ড. মোর্ত্তুজা আহমেদ
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘বিশেষ মর্যাদা’ দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন। দাবিটি প্রথমে আবেগঘন মনে হতে পারে, কারণ দেশের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তবে গভীরভাবে বিবেচনা করলে দেখা যাবে, এই দাবির পেছনে বেশ কিছু সমস্যা ও প্রশ্ন লুকিয়ে আছে। বিশেষ মর্যাদা কি সত্যিই প্রয়োজন? তা কি অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতি অবিচার নয়? আর বিশ্বের কোথাও কি সরকারের ‘বিশেষ মর্যাদা’ ঘোষণার মাধ্যমে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় সত্যিই বিশেষ হয়ে উঠতে পারে?
প্রথমেই দেখতে হবে, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা আসলে কিসে নিহিত। বিশ্বের যেকোনো প্রসিদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়—হার্ভার্ড, অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ বা মেলবোর্ন—তাদের কোনো সরকারিভাবে দেওয়া ‘বিশেষ মর্যাদা’ নেই। তাদের মর্যাদা এসেছে গবেষণার মান, নতুন জ্ঞান সৃষ্টির সক্ষমতা, সমাজের প্রয়োজন মেটানোর যোগ্যতা, সর্বোপরি শিক্ষার্থীদের মানবিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষের মাধ্যমে। এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রমাণ করেছে—মর্যাদা বাইরে থেকে পাওয়া কোনো প্রশংসাপত্র নয়, বরং ভেতর থেকে অর্জিত এক সোনার মুকুট।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা এই ‘বিশেষ মর্যাদা’ চেয়ে যে যুক্তি তুলেছেন, সেটি ঐতিহাসিক অবদান ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কথা বলে। নিঃসন্দেহে ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ বাংলাদেশের নানা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা গৌরবময়। কিন্তু শুধু অতীতের অবদানকে পুঁজি করে ‘বিশেষ মর্যাদা’র দাবি টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। ইতিহাসের সম্মান রক্ষার চেয়ে বড় কাজ হলো বর্তমান প্রজন্মকে বিশ্বমানের শিক্ষা ও গবেষণার মাধ্যমে গড়ে তোলা। অতীতের গৌরবের ওপর দাঁড়িয়ে থাকলে বিশ্ববিদ্যালয় থমকে যাবে, নতুন উচ্চতা অর্জন করবে না।
অন্যদিকে, সরকারের পক্ষ থেকে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘বিশেষ মর্যাদা’ দেওয়া হলে তা শিক্ষাব্যবস্থায় বৈষম্য সৃষ্টি করে। একই দেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা নিজেদের অবহেলিত বোধ করতে পারেন। শিক্ষার ক্ষেত্রে সমতা ও ন্যায্যতা রক্ষার নীতির বিরুদ্ধাচরণ হবে এটি। দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় যেমন—রাজশাহী, চট্টগ্রাম বা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ও তাদের নিজস্ব প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে আলাদা করে মর্যাদা দেওয়া মানে অপ্রয়োজনীয় বিভাজন ও প্রতিযোগিতা উসকে দেওয়া। শিক্ষার জগতে প্রতিযোগিতা প্রয়োজন, কিন্তু সেটা হবে গবেষণা ও জ্ঞানের মানের ভিত্তিতে, প্রশাসনিক স্বীকৃতি বা ‘বিশেষ’ তকমা দিয়ে নয়।
এ ছাড়া, ‘বিশেষ মর্যাদা’ সরকারের পক্ষ থেকে এলে তা রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থাকবে—এমন নিশ্চয়তা নেই। এমনিতেই দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অভিযোগ রয়েছে। একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘বিশেষ মর্যাদা’ দিলে সেই বিশ্ববিদ্যালয় রাজনীতির কাছে ‘বিশেষ’ হয়ে উঠতে পারে, যা দেশের শিক্ষাব্যবস্থার জন্য ক্ষতিকর। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও শিক্ষা কার্যক্রমে রাজনৈতিক প্রভাবকে আরও পাকাপোক্ত করার একটি অনাকাঙ্ক্ষিত সুযোগ তৈরি হতে পারে।
