জাহীদ রেজা নূর, ঢাকা
বোন ফাতেমা জিন্নাহকে নিয়ে ১৯৪৮ সালের ১৯ মার্চ ঢাকায় এসে পৌঁছালেন মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ। জনতা তাঁকে বরণ করে নিল। এরই মধ্যে ১৫ মার্চ প্রাদেশিক সরকারের সঙ্গে ২১ মার্চ ছিল রেসকোর্স ময়দানে তাঁর জনসভা। সেখানে নামল মানুষের ঢল। পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতাকে একনজর দেখতে আসা অনেক মানুষ জড়ো হয়েছিলেন রাজপথে।
জিন্নাহ যখন আসেন, তখন পূর্ববঙ্গে মুসলিম লীগ সরকার নাজুক অবস্থার মধ্যে ছিল। মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকায় এসেছিলেন লীগের পায়ের নিচে মাটি শক্ত করতে। তাঁকে মুসলিম লীগের নেতারা বুঝিয়েছিলেন, রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন পূর্ব বাংলার আপামর সাধারণ মানুষের নয়, এটা গুটিকয় স্বার্থান্বেষী মানুষের ষড়যন্ত্র।
২১ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানের জনসমুদ্রে ভাষণ দিলেন জিন্নাহ। তিনি তিনটি বিষয়ে জোর দিলেন। এক, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা, দুই. কমিউনিস্ট ও বিদেশি চরদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র রক্ষার প্রয়োজনে সতর্কতা গ্রহণ করতে হবে। তিন. মুসলিম লীগে যোগ দিয়ে জাতির খেদমতে যুক্ত হতে হবে।
নিরাশ হলো ভাষণ শুনতে আসা মানুষ। জিন্নাহর ভাষণে স্পষ্ট হলো, তিনি আসলে মুসলিম লীগবিরোধী যে কারও ক্ষেত্রেই দমন-পীড়নের স্বাধীনতা দিতে চাইছেন। অর্থাৎ সরকারের সমালোচনাকারী সকলেই বুঝি রাষ্ট্রবিরোধী।
জিন্নাহর ভাষণের পরিপ্রেক্ষিতে তমদ্দুন মজলিস ২২ মার্চ যে বিবৃতি দেয়, তা ছিল তাদের ‘কায়েদে আজমের’ প্রতি প্রশস্তি ভিন্ন আর কিছু নয়। রুখে দাঁড়িয়েছিলেন শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক। তিনি ২৩ মার্চ দেওয়া এক বিবৃতিতে জিন্নাহর দেওয়া ২১ মার্চের বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন। দৈনিক আজাদ শেরে বাংলার সমালোচনায় মুখর হয়ে শিরোনাম করে, ‘হক ছাহেবের হুংকার, কায়েদে আজমের প্রতি জঘন্য আক্রমণ’।
২৪ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে শিক্ষার্থীরা কোন ভূমিকা নেবে, তা আগে থেকে ঠিক করেনি। তখন পর্যন্ত জিন্নাহর প্রতি সাধারণ মানুষের ছিল অন্ধ ভক্তি। তাই তাঁর কথার প্রতিবাদ করা ছিল কঠিন। তারপরও কার্জন হলে অনুষ্ঠিত সমাবর্তনে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ একই ভাষা উচ্চারণ করলে ছাত্রদের কয়েকজন ‘নো নো’ বলে প্রতিবাদ জানান। জিন্নাহ সাহেব কিছুক্ষণ চুপ থেকে তাঁর বক্তব্য চালিয়ে যান।
সেদিন সন্ধ্যায় জিন্নাহ সাহেব সংগ্রাম পরিষদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শামসুল হক, কামরুদ্দীন আহমদ, আবুল কাশেম, মোহাম্মদ তোয়াহা, অলি আহাদ প্রমুখ। জিন্নাহর সঙ্গে তাঁদের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। সঙ্গে করে নিয়ে আসা স্মারকলিপিটিও তাঁরা গভর্নর জেনারেল জিন্নাহকে দিয়ে আসেন।
এরপর জিন্নাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ও ডাকসু নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে অমুসলিম ছাত্র থাকায় জিন্নাহ আর মুখ খোলেননি। তিনি শুধু মুসলমান ছাত্রদের সঙ্গেই বৈঠক করতে চেয়েছিলেন। তাহলে কি সে সময় জিন্নাহ তাঁর অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গড়ার অঙ্গীকার থেকে সরে এসেছিলেন?
