মামুনুর রশীদ
কদিন ধরেই একটা বিষয় মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল। মানুষের জন্য কোনটা কঠিন—মনে রাখা, নাকি ভুলে যাওয়া? সহজ—কোনটা কত সহজে ভুলে যাওয়া যায়। বাংলাদেশের মানুষের জন্য এটাই যেন সত্য—সহজে অবলীলায় ভুলে যাওয়া। আমরা যাঁরা দেশভাগের সময় জন্মেছি, তাঁদের জীবনেই কত কিছু ঘটে গেল! যদিও সে সময়ের দাঙ্গা দেখিনি কিন্তু বিধ্বস্ত দেশটা দেখেছি। ছিন্নভিন্ন পরিবারকে দেখেছি। কেউ ভারতে চলে গেছে, কেউ এ দেশে আছে। আবার স্কুলে যখন লেখাপড়া করেছি, তখন প্রিয় সহপাঠী বন্ধুটিও একদিন দেশ ছেড়ে চলে গেছে। বাল্যকালে সেই বন্ধু বিচ্ছেদের বেদনা অনেক দিনই পুষে রেখেছি।
ভাষা আন্দোলন চলছিল, ’৫৪ সালের নির্বাচন হচ্ছে, যেখানে পূর্ব বাংলার রাজনৈতিক দল নিজেও ক্ষমতার ষড়যন্ত্রে পড়ে গেল। আইয়ুব খানের সেনাশাসন চলল অনেক দিন। এর মধ্যে আন্দোলন থেমে থাকেনি। ’৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলনে রক্ত ঝরল ওয়াজিউল্লাহদের। হলো অনেক রাজনৈতিক নির্যাতন। উনসত্তরে যেদিন আসাদ সরকারি গুলিতে নিহত হলেন, সেদিনের কথা শামসুর রাহমানের কবিতায় লেখা আছে। তিনি লিখেছেন ‘আসাদের শার্ট’। পল্টন ময়দানে মওলানা ভাসানীর কণ্ঠে মজলুমের দৃঢ় কণ্ঠ শুনে কবি লিখলেন, মৌলানার সফেদ পাঞ্জাবি। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় ‘আসামিদের’ ওপর লোমহর্ষক অত্যাচারের কাহিনি শুনে পুরো জাতি প্রতিবাদে ফেটে পড়েছিল। জনগণের সেই অভ্যুত্থানের মুখে জেলের তালা ভাঙা হলো, শেখ মুজিবসহ সব রাজবন্দী মুক্তি পেলেন। সেইসব আপসহীন কমিউনিস্ট আর জাতীয়তাবাদী নেতাদের আমরা পরম কৌতূহলে, ভালোবাসায় দেখলাম। তারপর চির পরাধীন বাংলায় শুরু হলো মুক্তির সশস্ত্র যাত্রা। যার পরিণতিতে পেলাম স্বাধীন দেশ।
স্বাধীন দেশে সব সুশৃঙ্খল ছিল না। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হলো। যাঁরা হত্যা করলেন তাঁরা অকপটে স্বীকার করলেন যে তাঁরা হত্যা করেছেন। ঘোষণাকারীদের মধ্যে একজন মেজর ডালিম। বারবার একই ঘোষণা প্রচারিত হলো বাংলাদেশ বেতার থেকে। দ্রুতই বেতারের নাম পরিবর্তন হয়ে গেল। নতুন নাম—রেডিও বাংলাদেশ। ৫০ বছর পর মেজর ডালিম মুখ খুলেছেন। অদ্ভুত সব তথ্য দিলেন। ৫০ বছরে বেশ কটি প্রজন্ম এসেছে, যারা ওইসব ইতিহাস চর্চার পরও আগ্রহ নিয়ে ডালিমের সাক্ষাৎকার শুনেছে। আবার কেউ কেউ দাবি করছে, তিনি সত্যিকারের ডালিম নন। ওই ডালিম যদি সত্যিকারের হন, তাহলে তাঁর সাক্ষাৎকারে যেসব মিথ্যাচার আছে, তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ার লোকের তো অভাব হবে না।
জিয়াউর রহমান কিংবা বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নিয়ে ডালিমের মনগড়া কথাও কি শুনতে হবে আমাদের? মেজর ডালিমের ঔদ্ধত্যপূর্ণ এসব বক্তব্য প্রকাশ করার জন্য প্রবাসী ইউটিউব মালিককেও জবাব দিতে হবে। প্রবাসে বেশ কিছু ইউটিউবার জনগণকে বিভ্রান্ত এবং উত্তেজিত করার জন্য নানা সময় নানা কৌশল নিয়ে থাকে। যেহেতু জ্ঞানের উৎস এখন ফেসবুক আর ইউটিউব, তাই বিভ্রান্তি ছড়াতে তাদের বড়ই সুবিধা হয়েছে। দেশের ভেতরে থেকে আমরা যাঁরা সরকারের দুঃশাসন নিয়ে প্রতিবাদ করি, আন্দোলন করি, অনেকেই নানা ধরনের নিগ্রহের, নির্যাতনের শিকার হই, বঞ্চনার তো শেষই নেই। সে ক্ষেত্রে প্রবাসী বুদ্ধিজীবীদের নানা সুবিধা।
প্রথমে যেখান থেকে শুরু করেছিলাম, স্মৃতি-বিস্মৃতি নিয়ে, সেখানে ফিরে আসি। সমবয়সী বা কম বয়সী অনেক বন্ধু, পরিচিতজনের কাছে যখন অতীতের কোনো কথা বলি, অনেকেই স্মরণ করতে পারেন না। হয়তো স্মরণ করতেও চান না। যাঁরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাঁরা তো চানই না। কয়েক দিন ধরে মেজর ডালিমের সাক্ষাৎকার একটা বড় আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সবাই অবাক, ঘরে ঘরে প্রতিবাদের ঝড়। চায়ের কাপেও ঝড়, কিন্তু কোথায় যেন মব জাস্টিসের ভয়! তার মধ্যেও আমরা যে সত্য, যা দিনের আলোর মতো সত্য, তা প্রকাশ হবে না?