আন্তর্জাতিক উদাহরণগুলোও আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখায়—বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা সরকারি ঘোষণায় আসে না। যুক্তরাষ্ট্রে বা ইউরোপের অনেক দেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মর্যাদা নির্ধারিত হয় গবেষণার উৎকর্ষতা, উদ্ভাবনী ক্ষমতা ও সমাজে ইতিবাচক প্রভাবের ভিত্তিতে। হার্ভার্ডের ‘বিশেষ মর্যাদা’ সরকার দেয়নি, দিয়েছে তার গবেষণার মান আর সমাজে প্রভাব। তাই বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘বিশেষ’ হতে হলে তাকে নিজস্ব শক্তির মাধ্যমে তা অর্জন করতে হবে।
প্রকৃতপক্ষে, একটি বিশ্ববিদ্যালয় ‘বিশেষ’ হয়ে ওঠে যখন সমাজে আলোড়ন তোলে, নতুন চিন্তার দ্বার উন্মুক্ত করে এবং নিত্যনতুন সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করে। ঢাবি বা দেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় যদি সত্যিকার অর্থে ‘বিশেষ’ হতে চায়, তবে তাকে এই কাজগুলোতে মনোনিবেশ করতে হবে। নিজেদের গবেষণা প্রকল্পকে আন্তর্জাতিক মানের করতে হবে, ছাত্রছাত্রীদের সমালোচনামূলক ও সৃজনশীল ভাবনায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে। স্বনির্ভরতা, মুক্তবুদ্ধির চর্চা এবং উদ্ভাবনী শিক্ষার মডেলই একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘বিশেষ’ করে তোলে।
একই সঙ্গে, সরকার বা রাষ্ট্রের করণীয় হলো—বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার নামে রাজনৈতিক শংসাপত্র বিলি না করে বরং সুষ্ঠু অর্থায়ন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও প্রশাসনিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় যাতে তাদের নিজস্ব স্বকীয়তা ও সক্ষমতা বিকশিত করতে পারে, সেটাই সরকারের মূল দায়িত্ব হওয়া উচিত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অতীত গৌরব আমাদের প্রেরণা। তবে এখন সময় এসেছে অতীতের গৌরবের বাইরেও নিজেদের প্রমাণ করার। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উচিত, বিশেষ মর্যাদা চাওয়ার বদলে নিজেদের ‘বিশেষ’ প্রমাণে নিবেদিত হওয়া। গবেষণায় বিনিয়োগ, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, পাঠদানের গুণগত মান বৃদ্ধি—এ সবই প্রকৃত মর্যাদা এনে দিতে পারে। আর তখন দেশের জনগণই নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘বিশেষ’ মর্যাদা দিতে বাধ্য হবে।
শেষ কথা, বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘বিশেষ’ হতে হয়, ‘বিশেষ’ দাবি করে নয়। সম্মান ও মর্যাদা অর্জনের পথ কখনোই প্রশাসনিক পদক্ষেপ দিয়ে হয় না। সেটি আসে জ্ঞান সৃষ্টির ক্ষমতা দিয়ে। তাই বিশেষ মর্যাদার দাবি না তুলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিজের শক্তিতেই নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে হবে। দেশবাসী ও বিশ্বের কাছে তখন স্বীকৃতি আপনাতেই আসবে।
ড. মোর্ত্তুজা আহমেদ, সহযোগী অধ্যাপক, ব্যবসায় প্রশাসন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘বিশেষ মর্যাদা’ দেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন। দাবিটি প্রথমে আবেগঘন মনে হতে পারে, কারণ দেশের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তবে গভীরভাবে বিবেচনা করলে দেখা যাবে, এই দাবির পেছনে বেশ কিছু সমস্যা ও প্রশ্ন লুকিয়ে আছে। বিশেষ মর্যাদা কি সত্যিই প্রয়োজন? তা কি অন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতি অবিচার নয়? আর বিশ্বের কোথাও কি সরকারের ‘বিশেষ মর্যাদা’ ঘোষণার মাধ্যমে কোনো বিশ্ববিদ্যালয় সত্যিই বিশেষ হয়ে উঠতে পারে?
