আহমেদ শরীফ
খোলা চোখে এই মুহূর্তে পৃথিবীর অন্য সব দেশের মতো আমাদেরও বড় শত্রু করোনাভাইরাস। তবে বর্ষা শুরুর পর থেকে আমাদের আরও একটি শত্রুপক্ষ জুটেছে, যার নাম ডেঙ্গু। অবস্থা ধীরে ধীরে পাল্টাচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগের সূত্রমতে, দেশে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার কমছে। কিন্তু রাজধানীতে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ডেঙ্গু, যার প্রধান শিকার শিশুরা। বড়রা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলেও চিকিৎসায় ভালো হয়ে উঠছেন। কিন্তু শিশুরা ডেঙ্গুতে হয়ে পড়ছে নাজুক। অনেকেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। তবে এই করোনা আর ডেঙ্গুর মাঝেও আরেকটি বড় আশঙ্কার বিষয় হলো শিক্ষা, যা করোনা আর ডেঙ্গুর মাঝে ঝুলে আছে অনিশ্চয়তায়। দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে দেড় বছরের বেশি সময় ধরে। সরকারি সিদ্ধান্তমতে, ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে পারে নিজেদের সিদ্ধান্তে। দেশের সব স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীকে টিকা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। প্রশ্ন জাগছে, দেশের এতগুলো স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সবাইকে একই সঙ্গে টিকার আওতায় আনা কি সম্ভব হবে? এটা কিন্তু একটা বিশাল কর্মযজ্ঞের ব্যাপার। এটা ঠিক যে করোনাকালে শিশুদের স্কুলে যেতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। কিন্তু এই সময়টা দেড় বছরের বেশি হওয়া কি ঠিক হলো?
এই দ্রুত টিকা দেওয়ার কাজটা আরও আগেই করা উচিত ছিল। এখন অন্য সব সাধারণ মানুষকে পেছনে ফেলে তাঁদের প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া যেমন সময়সাপেক্ষ ও কিছুটা জটিল, তেমনি তাঁদের দ্বিতীয় ডোজ নিশ্চিত করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পুরোপুরি চালু করার ব্যাপারটা এখনো অনেকটাই ধোঁয়াশার মধ্যে আছে। বেশ কিছুদিন ধরেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন বিশেষজ্ঞরা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক প্রতীকী ক্লাস নিয়ে যাচ্ছেন। বিষয়টা শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হয়তো নজর কেড়েছে। তবে ঘুরেফিরে আবারও প্রশ্ন আসে, সবকিছুই যখন স্বাভাবিক গতিতে চলছে, তখন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনকে আরও অন্ধকারময় করে তোলা কি ইতিবাচক কিছু হচ্ছে? গত বছরের কোভিড পরিস্থিতি বিবেচনা করে এ বছর কেন বিশ্ববিদ্যালয়সহ উচ্চতর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো দ্রুত চালু করার কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়?
