মামুনুর রশীদ
আমরা বিভিন্ন সভা-সমিতি, লেখায় বারবার বলে আসছি ভাষা আন্দোলন, ষাটের গণ-আন্দোলন, উনসত্তরের অভ্যুত্থান থেকে মুক্তিযুদ্ধে সংস্কৃতিকর্মীদের বড় অবদান রয়েছে। এ সময় ছাত্র-জনতার পাশাপাশি কখনো সামনের সারিতে থেকেছেন সংস্কৃতিকর্মীরা। আশির দশকের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে তো সংস্কৃতিকর্মীরা একেবারে সম্মুখসারির যোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধের সময় তো স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের সংগীত, নাটক, কথিকা, সংবাদ ইত্যাদি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সংস্কৃতিকর্মীদের আশা ছিল দেশ স্বাধীন হলে বা আশির দশকের স্বৈরাচারের পতনের পর দেশে বেশ কিছু সুদূরপ্রসারী সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড হবে। কিন্তু তেমন কোনো রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ দেখা গেল না। দলীয় সংকীর্ণতায় ক্ষমতার লড়াইয়ে ব্যস্ত থাকল রাজনীতি। কোনো ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগও নেওয়া সম্ভব হলো না। যাঁরা সার্বক্ষণিকভাবে শিল্প-সাহিত্যে নিয়োজিত, তাঁদের জন্য কিছুই করল না রাষ্ট্র। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যেমন সব সময়ই রাষ্ট্রের কিছু অর্থ থাকে সংস্কৃতি কর্মের জন্য, তারও কোনো ব্যবস্থা নেই। বহু বছর আগে পশ্চিমা বিশ্ব এবং ভারতীয় বিদ্বজ্জন উপলব্ধি করেছিল নাটকে লোকশিক্ষা হয়। সেই চিন্তা থেকেই কিন্তু কিছু দেশে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় নেই। শিল্প-সাহিত্য সম্পূর্ণভাবে শিক্ষার অঙ্গ। কারণ, মন্ত্রণালয় থাকা মানেই নিয়ন্ত্রণ করা। আমাদের মতো দেশে এ কাজটি করে থাকে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এবং সুযোগ পেলেই স্বজনপ্রীতিতে মেতে ওঠে। বিদেশে সাংস্কৃতিক দল পাঠানোর ক্ষেত্রে, পদক বা অনুদান দেওয়ার ক্ষেত্রে নজিরবিহীন ঘটনার অবতারণা হয়। মন্ত্রণালয় হিসেবে যেহেতু বাজেটে কম বরাদ্দ, তাই মন্ত্রী, সচিব ও আমলারা এখানে আসতে চান না। তাই বিদেশে যাওয়ার ব্যাপারে ঝাঁপিয়ে পড়ে কিছুটা পুষিয়ে নিতে চান।
কয়েক দশক ধরে ঢাকার বাইরে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড একেবারেই ঝিমিয়ে পড়েছে। পৃষ্ঠপোষকতার অভাব তীব্র হয়েছে। এ ক্ষেত্রে শিল্পকলা একাডেমি এ কয় বছরই সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড কবজা করে ফেলেছে। একশ্রেণির শিল্পীর আনুকূল্য দিয়ে দিবসভিত্তিক কর্মকাণ্ড করে দায়িত্ব সারছে। কোনো ধরনের সৃজনশীল কাজকে একেবারেই উৎসাহিত করছে না।
এবারে আসি গত দুই বছরের অধিক সময়ের কর্মকাণ্ডে। অধিকাংশ সময়ই কর্মকাণ্ড বন্ধ। মাঝে একবার খুলে দেওয়া হয়েছিল। সেখানে হল ভাড়াটি মওকুফ করা হয়েছিল। আর কোনো কাজে অর্থ বরাদ্দ হয়নি। সামান্য কিছু টাকা দেওয়া হয়েছিল মুষ্টিমেয় শিল্পীর, যে টাকা দিয়ে ১৫ দিনেরও কারও সংসার চলে না, বাড়িভাড়া অন্যান্য খরচ সংকুলান তো দূরের কথা। করোনাকালে সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাই একমাত্র ভালো আছেন। অফিস করতে হয় না। মাস গেলে বেতন, বিশেষ সময়ে বোনাস এবং কিছু আমলা-কর্মচারীর দুর্নীতিতে লাখ থেকে কোটি টাকার ব্যবস্থা আছে। তাঁদের পক্ষে একজন শিল্পী-সাহিত্যিকের অবস্থা বোঝার কোনো সদিচ্ছাই নেই। এঁরা নিত্যই ব্যস্ত থাকেন সরকার তোষণে।