প্রথমেই দেখতে হবে, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা আসলে কিসে নিহিত। বিশ্বের যেকোনো প্রসিদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়—হার্ভার্ড, অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ বা মেলবোর্ন—তাদের কোনো সরকারিভাবে দেওয়া ‘বিশেষ মর্যাদা’ নেই। তাদের মর্যাদা এসেছে গবেষণার মান, নতুন জ্ঞান সৃষ্টির সক্ষমতা, সমাজের প্রয়োজন মেটানোর যোগ্যতা, সর্বোপরি শিক্ষার্থীদের মানবিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক উৎকর্ষের মাধ্যমে। এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রমাণ করেছে—মর্যাদা বাইরে থেকে পাওয়া কোনো প্রশংসাপত্র নয়, বরং ভেতর থেকে অর্জিত এক সোনার মুকুট।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা এই ‘বিশেষ মর্যাদা’ চেয়ে যে যুক্তি তুলেছেন, সেটি ঐতিহাসিক অবদান ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের কথা বলে। নিঃসন্দেহে ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধসহ বাংলাদেশের নানা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকা গৌরবময়। কিন্তু শুধু অতীতের অবদানকে পুঁজি করে ‘বিশেষ মর্যাদা’র দাবি টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। ইতিহাসের সম্মান রক্ষার চেয়ে বড় কাজ হলো বর্তমান প্রজন্মকে বিশ্বমানের শিক্ষা ও গবেষণার মাধ্যমে গড়ে তোলা। অতীতের গৌরবের ওপর দাঁড়িয়ে থাকলে বিশ্ববিদ্যালয় থমকে যাবে, নতুন উচ্চতা অর্জন করবে না।
অন্যদিকে, সরকারের পক্ষ থেকে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘বিশেষ মর্যাদা’ দেওয়া হলে তা শিক্ষাব্যবস্থায় বৈষম্য সৃষ্টি করে। একই দেশের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা নিজেদের অবহেলিত বোধ করতে পারেন। শিক্ষার ক্ষেত্রে সমতা ও ন্যায্যতা রক্ষার নীতির বিরুদ্ধাচরণ হবে এটি। দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় যেমন—রাজশাহী, চট্টগ্রাম বা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ও তাদের নিজস্ব প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে আলাদা করে মর্যাদা দেওয়া মানে অপ্রয়োজনীয় বিভাজন ও প্রতিযোগিতা উসকে দেওয়া। শিক্ষার জগতে প্রতিযোগিতা প্রয়োজন, কিন্তু সেটা হবে গবেষণা ও জ্ঞানের মানের ভিত্তিতে, প্রশাসনিক স্বীকৃতি বা ‘বিশেষ’ তকমা দিয়ে নয়।
এ ছাড়া, ‘বিশেষ মর্যাদা’ সরকারের পক্ষ থেকে এলে তা রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থাকবে—এমন নিশ্চয়তা নেই। এমনিতেই দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপের অভিযোগ রয়েছে। একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘বিশেষ মর্যাদা’ দিলে সেই বিশ্ববিদ্যালয় রাজনীতির কাছে ‘বিশেষ’ হয়ে উঠতে পারে, যা দেশের শিক্ষাব্যবস্থার জন্য ক্ষতিকর। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও শিক্ষা কার্যক্রমে রাজনৈতিক প্রভাবকে আরও পাকাপোক্ত করার একটি অনাকাঙ্ক্ষিত সুযোগ তৈরি হতে পারে।
আন্তর্জাতিক উদাহরণগুলোও আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখায়—বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা সরকারি ঘোষণায় আসে না। যুক্তরাষ্ট্রে বা ইউরোপের অনেক দেশে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মর্যাদা নির্ধারিত হয় গবেষণার উৎকর্ষতা, উদ্ভাবনী ক্ষমতা ও সমাজে ইতিবাচক প্রভাবের ভিত্তিতে। হার্ভার্ডের ‘বিশেষ মর্যাদা’ সরকার দেয়নি, দিয়েছে তার গবেষণার মান আর সমাজে প্রভাব। তাই বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘বিশেষ’ হতে হলে তাকে নিজস্ব শক্তির মাধ্যমে তা অর্জন করতে হবে।