করোনার টিকা নিয়ে বয়সসীমার যে পরিবর্তন-পরিমার্জন চলছিল, তাতে শুরুতেই চিকিৎসক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সাংবাদিকদের মতো সম্মুখ যোদ্ধাদের টিকার আওতায় আনার পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেওয়া উচিত ছিল। তাহলে হয়তো এরই মাঝে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া সম্ভব হতো। বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা গত দেড় বছরে কতটুকু পিছিয়ে গেল, তা নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। মাঝখানে ভার্চুয়ালি ক্লাসের ব্যবস্থা করা হলেও তাতে অনেক শিক্ষার্থীই সংযুক্ত হতে পারেনি। এত দীর্ঘ সময় শিক্ষার্থীরা বলতে গেলে শিক্ষাবিমুখই ছিল। বেশির ভাগ শিক্ষার্থী এ সময় অনলাইন গেমসে আসক্ত হয়ে পড়ে। মোবাইল বা কম্পিউটারের স্ক্রিন থেকে তাদের ফিরিয়ে আনতে প্রায় সব ঘরে মা-বাবার সব চেষ্টাই বিফলে গেছে। সেই সঙ্গে বিফলে গেছে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাকার্যক্রম। শিশুদের মাঝে দেখা দেয় মানসিক সমস্যা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও তাঁদের শিক্ষাজীবন শেষ করে কর্মজীবনের প্রতিযোগিতার কথা ভেবে অন্ধকারেই ডুবে আছেন। সব মিলিয়ে করোনা আমাদের কী শিক্ষা দিল, তা যেমন বড় চিন্তা, তেমনি করোনা আমাদের শিক্ষা যে কেড়ে নিল, তা-ও এক বড় দুশ্চিন্তা। দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিগগিরই আলোর মুখ দেখবে, লাঘব হবে শিক্ষা নিয়ে অভিভাবকদের দুশ্চিন্তা, সে আশাই করছি এখন। আর দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকায়, প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সুষ্ঠুভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে চালু করতে হবে, যেন শ্রেণিকক্ষে এডিসসহ অন্য মশারও প্রাদুর্ভাব না থাকে।
লেখক: কবি ও সাংবাদিক
খোলা চোখে এই মুহূর্তে পৃথিবীর অন্য সব দেশের মতো আমাদেরও বড় শত্রু করোনাভাইরাস। তবে বর্ষা শুরুর পর থেকে আমাদের আরও একটি শত্রুপক্ষ জুটেছে, যার নাম ডেঙ্গু। অবস্থা ধীরে ধীরে পাল্টাচ্ছে। স্বাস্থ্য বিভাগের সূত্রমতে, দেশে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার কমছে। কিন্তু রাজধানীতে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে ডেঙ্গু, যার প্রধান শিকার শিশুরা। বড়রা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলেও চিকিৎসায় ভালো হয়ে উঠছেন। কিন্তু শিশুরা ডেঙ্গুতে হয়ে পড়ছে নাজুক। অনেকেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। তবে এই করোনা আর ডেঙ্গুর মাঝেও আরেকটি বড় আশঙ্কার বিষয় হলো শিক্ষা, যা করোনা আর ডেঙ্গুর মাঝে ঝুলে আছে অনিশ্চয়তায়। দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে দেড় বছরের বেশি সময় ধরে। সরকারি সিদ্ধান্তমতে, ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে পারে নিজেদের সিদ্ধান্তে। দেশের সব স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীকে টিকা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সরকার। প্রশ্ন জাগছে, দেশের এতগুলো স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সবাইকে একই সঙ্গে টিকার আওতায় আনা কি সম্ভব হবে? এটা কিন্তু একটা বিশাল কর্মযজ্ঞের ব্যাপার। এটা ঠিক যে করোনাকালে শিশুদের স্কুলে যেতে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। কিন্তু এই সময়টা দেড় বছরের বেশি হওয়া কি ঠিক হলো?
এই দ্রুত টিকা দেওয়ার কাজটা আরও আগেই করা উচিত ছিল। এখন অন্য সব সাধারণ মানুষকে পেছনে ফেলে তাঁদের প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া যেমন সময়সাপেক্ষ ও কিছুটা জটিল, তেমনি তাঁদের দ্বিতীয় ডোজ নিশ্চিত করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পুরোপুরি চালু করার ব্যাপারটা এখনো অনেকটাই ধোঁয়াশার মধ্যে আছে। বেশ কিছুদিন ধরেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন বিশেষজ্ঞরা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক প্রতীকী ক্লাস নিয়ে যাচ্ছেন। বিষয়টা শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হয়তো নজর কেড়েছে। তবে ঘুরেফিরে আবারও প্রশ্ন আসে, সবকিছুই যখন স্বাভাবিক গতিতে চলছে, তখন সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবনকে আরও অন্ধকারময় করে তোলা কি ইতিবাচক কিছু হচ্ছে? গত বছরের কোভিড পরিস্থিতি বিবেচনা করে এ বছর কেন বিশ্ববিদ্যালয়সহ উচ্চতর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো দ্রুত চালু করার কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়?