আমাদের দেশের প্রকাশকদের একটা বড় উৎসব একুশের বইমেলা। উৎসবের সঙ্গে অর্থ সমাগম হয়। কারণ, বাঙালি মুসলমান নিয়মিত বই কেনে না, একুশের বইমেলায় তাদের একটা কেনার সময়।
সময়মতো ও পরিপূর্ণভাবে বইমেলা হতে পারল না। লকডাউনে দোকানপাট বন্ধ। লগ্নিকারক প্রকাশকেরা দোকান ভাড়া, কর্মচারীর বেতন এবং বকেয়া পাওনা দিয়ে কেউ কেউ সর্বস্বান্ত। বিক্রি একেবারেই নেই। এমতাবস্থায় অনেক প্রকাশক দোকানপাট-ব্যবসা বন্ধ করে চলে গেছেন। এই একটি বিষয়ে সরকারের কোনো মাথাব্যথা নেই। সরকার একান্ত স্বজনপ্রীতির নিরিখে কিছু বই-পুস্তক কিনে থাকে। কিন্তু মননশীল ও সৃজনশীল বইয়ের ব্যাপারে কোনো উৎসাহ নেই। আমলাদের বই-পুস্তকেই তাদের আগ্রহ বেশি। সেখানে একধরনের নোংরা প্রতিযোগিতা চলে। পাঠাগারের বিষয়ে একটা মৃদু উৎসাহ থাকলেও তা স্বজনপ্রীতির কারণে সব উদ্যোগই ভেস্তে যায়। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ দিকে কলকাতার ইংরেজরা দুটি ছাপার যন্ত্র নিয়ে আসে। তারপর ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমেই সেখানে বহু মুদ্রণযন্ত্র চলে আসে এবং ছাপার বই মানুষের মনোজগতের একটা বিপ্লব ঘটিয়ে দেয়। সারা পৃথিবীর সব সংবাদ, সাহিত্য কলকাতায় এসে পৌঁছায়। ঘুমন্ত একটা সমাজকে জাগিয়ে তোলার জন্য বইয়ের যে ভূমিকা, তা কল্পনারও অতীত। সেই প্রকাশনা শিল্প যখন বিপন্ন, তখন সরকারের কোনো উদ্যোগ সেখানে দেখা গেল না।
শিল্প-সাহিত্য-চিত্রকলা এসবের ত্বরিত কোনো ফলাফল পাওয়া যায় না। এই লগ্নি সুদীর্ঘ দিনের জন্য। সুদীর্ঘ দিন অপেক্ষা করতে হয় সেই ফলাফলের জন্য। আবার শাসকগোষ্ঠী যদি পাঠবিমুখ হয়, শিক্ষা গ্রহণের সময় থেকেই যদি অধিকাংশের পেশিশক্তির প্রতি আসক্তি এসে পড়ে, তাহলে বইয়ের কদর তাদের কাছে থাকবে কী করে?
এবারে আসি সাম্প্রতিক বিষয়ের ওপর। কথা ছিল সাংস্কৃতিক বিষয়গুলোতে সরকার প্রণোদনা দেবে; বিশেষ করে নাট্যদলগুলোর মধ্যে প্রণোদনা দিয়ে নাটকের জন্য হল ভাড়া ও প্রণোদনা দেওয়া হবে। ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে হলগুলো খুলে দেওয়া হবে প্রণোদনাসহ। হল বরাদ্দ দেওয়া হলো বটে, কিন্তু প্রণোদনার খবর নেই। মন্ত্রী বললেন, ‘আপনারা নাটক করুন, আমরা প্রণোদনা দেব।’ তার মানে যে দুটি দল ১৭ সেপ্টেম্বর নাটক করবে, তাদের দেওয়া হবে। কিন্তু সারা দেশ? সারা দেশের বিষয়ে কোনো কথা নেই। এমতাবস্থায় আমরা কেন করব? বিষয়টি হলো, যত দিন পর্যন্ত সবার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তত দিন আমরা কেন করব? এ ধরনের খণ্ডিত প্রস্তাবের প্রতি আনুগত্য দেখাতে আমরা অভ্যস্ত নই।
গত দুই-আড়াই বছরে সংগীতশিল্পীরা কোনো উন্মুক্ত স্থানে গান গাইতে পারেননি। বাস্তব সমস্যা। কিন্তু কী করলে এই সমস্যার সমাধান করা যায় সংগীতপিপাসুদের জন্য কী ধরনের আয়োজন করা যায়, তা নিয়ে ভাবনারও প্রয়োজন। ক্রিকেট যদি দর্শকহীন স্টেডিয়ামে হতে পারে, তাহলে কনসার্ট নয় কেন? বর্তমানে সব বিনোদনের কেন্দ্র হয়ে গেছে ক্রিকেট। বিপুল অর্থ ব্যয় শুধু একটি ট্র্যাকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। অন্যদের কী হবে?