বোন ফাতেমা জিন্নাহকে নিয়ে ১৯৪৮ সালের ১৯ মার্চ ঢাকায় এসে পৌঁছালেন মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ। জনতা তাঁকে বরণ করে নিল। এরই মধ্যে ১৫ মার্চ প্রাদেশিক সরকারের সঙ্গে ২১ মার্চ ছিল রেসকোর্স ময়দানে তাঁর জনসভা। সেখানে নামল মানুষের ঢল। পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতাকে একনজর দেখতে আসা অনেক মানুষ জড়ো হয়েছিলেন রাজপথে।
জিন্নাহ যখন আসেন, তখন পূর্ববঙ্গে মুসলিম লীগ সরকার নাজুক অবস্থার মধ্যে ছিল। মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকায় এসেছিলেন লীগের পায়ের নিচে মাটি শক্ত করতে। তাঁকে মুসলিম লীগের নেতারা বুঝিয়েছিলেন, রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন পূর্ব বাংলার আপামর সাধারণ মানুষের নয়, এটা গুটিকয় স্বার্থান্বেষী মানুষের ষড়যন্ত্র।
২১ মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানের জনসমুদ্রে ভাষণ দিলেন জিন্নাহ। তিনি তিনটি বিষয়ে জোর দিলেন। এক, উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা, দুই. কমিউনিস্ট ও বিদেশি চরদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্র রক্ষার প্রয়োজনে সতর্কতা গ্রহণ করতে হবে। তিন. মুসলিম লীগে যোগ দিয়ে জাতির খেদমতে যুক্ত হতে হবে।
নিরাশ হলো ভাষণ শুনতে আসা মানুষ। জিন্নাহর ভাষণে স্পষ্ট হলো, তিনি আসলে মুসলিম লীগবিরোধী যে কারও ক্ষেত্রেই দমন-পীড়নের স্বাধীনতা দিতে চাইছেন। অর্থাৎ সরকারের সমালোচনাকারী সকলেই বুঝি রাষ্ট্রবিরোধী।
জিন্নাহর ভাষণের পরিপ্রেক্ষিতে তমদ্দুন মজলিস ২২ মার্চ যে বিবৃতি দেয়, তা ছিল তাদের ‘কায়েদে আজমের’ প্রতি প্রশস্তি ভিন্ন আর কিছু নয়। রুখে দাঁড়িয়েছিলেন শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক। তিনি ২৩ মার্চ দেওয়া এক বিবৃতিতে জিন্নাহর দেওয়া ২১ মার্চের বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন। দৈনিক আজাদ শেরে বাংলার সমালোচনায় মুখর হয়ে শিরোনাম করে, ‘হক ছাহেবের হুংকার, কায়েদে আজমের প্রতি জঘন্য আক্রমণ’।
২৪ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে শিক্ষার্থীরা কোন ভূমিকা নেবে, তা আগে থেকে ঠিক করেনি। তখন পর্যন্ত জিন্নাহর প্রতি সাধারণ মানুষের ছিল অন্ধ ভক্তি। তাই তাঁর কথার প্রতিবাদ করা ছিল কঠিন। তারপরও কার্জন হলে অনুষ্ঠিত সমাবর্তনে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ একই ভাষা উচ্চারণ করলে ছাত্রদের কয়েকজন ‘নো নো’ বলে প্রতিবাদ জানান। জিন্নাহ সাহেব কিছুক্ষণ চুপ থেকে তাঁর বক্তব্য চালিয়ে যান।
সেদিন সন্ধ্যায় জিন্নাহ সাহেব সংগ্রাম পরিষদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শামসুল হক, কামরুদ্দীন আহমদ, আবুল কাশেম, মোহাম্মদ তোয়াহা, অলি আহাদ প্রমুখ। জিন্নাহর সঙ্গে তাঁদের উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। সঙ্গে করে নিয়ে আসা স্মারকলিপিটিও তাঁরা গভর্নর জেনারেল জিন্নাহকে দিয়ে আসেন।
এরপর জিন্নাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল ও ডাকসু নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে অমুসলিম ছাত্র থাকায় জিন্নাহ আর মুখ খোলেননি। তিনি শুধু মুসলমান ছাত্রদের সঙ্গেই বৈঠক করতে চেয়েছিলেন। তাহলে কি সে সময় জিন্নাহ তাঁর অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গড়ার অঙ্গীকার থেকে সরে এসেছিলেন?
শান্তিতে নোবেল পুরস্কার একসময় ছিল আন্তর্জাতিক নৈতিকতার শীর্ষ সম্মান—যেখানে পুরস্কার পেতেন তাঁরা, যাঁদের জীবন ও কর্ম বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় এক অনন্য দৃষ্টান্ত। আজ সেই পুরস্কার অনেকটা হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজনৈতিক সৌজন্য উপহার। যা দেওয়া হয় যখন কারও হাত মলতে হয়, অহংকারে তেল দিতে হয় বা নিজের অ্যাজেন্ডা...
১২ আগস্ট ২০২৫গত বছর জুলাই মাস থেকে আমাদের আন্দোলনকারী তরুণ ছাত্রছাত্রীদের মুখে ও কিছু কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মুখে, বেশি বেশি করে কয়েকটি বাক্য উচ্চারিত হয়ে আসছিল। বাকিগুলোর মধ্যে প্রথম যে বাক্যটি সবার কানে বেধেছে, সেটা হলো ‘বন্দোবস্ত’।
১২ আগস্ট ২০২৫প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন সম্প্রতি রংপুরে অনুষ্ঠিত এক সভায় যে কথাগুলো বলেছেন, তা দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি অকপটে স্বীকার করেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা এখন নির্বাচন কমিশনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
১২ আগস্ট ২০২৫জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকার অবসানের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর পূর্ণ হয়েছে। এ উপলক্ষে কয়েক দিন ধরে পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশনের টক শোতে চলছে এক বছরের মূল্যায়ন।
১১ আগস্ট ২০২৫