংসতায় একটি আরেকটিকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে। শিশুসন্তানের সামনে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যার বর্বরতা ভুলতে–না–ভুলতেই বাসার ভেতর গলা কেটে হত্যার পর লাশে আগুন ধরিয়ে দেওয়া, খুনের পর দেহ টুকরা টুকরা করে খণ্ডিত অংশ রাস্তায় ছড়িয়ে–ছিটিয়ে রাখার মতো নৃশংসতার খবরও শুনতে হচ্ছে।
শুধু পেশাদার অপরাধীরা এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত তা নয়; নিকটাত্মীয় থেকে শুরু করে এমন মানুষও হিংস্র হয়ে উঠছেন, খুনোখুনির মতো ভয়ানক অপরাধ সংঘটিত করছেন, যাদের দেখে আপাত নিরীহ বলেই মনে হয়।
গত দুই সপ্তাহে দেশের বিভিন্ন এলাকায় কমপক্ষে ১৪টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। কয়েকটি হত্যাকাণ্ডের ধরন ও নৃশংসতার বিবরণ মানুষকে হতবাক করেছে।
প্রশ্ন হলো, কেন এমন হচ্ছে? নানা কারণে মানুষের মধ্যে অসহিষ্ণুতা বাড়ছে। ফলে ব্যক্তির বিরুদ্ধে সহিংস অপরাধও বাড়ছে। পারস্পরিক অবিশ্বাস ও সন্দেহের কারণে স্ত্রী স্বামীকে কিংবা স্বামী স্ত্রীকে হত্যা করছে। সম্পত্তির লোভে এবং প্রযুক্তির কু-প্রভাবেও নৃশংসতা বাড়ছে। সমাজবিজ্ঞানী ও অপরাধবিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সুস্থ সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক উপাদান কমে যাওয়ায় মানুষ অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে। সমাজে হিংস্রতা বাড়ছে।
বর্তমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় সামাজিক বন্ধনগুলো দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। একটা সময়ে সমাজের একজনের ভালোতে সবাই আনন্দ পেত। নেতিবাচক দিকগুলো সমাজের লোকজন ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করত। এখন সে ব্যবস্থা উঠেই গেছে বলা যায়। টিকে থাকার জন্য পারিবারিক বন্ধনগুলো ছিন্ন হয়ে গেছে। সবাই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। এসব কারণে অনেকের কাছে সামাজিক, পারিবারিক ও সম্পত্তির কারণে প্রতিশোধের স্পৃহাটা নেশা হয়ে ওঠে। প্রতিশোধ নিতে গিয়ে কেউ কেউ হিংস্র হতে দ্বিধা করে না।
জনপ্রতিনিধি আছেন বা ছিলেন, আইনপ্রণেতা ছিলেন এমন ব্যক্তিরা নিজের ব্যবসায়িক বা অন্য কোনো ব্যক্তিগত স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য নিজে অপরাধ করছেন অথবা চিহ্নিত অপরাধীদের ভাড়া করে নৃশংস ঘটনা ঘটাচ্ছেন। অপরাধ করে শাস্তির আওতায় না আসা, বিচারকাজের দীর্ঘসূত্রতা, রাজনৈতিক ও আর্থিক প্রভাব প্রভৃতি কারণে অপরাধের মাত্রা ক্রমাগত বেড়ে যাচ্ছে বলে মনে করার কারণ আছে।
আবার এমনও মনে করা হয়, প্রত্যাশা-প্রাপ্তিতে ব্যাঘাত ঘটলে মানুষ প্রতিশোধপ্রবণ হয়ে ওঠে—এটা স্বাভাবিক। পাওয়া না পাওয়ার দ্বন্দ্বেও মানুষ আগ্রাসী ও হিংস্র হয়ে উঠতে পারে। সুস্থ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উপাদানগুলো কমে গেলে সমাজে এমন হিংস্রতা বাড়বেই।
সমাজবিজ্ঞানীরা মনে করেন, মানুষ এখন সনাতনি বা নিজস্ব সংস্কৃতি থেকে দূরে সরে গেছে। আবার পশ্চিমা সংস্কৃতিতেও পুরোপুরি মিশতে পারেনি। খণ্ডিত সংস্কৃতির প্রভাবে মাঝামাঝি অবস্থায় থেকে চলমান সামাজিক বাস্তবতায় মানুষ তার অবৈধ সম্পর্কগুলো প্রকাশ করতে পারে না।
সেই সম্পর্কগুলো নির্বিঘ্ন করতেই খুনোখুনির মতো ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া চলমান করোনা মহামারির সময়ে মানুষের আয়ের পথ অনেকটা রুদ্ধ হয়ে গেছে। একপক্ষ সম্পদ হারানোর ভয়ে থাকলেও অন্যপক্ষ সম্পদ ধরে রাখতে আগ্রাসী হয়ে উঠছে। এসব অসহিষ্ণু মনোভাবের প্রভাব প্রকাশ পাচ্ছে নৃশংসতায়।
কেউ মনে করেন, সহিংস ও নৃশংস ঘটনার পেছনে পারিবারিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণই বড়। বড় ধরনের ক্ষোভ, নিজের চাহিদা আদায়ে বাধা দেওয়া বা টানা নির্যাতনের কারণে অতি-ক্ষোভে মানুষ সহিংস হয়ে ওঠে। এসব রোধে সামাজিক সচেতনতা বাড়াতে হবে। কমিউনিটি লেভেলে সংহতি বাড়াতে হবে।
অপরাধবিজ্ঞানীরা মনে করেন, পারিবারিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিমণ্ডল বিশ্লেষণ করে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড হওয়ার আগেই প্রতিরোধের উপায় বের
করতে হবে। এ জন্য এসব বিষয়ে সবার অবস্থান থেকে নজরদারি করতে হবে। সমাজ ও রাষ্ট্রকে পরিকল্পিত পদক্ষেপ নিতে হবে।
শান্তিতে নোবেল পুরস্কার একসময় ছিল আন্তর্জাতিক নৈতিকতার শীর্ষ সম্মান—যেখানে পুরস্কার পেতেন তাঁরা, যাঁদের জীবন ও কর্ম বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় এক অনন্য দৃষ্টান্ত। আজ সেই পুরস্কার অনেকটা হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজনৈতিক সৌজন্য উপহার। যা দেওয়া হয় যখন কারও হাত মলতে হয়, অহংকারে তেল দিতে হয় বা নিজের অ্যাজেন্ডা...
১২ আগস্ট ২০২৫গত বছর জুলাই মাস থেকে আমাদের আন্দোলনকারী তরুণ ছাত্রছাত্রীদের মুখে ও কিছু কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মুখে, বেশি বেশি করে কয়েকটি বাক্য উচ্চারিত হয়ে আসছিল। বাকিগুলোর মধ্যে প্রথম যে বাক্যটি সবার কানে বেধেছে, সেটা হলো ‘বন্দোবস্ত’।
১২ আগস্ট ২০২৫প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন সম্প্রতি রংপুরে অনুষ্ঠিত এক সভায় যে কথাগুলো বলেছেন, তা দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি অকপটে স্বীকার করেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা এখন নির্বাচন কমিশনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
১২ আগস্ট ২০২৫জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকার অবসানের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর পূর্ণ হয়েছে। এ উপলক্ষে কয়েক দিন ধরে পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশনের টক শোতে চলছে এক বছরের মূল্যায়ন।
১১ আগস্ট ২০২৫