জাহীদ রেজা নূর, ঢাকা
এবার সরাসরি ভাষা প্রসঙ্গে আসা যাক। ব্রিটিশ আমলে কেন মুসলিমরা সরকারি চাকরিতে কিংবা বেসরকারি চাকরিতেও স্থান পাচ্ছিলেন না, তার কিছুটা বর্ণনা করা হয়েছে। ইংরেজরা একের পর এক যে সব চাকরির শর্ত দিচ্ছিল, তাতে মুসলমানদের পক্ষে চাকরির ময়দানে টিকে থাকা দুরূহ হয়ে উঠেছিল। এর একটা বড় কারণ ছিল ভাষা।
আরবি আর ফারসির প্রতি আকর্ষণ থাকলেও বাংলা বা ইংরেজি শিক্ষার প্রতি অনীহা ছিল মুসলিমদের। বরং মোঘল আমলেই অনেক হিন্দু ফারসি শিখে বাদশাহী প্রশাসনে জায়গা করে নিয়েছিল।
১৭৫৭ সালে পলাশী যুদ্ধে জয়ী হয়েছিল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। ১৮৩৭ সালে অফিস-আদালতে ফারসির বদলে ইংরেজি ও বাংলা চালু করেছিল তারা। এই উভয় শিক্ষাতেই ভয়াবহভাবে পিছিয়ে ছিল মুসলমানরা। ফলে অফিস-আদালতের দরজা তাদের জন্য বন্ধ হয়ে গেল।
যেকোনো চাকরিতে ইংরেজি জ্ঞানের উল্লেখ থাকায় তা মুসলমানদের পিছিয়ে দেয়। ১৮৫৯ সালে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট এবং ডেপুটি কালেক্টর নিয়োগের শর্ত ছিল ইংরেজি ভাষাজ্ঞান। ১৮৬৩ সালে মুন্সেফ, উকিল, দারোগা হওয়ার ন্যূনতম যোগ্যতা করা হলো এন্ট্রান্স পাস। ১৮৬৪ সালে নিয়ম হলো, ইংরেজি ভাষার মাধ্যমে আইন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই কেবল সরকারি পদের জন্য বিবেচনা করা হবে। ১৮৬৬ সালে মুন্সেফ হওয়ার ন্যূনতম যোগ্যতা নির্ধারিত হলো আইনে স্নাতক। এ থেকেও বোঝা যায়, কেন মুসলমানরা ব্রিটিশ আমলে চাকরি-বাকরিতে পিছিয়ে পড়ছিল।
মুসলমানরা তখন শাসনক্ষমতা হারিয়েছে, জমিদারিও তাদের খুব বেশি নেই, লাখেরাজ সম্পত্তি থেকে উৎখাত হয়েছে, আধুনিক শিক্ষায় পিছিয়ে পড়েছে, সরকারি চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এ রকম একটা অবস্থায় তারা মনে করে, ইসলামের সঠিক পথ থেকে বিচ্যুতির ফলেই তাদের এ দুরবস্থা। এরই ফলশ্রুতি হলো ধর্ম সংস্কার আন্দোলন। ফরায়েজি, ওহাবী ধর্ম সংস্কার আন্দোলনের ফলে বাংলার মুসলমানদের মধ্যে উদারপন্থী সুফিবাদের প্রভাব হ্রাস পায়। নামে, পোশাকে পরিবর্তন আসে। ধুতি ছেড়ে লুঙ্গি পরতে শুরু করে মুসলমানরা।
রাজনৈতিকভাবে এ সময়টাকেই হিন্দু-মুসলমান বিভাজনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ বলা যায়। দুই সম্প্রদায়ের মানুষ পরস্পরের প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাবে আচ্ছন্ন হয়ে ওঠে। এই অবস্থা সৃষ্টিতে ব্রিটিশদের অবদান ছিল, কট্টর হিন্দু-মুসলিম নেতারাও এ ঘৃণার পরিবেশকে লালন করেছেন।
ব্রিটিশরা বুঝতে পারছিল, জাতীয়তাবাদী আন্দোলন যেভাবে ফুঁসে উঠছে, তাতে এই উপনিবেশকে বেশি দিন ধরে রাখা যাবে না। ফলে ১৯৪৭ সালে যে দেশভাগ হলো, তা লাহোর প্রস্তাবকে এড়িয়ে গড়ে তুলল এক বিচিত্র রাষ্ট্র, পাকিস্তান যার নাম। সেই পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্মের ৬ মাসের মধ্যেই রাষ্ট্রভাষা প্রসঙ্গটি হয়ে উঠল প্রাসঙ্গিক। নবগঠিত পাকিস্তানে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলা ভাষার দাবি নিয়েই সর্বপ্রথম আন্দোলন শুরু হলো।
এবার সরাসরি ভাষা প্রসঙ্গে আসা যাক। ব্রিটিশ আমলে কেন মুসলিমরা সরকারি চাকরিতে কিংবা বেসরকারি চাকরিতেও স্থান পাচ্ছিলেন না, তার কিছুটা বর্ণনা করা হয়েছে। ইংরেজরা একের পর এক যে সব চাকরির শর্ত দিচ্ছিল, তাতে মুসলমানদের পক্ষে চাকরির ময়দানে টিকে থাকা দুরূহ হয়ে উঠেছিল। এর একটা বড় কারণ ছিল ভাষা।
আরবি আর ফারসির প্রতি আকর্ষণ থাকলেও বাংলা বা ইংরেজি শিক্ষার প্রতি অনীহা ছিল মুসলিমদের। বরং মোঘল আমলেই অনেক হিন্দু ফারসি শিখে বাদশাহী প্রশাসনে জায়গা করে নিয়েছিল।
১৭৫৭ সালে পলাশী যুদ্ধে জয়ী হয়েছিল ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। ১৮৩৭ সালে অফিস-আদালতে ফারসির বদলে ইংরেজি ও বাংলা চালু করেছিল তারা। এই উভয় শিক্ষাতেই ভয়াবহভাবে পিছিয়ে ছিল মুসলমানরা। ফলে অফিস-আদালতের দরজা তাদের জন্য বন্ধ হয়ে গেল।
