বিরস
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর ‘কারাগারের রোজনামচা’ বইয়ে নানা বিষয়ে লিখেছেন। কারাগারে কত ধরনের মানুষ, কত বিচিত্র রকমের অপরাধে জড়িয়ে চার দেয়ালের ভেতর অবরুদ্ধ জীবন কাটান। একজন তথাকথিত ধার্মিকের কথা তিনি উল্লেখ করে ৪৩ পৃষ্ঠায় লিখেছেন:
দুপুর বেলা দেখা এক মওলানা সাহেবের সঙ্গে, কোরানে হাফেজ, তাঁর বাবাও খুব বড় পীর ছিলেন, কুমিল্লায় বাড়ি। হাজতিদের মধ্যে নামাজ পড়বার আগে বক্তৃতা করছেন, হাজতিরা বসে শুনছে। আমি দূরে দাঁড়াইয়া তাঁর বক্তৃতা শুনছি। তিনি বলছেন খুব জোরে ‘দরুদ শরীফ পড়। শয়তান দূর হয়ে যাবে। জোরে পড়। অনেকক্ষণ বক্তৃতা করলেন; সুন্দর চেহারা, অল্প বয়স, চমৎকার বলার কায়দা। তবে জামাটা খুব বড়। ঐটা দেখেই মনে সন্দেহ হলো।
একদম পা পর্যন্ত জামা। বোধ হয় ছয় সাত গজ হবে কমপক্ষে। তজবি হাতেই আছে। মাঝে মাঝে চক্ষু বুজে কথা বলেন।
জিজ্ঞাসা করলাম, এই মওলানা সাহেব কি মামলায় এসেছেন?’ আমাকে এক ‘পাহারা’ বললো, ‘জানেন না, রেপ কেস’; একটা ছাত্রীকে পড়াতো তার উপর পাশবিক অত্যাচার করেছে, মসজিদের ভিতর। মেয়েটার ১২/১৩ বৎসর বয়স, চিৎকার করে উঠলে লোক এসে দেখে ফেলে। তারপর ধরে আচ্ছামত মারধর করে। জেলে এসে কয়দিন তো হাসপাতালেই থাকতে হয়েছে। আমি বললাম, ‘হাজতে এসে ধর্ম প্রচার শুরু করেছে’। বেটা তো খুব ভণ্ড। জমাইছে তো বেশ।
সন্ধ্যার পর আমাদের তালাবন্ধ করে দিয়েছে। আমাদের উপরের কোঠায় সেই হাফেজ সাহেব থাকতেন। মগরবের পর চলল তার ‘মিলাদ’ অনেকক্ষণ, তারপর দরুদ, তারপর চলল কোরান তেলাওয়াৎ। তিনিও যে কোরানে হাফেজ সেইটাই দেখাতে ব্যস্ত আছেন, বলে আমার মনে হলো। মামলায় তার চার বৎসর সশ্রম কারাদণ্ড হয়। তিনি দরখাস্ত করেছিলেন ডিভিশন পাওয়ার জন্য। যদিও তার গ্রামের রিপোর্টে জানা গিয়েছিল তিনি সম্মানী ঘরের থেকে এসেছেন। তবে তাকে ডিভিশন দেওয়া হয় নাই, কারণ তিনি পাশবিক অত্যাচারের অপরাধে অপরাধী।
খ. করোনার জন্য দেড় বছরের মতো বন্ধ থাকার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলেছে। একজন স্কুল পরিদর্শক একটি স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে একজন ছাত্রকে জিজ্ঞেস করলেন: তোমাদের পড়াশোনো কেমন চলছে?
ছাত্রটির জবাব: মোটামুটি ভালো স্যার।
স্কুল পরিদর্শক: পড়াশোনার মধ্যে
কোন বিষয়টা তোমাদের কাছে সবচেয়ে মজার লাগে?
এক ছাত্রের জবাব: টিফিন টাইমে খেলা করতে।
স্কুল পরিদর্শক: বেশ তো, আর কোনটা সব থেকে খারাপ লাগে?
ছাত্র: পরীক্ষা।
স্কুল পরিদর্শক: তাই! তাহলে তোমরাই পরামর্শ দাও কীভাবে পরীক্ষাটাকে মজাদার করা যায়।
এই কথা শুনে ক্লাসের সবাই চুপ। শেষ বেঞ্চে বসা সায়েম হাত তুলল।
স্কুল পরিদর্শক: হ্যাঁ, বলো তুমি কী বলতে চাও!