সবশেষে আমার প্রশ্ন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আমলা-কর্মচারী, শিল্পকলা একাডেমির কর্তারা কী নিয়ে ব্যস্ত থাকেন রাত-দিন? তাঁরা সংস্কৃতিকর্মীদের সঙ্গে একটা অর্থবহ সংলাপও করেন না। তাঁদের কাজটা কী?
লেখক: নাট্যব্যক্তিত্ব
আমরা বিভিন্ন সভা-সমিতি, লেখায় বারবার বলে আসছি ভাষা আন্দোলন, ষাটের গণ-আন্দোলন, উনসত্তরের অভ্যুত্থান থেকে মুক্তিযুদ্ধে সংস্কৃতিকর্মীদের বড় অবদান রয়েছে। এ সময় ছাত্র-জনতার পাশাপাশি কখনো সামনের সারিতে থেকেছেন সংস্কৃতিকর্মীরা। আশির দশকের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে তো সংস্কৃতিকর্মীরা একেবারে সম্মুখসারির যোদ্ধা। মুক্তিযুদ্ধের সময় তো স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রের সংগীত, নাটক, কথিকা, সংবাদ ইত্যাদি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। সংস্কৃতিকর্মীদের আশা ছিল দেশ স্বাধীন হলে বা আশির দশকের স্বৈরাচারের পতনের পর দেশে বেশ কিছু সুদূরপ্রসারী সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড হবে। কিন্তু তেমন কোনো রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ দেখা গেল না। দলীয় সংকীর্ণতায় ক্ষমতার লড়াইয়ে ব্যস্ত থাকল রাজনীতি। কোনো ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগও নেওয়া সম্ভব হলো না। যাঁরা সার্বক্ষণিকভাবে শিল্প-সাহিত্যে নিয়োজিত, তাঁদের জন্য কিছুই করল না রাষ্ট্র। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে যেমন সব সময়ই রাষ্ট্রের কিছু অর্থ থাকে সংস্কৃতি কর্মের জন্য, তারও কোনো ব্যবস্থা নেই। বহু বছর আগে পশ্চিমা বিশ্ব এবং ভারতীয় বিদ্বজ্জন উপলব্ধি করেছিল নাটকে লোকশিক্ষা হয়। সেই চিন্তা থেকেই কিন্তু কিছু দেশে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় নেই। শিল্প-সাহিত্য সম্পূর্ণভাবে শিক্ষার অঙ্গ। কারণ, মন্ত্রণালয় থাকা মানেই নিয়ন্ত্রণ করা। আমাদের মতো দেশে এ কাজটি করে থাকে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এবং সুযোগ পেলেই স্বজনপ্রীতিতে মেতে ওঠে। বিদেশে সাংস্কৃতিক দল পাঠানোর ক্ষেত্রে, পদক বা অনুদান দেওয়ার ক্ষেত্রে নজিরবিহীন ঘটনার অবতারণা হয়। মন্ত্রণালয় হিসেবে যেহেতু বাজেটে কম বরাদ্দ, তাই মন্ত্রী, সচিব ও আমলারা এখানে আসতে চান না। তাই বিদেশে যাওয়ার ব্যাপারে ঝাঁপিয়ে পড়ে কিছুটা পুষিয়ে নিতে চান।
কয়েক দশক ধরে ঢাকার বাইরে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড একেবারেই ঝিমিয়ে পড়েছে। পৃষ্ঠপোষকতার অভাব তীব্র হয়েছে। এ ক্ষেত্রে শিল্পকলা একাডেমি এ কয় বছরই সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড কবজা করে ফেলেছে। একশ্রেণির শিল্পীর আনুকূল্য দিয়ে দিবসভিত্তিক কর্মকাণ্ড করে দায়িত্ব সারছে। কোনো ধরনের সৃজনশীল কাজকে একেবারেই উৎসাহিত করছে না।