করোনার টিকা নিয়ে বয়সসীমার যে পরিবর্তন-পরিমার্জন চলছিল, তাতে শুরুতেই চিকিৎসক, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সাংবাদিকদের মতো সম্মুখ যোদ্ধাদের টিকার আওতায় আনার পাশাপাশি শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেওয়া উচিত ছিল। তাহলে হয়তো এরই মাঝে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া সম্ভব হতো। বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা গত দেড় বছরে কতটুকু পিছিয়ে গেল, তা নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। মাঝখানে ভার্চুয়ালি ক্লাসের ব্যবস্থা করা হলেও তাতে অনেক শিক্ষার্থীই সংযুক্ত হতে পারেনি। এত দীর্ঘ সময় শিক্ষার্থীরা বলতে গেলে শিক্ষাবিমুখই ছিল। বেশির ভাগ শিক্ষার্থী এ সময় অনলাইন গেমসে আসক্ত হয়ে পড়ে। মোবাইল বা কম্পিউটারের স্ক্রিন থেকে তাদের ফিরিয়ে আনতে প্রায় সব ঘরে মা-বাবার সব চেষ্টাই বিফলে গেছে। সেই সঙ্গে বিফলে গেছে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাকার্যক্রম। শিশুদের মাঝে দেখা দেয় মানসিক সমস্যা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও তাঁদের শিক্ষাজীবন শেষ করে কর্মজীবনের প্রতিযোগিতার কথা ভেবে অন্ধকারেই ডুবে আছেন। সব মিলিয়ে করোনা আমাদের কী শিক্ষা দিল, তা যেমন বড় চিন্তা, তেমনি করোনা আমাদের শিক্ষা যে কেড়ে নিল, তা-ও এক বড় দুশ্চিন্তা। দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিগগিরই আলোর মুখ দেখবে, লাঘব হবে শিক্ষা নিয়ে অভিভাবকদের দুশ্চিন্তা, সে আশাই করছি এখন। আর দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকায়, প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সুষ্ঠুভাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে চালু করতে হবে, যেন শ্রেণিকক্ষে এডিসসহ অন্য মশারও প্রাদুর্ভাব না থাকে।
লেখক: কবি ও সাংবাদিক
শান্তিতে নোবেল পুরস্কার একসময় ছিল আন্তর্জাতিক নৈতিকতার শীর্ষ সম্মান—যেখানে পুরস্কার পেতেন তাঁরা, যাঁদের জীবন ও কর্ম বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় এক অনন্য দৃষ্টান্ত। আজ সেই পুরস্কার অনেকটা হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজনৈতিক সৌজন্য উপহার। যা দেওয়া হয় যখন কারও হাত মলতে হয়, অহংকারে তেল দিতে হয় বা নিজের অ্যাজেন্ডা...
১২ আগস্ট ২০২৫গত বছর জুলাই মাস থেকে আমাদের আন্দোলনকারী তরুণ ছাত্রছাত্রীদের মুখে ও কিছু কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মুখে, বেশি বেশি করে কয়েকটি বাক্য উচ্চারিত হয়ে আসছিল। বাকিগুলোর মধ্যে প্রথম যে বাক্যটি সবার কানে বেধেছে, সেটা হলো ‘বন্দোবস্ত’।
১২ আগস্ট ২০২৫প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন সম্প্রতি রংপুরে অনুষ্ঠিত এক সভায় যে কথাগুলো বলেছেন, তা দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি অকপটে স্বীকার করেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা এখন নির্বাচন কমিশনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
১২ আগস্ট ২০২৫জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকার অবসানের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর পূর্ণ হয়েছে। এ উপলক্ষে কয়েক দিন ধরে পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশনের টক শোতে চলছে এক বছরের মূল্যায়ন।
১১ আগস্ট ২০২৫