সায়েম: স্যার, টেস্ট ক্রিকেট খেলা বোরিং লাগা শুরু করেছিল বলে টি-টোয়েন্টি এসে যেমন ক্রিকেটকে মজাদার করে দিয়েছে, পরীক্ষাটাকেও তেমনভাবে মজাদার করে দেওয়া যায়।
স্কুল পরিদর্শক: খুব সুন্দর, বলো বলো কী তোমার প্রস্তাব?
সায়েম: স্যার, আমার প্রস্তাবগুলো হলো:
১. পরীক্ষার তিন ঘণ্টার প্রথম পঁয়তাল্লিশ মিনিট হবে পাওয়ার প্লে, তখন স্যারেরা ক্লাসের বাইরে থাকবেন। ২. পাওয়ার প্লে শেষ হবার পরের পঁয়তাল্লিশ মিনিটে ওভার রেস্ট্রিকশন থাকবে, মানে একজন স্যার চারবারের বেশি পরীক্ষার রুমে ঢুকতে পারবেন না। ৩. আর যদি ভুল করে ঢুকে পড়েন, তাহলে ফ্রি হিট হবে, অর্থাৎ একটা প্রশ্নের উত্তর তাঁকে সবাইকে বলে দিতে হবে। ৪. এ ছাড়াও স্যার প্রতি এক ঘণ্টার শেষে পাঁচ মিনিট করে স্ট্র্যাটেজিক টাইম আউট হবে, যখন ছাত্ররা নিজেদের প্রয়োজনমতো আলোচনা করে নিতে পারে।
পরিদর্শক আর কিছু না বলে নীরবে চলে গেলেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর ‘কারাগারের রোজনামচা’ বইয়ে নানা বিষয়ে লিখেছেন। কারাগারে কত ধরনের মানুষ, কত বিচিত্র রকমের অপরাধে জড়িয়ে চার দেয়ালের ভেতর অবরুদ্ধ জীবন কাটান। একজন তথাকথিত ধার্মিকের কথা তিনি উল্লেখ করে ৪৩ পৃষ্ঠায় লিখেছেন:
দুপুর বেলা দেখা এক মওলানা সাহেবের সঙ্গে, কোরানে হাফেজ, তাঁর বাবাও খুব বড় পীর ছিলেন, কুমিল্লায় বাড়ি। হাজতিদের মধ্যে নামাজ পড়বার আগে বক্তৃতা করছেন, হাজতিরা বসে শুনছে। আমি দূরে দাঁড়াইয়া তাঁর বক্তৃতা শুনছি। তিনি বলছেন খুব জোরে ‘দরুদ শরীফ পড়। শয়তান দূর হয়ে যাবে। জোরে পড়। অনেকক্ষণ বক্তৃতা করলেন; সুন্দর চেহারা, অল্প বয়স, চমৎকার বলার কায়দা। তবে জামাটা খুব বড়। ঐটা দেখেই মনে সন্দেহ হলো।
একদম পা পর্যন্ত জামা। বোধ হয় ছয় সাত গজ হবে কমপক্ষে। তজবি হাতেই আছে। মাঝে মাঝে চক্ষু বুজে কথা বলেন।
জিজ্ঞাসা করলাম, এই মওলানা সাহেব কি মামলায় এসেছেন?’ আমাকে এক ‘পাহারা’ বললো, ‘জানেন না, রেপ কেস’; একটা ছাত্রীকে পড়াতো তার উপর পাশবিক অত্যাচার করেছে, মসজিদের ভিতর। মেয়েটার ১২/১৩ বৎসর বয়স, চিৎকার করে উঠলে লোক এসে দেখে ফেলে। তারপর ধরে আচ্ছামত মারধর করে। জেলে এসে কয়দিন তো হাসপাতালেই থাকতে হয়েছে। আমি বললাম, ‘হাজতে এসে ধর্ম প্রচার শুরু করেছে’। বেটা তো খুব ভণ্ড। জমাইছে তো বেশ।
সন্ধ্যার পর আমাদের তালাবন্ধ করে দিয়েছে। আমাদের উপরের কোঠায় সেই হাফেজ সাহেব থাকতেন। মগরবের পর চলল তার ‘মিলাদ’ অনেকক্ষণ, তারপর দরুদ, তারপর চলল কোরান তেলাওয়াৎ। তিনিও যে কোরানে হাফেজ সেইটাই দেখাতে ব্যস্ত আছেন, বলে আমার মনে হলো। মামলায় তার চার বৎসর সশ্রম কারাদণ্ড হয়। তিনি দরখাস্ত করেছিলেন ডিভিশন পাওয়ার জন্য। যদিও তার গ্রামের রিপোর্টে জানা গিয়েছিল তিনি সম্মানী ঘরের থেকে এসেছেন। তবে তাকে ডিভিশন দেওয়া হয় নাই, কারণ তিনি পাশবিক অত্যাচারের অপরাধে অপরাধী।
খ. করোনার জন্য দেড় বছরের মতো বন্ধ থাকার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলেছে। একজন স্কুল পরিদর্শক একটি স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে একজন ছাত্রকে জিজ্ঞেস করলেন: তোমাদের পড়াশোনো কেমন চলছে?