যেকোনো চাকরিতে ইংরেজি জ্ঞানের উল্লেখ থাকায় তা মুসলমানদের পিছিয়ে দেয়। ১৮৫৯ সালে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট এবং ডেপুটি কালেক্টর নিয়োগের শর্ত ছিল ইংরেজি ভাষাজ্ঞান। ১৮৬৩ সালে মুন্সেফ, উকিল, দারোগা হওয়ার ন্যূনতম যোগ্যতা করা হলো এন্ট্রান্স পাস। ১৮৬৪ সালে নিয়ম হলো, ইংরেজি ভাষার মাধ্যমে আইন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই কেবল সরকারি পদের জন্য বিবেচনা করা হবে। ১৮৬৬ সালে মুন্সেফ হওয়ার ন্যূনতম যোগ্যতা নির্ধারিত হলো আইনে স্নাতক। এ থেকেও বোঝা যায়, কেন মুসলমানরা ব্রিটিশ আমলে চাকরি-বাকরিতে পিছিয়ে পড়ছিল।
মুসলমানরা তখন শাসনক্ষমতা হারিয়েছে, জমিদারিও তাদের খুব বেশি নেই, লাখেরাজ সম্পত্তি থেকে উৎখাত হয়েছে, আধুনিক শিক্ষায় পিছিয়ে পড়েছে, সরকারি চাকরি থেকে বঞ্চিত হয়েছে। এ রকম একটা অবস্থায় তারা মনে করে, ইসলামের সঠিক পথ থেকে বিচ্যুতির ফলেই তাদের এ দুরবস্থা। এরই ফলশ্রুতি হলো ধর্ম সংস্কার আন্দোলন। ফরায়েজি, ওহাবী ধর্ম সংস্কার আন্দোলনের ফলে বাংলার মুসলমানদের মধ্যে উদারপন্থী সুফিবাদের প্রভাব হ্রাস পায়। নামে, পোশাকে পরিবর্তন আসে। ধুতি ছেড়ে লুঙ্গি পরতে শুরু করে মুসলমানরা।
রাজনৈতিকভাবে এ সময়টাকেই হিন্দু-মুসলমান বিভাজনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ বলা যায়। দুই সম্প্রদায়ের মানুষ পরস্পরের প্রতি বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাবে আচ্ছন্ন হয়ে ওঠে। এই অবস্থা সৃষ্টিতে ব্রিটিশদের অবদান ছিল, কট্টর হিন্দু-মুসলিম নেতারাও এ ঘৃণার পরিবেশকে লালন করেছেন।
ব্রিটিশরা বুঝতে পারছিল, জাতীয়তাবাদী আন্দোলন যেভাবে ফুঁসে উঠছে, তাতে এই উপনিবেশকে বেশি দিন ধরে রাখা যাবে না। ফলে ১৯৪৭ সালে যে দেশভাগ হলো, তা লাহোর প্রস্তাবকে এড়িয়ে গড়ে তুলল এক বিচিত্র রাষ্ট্র, পাকিস্তান যার নাম। সেই পাকিস্তান রাষ্ট্রের জন্মের ৬ মাসের মধ্যেই রাষ্ট্রভাষা প্রসঙ্গটি হয়ে উঠল প্রাসঙ্গিক। নবগঠিত পাকিস্তানে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলা ভাষার দাবি নিয়েই সর্বপ্রথম আন্দোলন শুরু হলো।
শান্তিতে নোবেল পুরস্কার একসময় ছিল আন্তর্জাতিক নৈতিকতার শীর্ষ সম্মান—যেখানে পুরস্কার পেতেন তাঁরা, যাঁদের জীবন ও কর্ম বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় এক অনন্য দৃষ্টান্ত। আজ সেই পুরস্কার অনেকটা হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজনৈতিক সৌজন্য উপহার। যা দেওয়া হয় যখন কারও হাত মলতে হয়, অহংকারে তেল দিতে হয় বা নিজের অ্যাজেন্ডা...
১২ আগস্ট ২০২৫গত বছর জুলাই মাস থেকে আমাদের আন্দোলনকারী তরুণ ছাত্রছাত্রীদের মুখে ও কিছু কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মুখে, বেশি বেশি করে কয়েকটি বাক্য উচ্চারিত হয়ে আসছিল। বাকিগুলোর মধ্যে প্রথম যে বাক্যটি সবার কানে বেধেছে, সেটা হলো ‘বন্দোবস্ত’।
১২ আগস্ট ২০২৫প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন সম্প্রতি রংপুরে অনুষ্ঠিত এক সভায় যে কথাগুলো বলেছেন, তা দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি অকপটে স্বীকার করেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা এখন নির্বাচন কমিশনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
১২ আগস্ট ২০২৫জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকার অবসানের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর পূর্ণ হয়েছে। এ উপলক্ষে কয়েক দিন ধরে পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশনের টক শোতে চলছে এক বছরের মূল্যায়ন।
১১ আগস্ট ২০২৫