এবারে আসি গত দুই বছরের অধিক সময়ের কর্মকাণ্ডে। অধিকাংশ সময়ই কর্মকাণ্ড বন্ধ। মাঝে একবার খুলে দেওয়া হয়েছিল। সেখানে হল ভাড়াটি মওকুফ করা হয়েছিল। আর কোনো কাজে অর্থ বরাদ্দ হয়নি। সামান্য কিছু টাকা দেওয়া হয়েছিল মুষ্টিমেয় শিল্পীর, যে টাকা দিয়ে ১৫ দিনেরও কারও সংসার চলে না, বাড়িভাড়া অন্যান্য খরচ সংকুলান তো দূরের কথা। করোনাকালে সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাই একমাত্র ভালো আছেন। অফিস করতে হয় না। মাস গেলে বেতন, বিশেষ সময়ে বোনাস এবং কিছু আমলা-কর্মচারীর দুর্নীতিতে লাখ থেকে কোটি টাকার ব্যবস্থা আছে। তাঁদের পক্ষে একজন শিল্পী-সাহিত্যিকের অবস্থা বোঝার কোনো সদিচ্ছাই নেই। এঁরা নিত্যই ব্যস্ত থাকেন সরকার তোষণে।
আমাদের দেশের প্রকাশকদের একটা বড় উৎসব একুশের বইমেলা। উৎসবের সঙ্গে অর্থ সমাগম হয়। কারণ, বাঙালি মুসলমান নিয়মিত বই কেনে না, একুশের বইমেলায় তাদের একটা কেনার সময়।
সময়মতো ও পরিপূর্ণভাবে বইমেলা হতে পারল না। লকডাউনে দোকানপাট বন্ধ। লগ্নিকারক প্রকাশকেরা দোকান ভাড়া, কর্মচারীর বেতন এবং বকেয়া পাওনা দিয়ে কেউ কেউ সর্বস্বান্ত। বিক্রি একেবারেই নেই। এমতাবস্থায় অনেক প্রকাশক দোকানপাট-ব্যবসা বন্ধ করে চলে গেছেন। এই একটি বিষয়ে সরকারের কোনো মাথাব্যথা নেই। সরকার একান্ত স্বজনপ্রীতির নিরিখে কিছু বই-পুস্তক কিনে থাকে। কিন্তু মননশীল ও সৃজনশীল বইয়ের ব্যাপারে কোনো উৎসাহ নেই। আমলাদের বই-পুস্তকেই তাদের আগ্রহ বেশি। সেখানে একধরনের নোংরা প্রতিযোগিতা চলে। পাঠাগারের বিষয়ে একটা মৃদু উৎসাহ থাকলেও তা স্বজনপ্রীতির কারণে সব উদ্যোগই ভেস্তে যায়। অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ দিকে কলকাতার ইংরেজরা দুটি ছাপার যন্ত্র নিয়ে আসে। তারপর ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমেই সেখানে বহু মুদ্রণযন্ত্র চলে আসে এবং ছাপার বই মানুষের মনোজগতের একটা বিপ্লব ঘটিয়ে দেয়। সারা পৃথিবীর সব সংবাদ, সাহিত্য কলকাতায় এসে পৌঁছায়। ঘুমন্ত একটা সমাজকে জাগিয়ে তোলার জন্য বইয়ের যে ভূমিকা, তা কল্পনারও অতীত। সেই প্রকাশনা শিল্প যখন বিপন্ন, তখন সরকারের কোনো উদ্যোগ সেখানে দেখা গেল না।
শিল্প-সাহিত্য-চিত্রকলা এসবের ত্বরিত কোনো ফলাফল পাওয়া যায় না। এই লগ্নি সুদীর্ঘ দিনের জন্য। সুদীর্ঘ দিন অপেক্ষা করতে হয় সেই ফলাফলের জন্য। আবার শাসকগোষ্ঠী যদি পাঠবিমুখ হয়, শিক্ষা গ্রহণের সময় থেকেই যদি অধিকাংশের পেশিশক্তির প্রতি আসক্তি এসে পড়ে, তাহলে বইয়ের কদর তাদের কাছে থাকবে কী করে?