ছাত্রটির জবাব: মোটামুটি ভালো স্যার।
স্কুল পরিদর্শক: পড়াশোনার মধ্যে
কোন বিষয়টা তোমাদের কাছে সবচেয়ে মজার লাগে?
এক ছাত্রের জবাব: টিফিন টাইমে খেলা করতে।
স্কুল পরিদর্শক: বেশ তো, আর কোনটা সব থেকে খারাপ লাগে?
ছাত্র: পরীক্ষা।
স্কুল পরিদর্শক: তাই! তাহলে তোমরাই পরামর্শ দাও কীভাবে পরীক্ষাটাকে মজাদার করা যায়।
এই কথা শুনে ক্লাসের সবাই চুপ। শেষ বেঞ্চে বসা সায়েম হাত তুলল।
স্কুল পরিদর্শক: হ্যাঁ, বলো তুমি কী বলতে চাও!
সায়েম: স্যার, টেস্ট ক্রিকেট খেলা বোরিং লাগা শুরু করেছিল বলে টি-টোয়েন্টি এসে যেমন ক্রিকেটকে মজাদার করে দিয়েছে, পরীক্ষাটাকেও তেমনভাবে মজাদার করে দেওয়া যায়।
স্কুল পরিদর্শক: খুব সুন্দর, বলো বলো কী তোমার প্রস্তাব?
সায়েম: স্যার, আমার প্রস্তাবগুলো হলো:
১. পরীক্ষার তিন ঘণ্টার প্রথম পঁয়তাল্লিশ মিনিট হবে পাওয়ার প্লে, তখন স্যারেরা ক্লাসের বাইরে থাকবেন। ২. পাওয়ার প্লে শেষ হবার পরের পঁয়তাল্লিশ মিনিটে ওভার রেস্ট্রিকশন থাকবে, মানে একজন স্যার চারবারের বেশি পরীক্ষার রুমে ঢুকতে পারবেন না। ৩. আর যদি ভুল করে ঢুকে পড়েন, তাহলে ফ্রি হিট হবে, অর্থাৎ একটা প্রশ্নের উত্তর তাঁকে সবাইকে বলে দিতে হবে। ৪. এ ছাড়াও স্যার প্রতি এক ঘণ্টার শেষে পাঁচ মিনিট করে স্ট্র্যাটেজিক টাইম আউট হবে, যখন ছাত্ররা নিজেদের প্রয়োজনমতো আলোচনা করে নিতে পারে।
পরিদর্শক আর কিছু না বলে নীরবে চলে গেলেন।
শান্তিতে নোবেল পুরস্কার একসময় ছিল আন্তর্জাতিক নৈতিকতার শীর্ষ সম্মান—যেখানে পুরস্কার পেতেন তাঁরা, যাঁদের জীবন ও কর্ম বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় এক অনন্য দৃষ্টান্ত। আজ সেই পুরস্কার অনেকটা হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজনৈতিক সৌজন্য উপহার। যা দেওয়া হয় যখন কারও হাত মলতে হয়, অহংকারে তেল দিতে হয় বা নিজের অ্যাজেন্ডা...
১২ আগস্ট ২০২৫গত বছর জুলাই মাস থেকে আমাদের আন্দোলনকারী তরুণ ছাত্রছাত্রীদের মুখে ও কিছু কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মুখে, বেশি বেশি করে কয়েকটি বাক্য উচ্চারিত হয়ে আসছিল। বাকিগুলোর মধ্যে প্রথম যে বাক্যটি সবার কানে বেধেছে, সেটা হলো ‘বন্দোবস্ত’।
১২ আগস্ট ২০২৫প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন সম্প্রতি রংপুরে অনুষ্ঠিত এক সভায় যে কথাগুলো বলেছেন, তা দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি অকপটে স্বীকার করেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা এখন নির্বাচন কমিশনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
১২ আগস্ট ২০২৫জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকার অবসানের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর পূর্ণ হয়েছে। এ উপলক্ষে কয়েক দিন ধরে পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশনের টক শোতে চলছে এক বছরের মূল্যায়ন।
১১ আগস্ট ২০২৫