সম্পাদকীয়
একটি দেশ তখনই প্রকৃত উন্নয়নের পথে এগোয়, যখন অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির সুফল সমাজের সব স্তরে সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু বাংলাদেশে যে প্রবৃদ্ধি বা অর্থনৈতিক পরিবর্তন ঘটছে, তার বাস্তব চিত্র ভিন্ন। আজকের পত্রিকায় ১৪ মার্চ প্রকাশিত খবর থেকে জানা যাচ্ছে, মাত্র তিন মাসে ব্যাংক হিসাবধারী কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৫ হাজার। তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের। এখন দেশে এক কোটি টাকার বেশি আমানত রয়েছে—এমন হিসাবের সংখ্যা সোয়া লাখ ছাড়িয়ে গেছে। অথচ এই সময়ে সাধারণ মানুষের জীবনমান কতটা উন্নত হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, আয়বৈষম্যের প্রকটতা, কর্মসংস্থানের অভাব এবং দারিদ্র্যের চক্রে আটকে থাকা মানুষের কষ্ট যেন অর্থনীতির এই তথাকথিত উন্নয়নের বিপরীত চিত্র।
বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল এক নতুন অর্থনৈতিক সাম্য ও ন্যায়বিচারের স্বপ্ন নিয়ে। সেই স্বপ্নের পটভূমিতে ছিল বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার জন্য যে লড়াই, তা কেবল রাজনৈতিক স্বাধীনতার জন্য নয়, অর্থনৈতিক মুক্তির জন্যও ছিল। অথচ আজ স্বাধীনতার পাঁচ দশক পেরিয়ে আমরা দেখি, অর্থনৈতিক বৈষম্য ক্রমেই প্রকট হচ্ছে। একদিকে সমাজের একটা ক্ষুদ্র অংশ বিপুল সম্পদের মালিক হয়ে উঠছে, অন্যদিকে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। একসময় যে দেশে মাত্র পাঁচজন কোটিপতি ছিলেন, সেই দেশে এখন কোটিপতির সংখ্যা লাখ ছাড়িয়েছে। এটাই কি উন্নয়ন?
অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অর্থ পাচারের সুযোগ কমে যাওয়ায় কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের ফলে অনেকে ব্যাংকে টাকা রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। আবার একশ্রেণির ব্যবসায়ী অতি মুনাফা করেছেন, যা তাঁদের সম্পদ বাড়িয়েছে। এর অর্থ হলো, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘদিনের যে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও অব্যবস্থাপনা ছিল, তা থেকেই এই সম্পদ বেড়েছে। অন্যদিকে, সাধারণ শ্রমজীবী ও মধ্যবিত্ত মানুষের অবস্থা শোচনীয়। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তের সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
যাঁরা বলেন, কোটিপতির সংখ্যা বৃদ্ধি মানেই অর্থনীতির উন্নয়ন, তারা হয়তো ভুলে যান যে, প্রবৃদ্ধি ও অর্থনীতির শুদ্ধতা এক জিনিস নয়। প্রবৃদ্ধি তখনই অর্থবহ হয়, যখন তা সমাজের সব শ্রেণির মানুষের কল্যাণে আসে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, মুষ্টিমেয় ধনী আরও ধনী হচ্ছে, গরিব আরও গরিব হচ্ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, দেশে দারিদ্র্যের হার কমছে না, বরং আয়-ব্যয়ের বৈষম্য বাড়ছে। এর মানে হলো, অর্থনৈতিক উন্নয়ন কেবল একশ্রেণির মানুষের হাতে কেন্দ্রীভূত হচ্ছে।
দরিদ্র জনগোষ্ঠীর প্রতি মনোযোগ না দিয়ে শুধু সম্পদের কেন্দ্রীভূতকরণ চলতে থাকলে সামাজিক অস্থিরতা ও অসন্তোষ বাড়বে। উন্নয়ন তখনই টেকসই হবে, যখন ধনী-গরিবের ব্যবধান কমবে, সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত হবে। অর্থনীতির এই অসম বৃদ্ধি ও বৈষম্য থামানোর জন্য এখনই কার্যকর নীতি গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় বৈষম্যের এই ধারা ভবিষ্যতে দেশকে বড় সংকটের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
একটি দেশ তখনই প্রকৃত উন্নয়নের পথে এগোয়, যখন অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির সুফল সমাজের সব স্তরে সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু বাংলাদেশে যে প্রবৃদ্ধি বা অর্থনৈতিক পরিবর্তন ঘটছে, তার বাস্তব চিত্র ভিন্ন। আজকের পত্রিকায় ১৪ মার্চ প্রকাশিত খবর থেকে জানা যাচ্ছে, মাত্র তিন মাসে ব্যাংক হিসাবধারী কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৫ হাজার। তথ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের। এখন দেশে এক কোটি টাকার বেশি আমানত রয়েছে—এমন হিসাবের সংখ্যা সোয়া লাখ ছাড়িয়ে গেছে। অথচ এই সময়ে সাধারণ মানুষের জীবনমান কতটা উন্নত হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, আয়বৈষম্যের প্রকটতা, কর্মসংস্থানের অভাব এবং দারিদ্র্যের চক্রে আটকে থাকা মানুষের কষ্ট যেন অর্থনীতির এই তথাকথিত উন্নয়নের বিপরীত চিত্র।
বাংলাদেশের জন্ম হয়েছিল এক নতুন অর্থনৈতিক সাম্য ও ন্যায়বিচারের স্বপ্ন নিয়ে। সেই স্বপ্নের পটভূমিতে ছিল বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার জন্য যে লড়াই, তা কেবল রাজনৈতিক স্বাধীনতার জন্য নয়, অর্থনৈতিক মুক্তির জন্যও ছিল। অথচ আজ স্বাধীনতার পাঁচ দশক পেরিয়ে আমরা দেখি, অর্থনৈতিক বৈষম্য ক্রমেই প্রকট হচ্ছে। একদিকে সমাজের একটা ক্ষুদ্র অংশ বিপুল সম্পদের মালিক হয়ে উঠছে, অন্যদিকে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। একসময় যে দেশে মাত্র পাঁচজন কোটিপতি ছিলেন, সেই দেশে এখন কোটিপতির সংখ্যা লাখ ছাড়িয়েছে। এটাই কি উন্নয়ন?
অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অর্থ পাচারের সুযোগ কমে যাওয়ায় কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের ফলে অনেকে ব্যাংকে টাকা রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। আবার একশ্রেণির ব্যবসায়ী অতি মুনাফা করেছেন, যা তাঁদের সম্পদ বাড়িয়েছে। এর অর্থ হলো, অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘদিনের যে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি ও অব্যবস্থাপনা ছিল, তা থেকেই এই সম্পদ বেড়েছে। অন্যদিকে, সাধারণ শ্রমজীবী ও মধ্যবিত্ত মানুষের অবস্থা শোচনীয়। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় নিম্নবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তের সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।
যাঁরা বলেন, কোটিপতির সংখ্যা বৃদ্ধি মানেই অর্থনীতির উন্নয়ন, তারা হয়তো ভুলে যান যে, প্রবৃদ্ধি ও অর্থনীতির শুদ্ধতা এক জিনিস নয়। প্রবৃদ্ধি তখনই অর্থবহ হয়, যখন তা সমাজের সব শ্রেণির মানুষের কল্যাণে আসে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, মুষ্টিমেয় ধনী আরও ধনী হচ্ছে, গরিব আরও গরিব হচ্ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, দেশে দারিদ্র্যের হার কমছে না, বরং আয়-ব্যয়ের বৈষম্য বাড়ছে। এর মানে হলো, অর্থনৈতিক উন্নয়ন কেবল একশ্রেণির মানুষের হাতে কেন্দ্রীভূত হচ্ছে।
দরিদ্র জনগোষ্ঠীর প্রতি মনোযোগ না দিয়ে শুধু সম্পদের কেন্দ্রীভূতকরণ চলতে থাকলে সামাজিক অস্থিরতা ও অসন্তোষ বাড়বে। উন্নয়ন তখনই টেকসই হবে, যখন ধনী-গরিবের ব্যবধান কমবে, সবার জন্য সমান সুযোগ নিশ্চিত হবে। অর্থনীতির এই অসম বৃদ্ধি ও বৈষম্য থামানোর জন্য এখনই কার্যকর নীতি গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় বৈষম্যের এই ধারা ভবিষ্যতে দেশকে বড় সংকটের দিকে ঠেলে দিতে পারে।
শান্তিতে নোবেল পুরস্কার একসময় ছিল আন্তর্জাতিক নৈতিকতার শীর্ষ সম্মান—যেখানে পুরস্কার পেতেন তাঁরা, যাঁদের জীবন ও কর্ম বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় এক অনন্য দৃষ্টান্ত। আজ সেই পুরস্কার অনেকটা হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজনৈতিক সৌজন্য উপহার। যা দেওয়া হয় যখন কারও হাত মলতে হয়, অহংকারে তেল দিতে হয় বা নিজের অ্যাজেন্ডা...
১২ আগস্ট ২০২৫গত বছর জুলাই মাস থেকে আমাদের আন্দোলনকারী তরুণ ছাত্রছাত্রীদের মুখে ও কিছু কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মুখে, বেশি বেশি করে কয়েকটি বাক্য উচ্চারিত হয়ে আসছিল। বাকিগুলোর মধ্যে প্রথম যে বাক্যটি সবার কানে বেধেছে, সেটা হলো ‘বন্দোবস্ত’।
১২ আগস্ট ২০২৫প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন সম্প্রতি রংপুরে অনুষ্ঠিত এক সভায় যে কথাগুলো বলেছেন, তা দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি অকপটে স্বীকার করেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা এখন নির্বাচন কমিশনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
১২ আগস্ট ২০২৫জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকার অবসানের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর পূর্ণ হয়েছে। এ উপলক্ষে কয়েক দিন ধরে পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশনের টক শোতে চলছে এক বছরের মূল্যায়ন।
১১ আগস্ট ২০২৫