এবারে আসি সাম্প্রতিক বিষয়ের ওপর। কথা ছিল সাংস্কৃতিক বিষয়গুলোতে সরকার প্রণোদনা দেবে; বিশেষ করে নাট্যদলগুলোর মধ্যে প্রণোদনা দিয়ে নাটকের জন্য হল ভাড়া ও প্রণোদনা দেওয়া হবে। ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে হলগুলো খুলে দেওয়া হবে প্রণোদনাসহ। হল বরাদ্দ দেওয়া হলো বটে, কিন্তু প্রণোদনার খবর নেই। মন্ত্রী বললেন, ‘আপনারা নাটক করুন, আমরা প্রণোদনা দেব।’ তার মানে যে দুটি দল ১৭ সেপ্টেম্বর নাটক করবে, তাদের দেওয়া হবে। কিন্তু সারা দেশ? সারা দেশের বিষয়ে কোনো কথা নেই। এমতাবস্থায় আমরা কেন করব? বিষয়টি হলো, যত দিন পর্যন্ত সবার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তত দিন আমরা কেন করব? এ ধরনের খণ্ডিত প্রস্তাবের প্রতি আনুগত্য দেখাতে আমরা অভ্যস্ত নই।
গত দুই-আড়াই বছরে সংগীতশিল্পীরা কোনো উন্মুক্ত স্থানে গান গাইতে পারেননি। বাস্তব সমস্যা। কিন্তু কী করলে এই সমস্যার সমাধান করা যায় সংগীতপিপাসুদের জন্য কী ধরনের আয়োজন করা যায়, তা নিয়ে ভাবনারও প্রয়োজন। ক্রিকেট যদি দর্শকহীন স্টেডিয়ামে হতে পারে, তাহলে কনসার্ট নয় কেন? বর্তমানে সব বিনোদনের কেন্দ্র হয়ে গেছে ক্রিকেট। বিপুল অর্থ ব্যয় শুধু একটি ট্র্যাকে উৎসাহিত করা হচ্ছে। অন্যদের কী হবে?
সবশেষে আমার প্রশ্ন, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আমলা-কর্মচারী, শিল্পকলা একাডেমির কর্তারা কী নিয়ে ব্যস্ত থাকেন রাত-দিন? তাঁরা সংস্কৃতিকর্মীদের সঙ্গে একটা অর্থবহ সংলাপও করেন না। তাঁদের কাজটা কী?
লেখক: নাট্যব্যক্তিত্ব
শান্তিতে নোবেল পুরস্কার একসময় ছিল আন্তর্জাতিক নৈতিকতার শীর্ষ সম্মান—যেখানে পুরস্কার পেতেন তাঁরা, যাঁদের জীবন ও কর্ম বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় এক অনন্য দৃষ্টান্ত। আজ সেই পুরস্কার অনেকটা হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজনৈতিক সৌজন্য উপহার। যা দেওয়া হয় যখন কারও হাত মলতে হয়, অহংকারে তেল দিতে হয় বা নিজের অ্যাজেন্ডা...
১২ আগস্ট ২০২৫গত বছর জুলাই মাস থেকে আমাদের আন্দোলনকারী তরুণ ছাত্রছাত্রীদের মুখে ও কিছু কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মুখে, বেশি বেশি করে কয়েকটি বাক্য উচ্চারিত হয়ে আসছিল। বাকিগুলোর মধ্যে প্রথম যে বাক্যটি সবার কানে বেধেছে, সেটা হলো ‘বন্দোবস্ত’।
১২ আগস্ট ২০২৫প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন সম্প্রতি রংপুরে অনুষ্ঠিত এক সভায় যে কথাগুলো বলেছেন, তা দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি অকপটে স্বীকার করেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা এখন নির্বাচন কমিশনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
১২ আগস্ট ২০২৫জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকার অবসানের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর পূর্ণ হয়েছে। এ উপলক্ষে কয়েক দিন ধরে পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশনের টক শোতে চলছে এক বছরের মূল্যায়ন।
১১ আগস্ট ২০২৫