প্রকৃতপক্ষে, একটি বিশ্ববিদ্যালয় ‘বিশেষ’ হয়ে ওঠে যখন সমাজে আলোড়ন তোলে, নতুন চিন্তার দ্বার উন্মুক্ত করে এবং নিত্যনতুন সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করে। ঢাবি বা দেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয় যদি সত্যিকার অর্থে ‘বিশেষ’ হতে চায়, তবে তাকে এই কাজগুলোতে মনোনিবেশ করতে হবে। নিজেদের গবেষণা প্রকল্পকে আন্তর্জাতিক মানের করতে হবে, ছাত্রছাত্রীদের সমালোচনামূলক ও সৃজনশীল ভাবনায় উদ্বুদ্ধ করতে হবে। স্বনির্ভরতা, মুক্তবুদ্ধির চর্চা এবং উদ্ভাবনী শিক্ষার মডেলই একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘বিশেষ’ করে তোলে।
একই সঙ্গে, সরকার বা রাষ্ট্রের করণীয় হলো—বিশেষ মর্যাদা দেওয়ার নামে রাজনৈতিক শংসাপত্র বিলি না করে বরং সুষ্ঠু অর্থায়ন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও প্রশাসনিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। দেশের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় যাতে তাদের নিজস্ব স্বকীয়তা ও সক্ষমতা বিকশিত করতে পারে, সেটাই সরকারের মূল দায়িত্ব হওয়া উচিত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অতীত গৌরব আমাদের প্রেরণা। তবে এখন সময় এসেছে অতীতের গৌরবের বাইরেও নিজেদের প্রমাণ করার। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উচিত, বিশেষ মর্যাদা চাওয়ার বদলে নিজেদের ‘বিশেষ’ প্রমাণে নিবেদিত হওয়া। গবেষণায় বিনিয়োগ, আন্তর্জাতিক সহযোগিতা, পাঠদানের গুণগত মান বৃদ্ধি—এ সবই প্রকৃত মর্যাদা এনে দিতে পারে। আর তখন দেশের জনগণই নয়, আন্তর্জাতিক অঙ্গনও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘বিশেষ’ মর্যাদা দিতে বাধ্য হবে।
শেষ কথা, বিশ্ববিদ্যালয়কে ‘বিশেষ’ হতে হয়, ‘বিশেষ’ দাবি করে নয়। সম্মান ও মর্যাদা অর্জনের পথ কখনোই প্রশাসনিক পদক্ষেপ দিয়ে হয় না। সেটি আসে জ্ঞান সৃষ্টির ক্ষমতা দিয়ে। তাই বিশেষ মর্যাদার দাবি না তুলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিজের শক্তিতেই নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে হবে। দেশবাসী ও বিশ্বের কাছে তখন স্বীকৃতি আপনাতেই আসবে।
ড. মোর্ত্তুজা আহমেদ, সহযোগী অধ্যাপক, ব্যবসায় প্রশাসন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়
শান্তিতে নোবেল পুরস্কার একসময় ছিল আন্তর্জাতিক নৈতিকতার শীর্ষ সম্মান—যেখানে পুরস্কার পেতেন তাঁরা, যাঁদের জীবন ও কর্ম বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় এক অনন্য দৃষ্টান্ত। আজ সেই পুরস্কার অনেকটা হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজনৈতিক সৌজন্য উপহার। যা দেওয়া হয় যখন কারও হাত মলতে হয়, অহংকারে তেল দিতে হয় বা নিজের অ্যাজেন্ডা...
২৪ দিন আগেগত বছর জুলাই মাস থেকে আমাদের আন্দোলনকারী তরুণ ছাত্রছাত্রীদের মুখে ও কিছু কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মুখে, বেশি বেশি করে কয়েকটি বাক্য উচ্চারিত হয়ে আসছিল। বাকিগুলোর মধ্যে প্রথম যে বাক্যটি সবার কানে বেধেছে, সেটা হলো ‘বন্দোবস্ত’।
২৪ দিন আগেপ্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন সম্প্রতি রংপুরে অনুষ্ঠিত এক সভায় যে কথাগুলো বলেছেন, তা দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি অকপটে স্বীকার করেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা এখন নির্বাচন কমিশনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
২৪ দিন আগেজুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকার অবসানের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর পূর্ণ হয়েছে। এ উপলক্ষে কয়েক দিন ধরে পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশনের টক শোতে চলছে এক বছরের মূল্যায়ন।
২৫ দিন আগে