একটা ঘটনা বলার লোভ সংবরণ করতে পারছি না। নব্বইয়ের দশকে একবার টোকিও গিয়েছিলাম নাট্য কর্মশালার প্রশিক্ষক হিসেবে। এর কিছুদিন আগেই নির্বাচন হয়েছে। এরশাদ পাঁচটি আসনে জয়ী হয়েছেন। ওই কর্মশালায় আরও দুজন সহপ্রশিক্ষক ছিলেন। একজন মালয়েশিয়ার, আরেকজন সিঙ্গাপুরের। মালয়েশিয়ার প্রশিক্ষক ইতিহাসের অধ্যাপক। সান্ধ্য আড্ডায় জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আচ্ছা, তোমরা এত বছর এরশাদের বিরুদ্ধে লড়াই করলে অথচ তিনি পাঁচটি আসনে জয়ী হলেন কী করে?’ আমি বিষয়টি নিয়ে নানা ধরনের ব্যাখ্যা দাঁড় করাবার চেষ্টা করলাম। কিন্তু ভদ্রলোক শুরুতেই একটা টান দিয়ে বললেন, ‘শর্ট মেমোরি অব দ্য পিপল!’ মানে, জনগণের অতিসংক্ষিপ্ত স্মরণশক্তি। আমার আর বলার কিছু থাকল না। সরকার পরিবর্তনেও জনগণের ভাগ্যের কিছু পরিবর্তন হয় না বলে জনগণের স্মৃতিতেও নতুন কিছু বোনা হয় না। বরং দুঃসহ স্মৃতিগুলোই থেকে যায়।
এ দেশের শাসকগোষ্ঠীর আয়তন খুব বেশি বড় নয়। বিভিন্ন দল, গোষ্ঠী, আমলাতন্ত্র, সেনাবাহিনী—সবটা মিলে খুব বড়, তা নয়। যেকোনো রাজনৈতিক পরিবর্তনে অনেক মানুষ পথে নামে, বড় ধরনের ত্যাগ স্বীকার করে থাকে, প্রয়োজনে প্রাণটাই দিয়ে দেয়। কিন্তু যখন ক্ষমতার ভাগাভাগি হয় শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কক্ষে, তখন ওই গণমানুষের বিষয়টি সাধারণত আর থাকে না। শাসকগোষ্ঠী আবার নির্বাচনটাও নিজেদের করে নিয়েছে। দিনের ভোট পরিণত হয়েছে রাতের ভোটে। তাই জনগণ সেই সফোক্লিসের ‘ইডিপাস’ নাটকের সংলাপের অনুসারী হয়ে পড়েছে—‘যে ভোলে সে বাঁচে।’ যদিও এটি একটি নেতিবাচক উপায়, তবু ভুলে ভুলেই মানুষ বেঁচে যায়।
জীবনে যদি এত বঞ্চনা থাকে তাহলে যে মনঃপীড়ার নির্যাতন সহ্য করার চেয়ে ভুলে যাওয়াই ভালো। সেভাবেই বাঁচা উৎকৃষ্ট উপায়। কিন্তু এসবই একটা পশ্চাৎপদ সংস্কৃতির বিষয়। মানুষ ভুলবে না এবং ইতিহাস বিস্মৃতও হবে না। মানুষ ইতিহাসের অতল থেকে সত্যের আগুনকে বের করে আনবে। কোনো ধরনের বিভ্রান্তি তাকে ভোলাতে পারবে না। সেখানেই মানুষের জয়।
মামুনুর রশীদ, নাট্যব্যক্তিত্ব
কদিন ধরেই একটা বিষয় মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছিল। মানুষের জন্য কোনটা কঠিন—মনে রাখা, নাকি ভুলে যাওয়া? সহজ—কোনটা কত সহজে ভুলে যাওয়া যায়। বাংলাদেশের মানুষের জন্য এটাই যেন সত্য—সহজে অবলীলায় ভুলে যাওয়া। আমরা যাঁরা দেশভাগের সময় জন্মেছি, তাঁদের জীবনেই কত কিছু ঘটে গেল! যদিও সে সময়ের দাঙ্গা দেখিনি কিন্তু বিধ্বস্ত দেশটা দেখেছি। ছিন্নভিন্ন পরিবারকে দেখেছি। কেউ ভারতে চলে গেছে, কেউ এ দেশে আছে। আবার স্কুলে যখন লেখাপড়া করেছি, তখন প্রিয় সহপাঠী বন্ধুটিও একদিন দেশ ছেড়ে চলে গেছে। বাল্যকালে সেই বন্ধু বিচ্ছেদের বেদনা অনেক দিনই পুষে রেখেছি।
ভাষা আন্দোলন চলছিল, ’৫৪ সালের নির্বাচন হচ্ছে, যেখানে পূর্ব বাংলার রাজনৈতিক দল নিজেও ক্ষমতার ষড়যন্ত্রে পড়ে গেল। আইয়ুব খানের সেনাশাসন চলল অনেক দিন। এর মধ্যে আন্দোলন থেমে থাকেনি। ’৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলনে রক্ত ঝরল ওয়াজিউল্লাহদের। হলো অনেক রাজনৈতিক নির্যাতন। উনসত্তরে যেদিন আসাদ সরকারি গুলিতে নিহত হলেন, সেদিনের কথা শামসুর রাহমানের কবিতায় লেখা আছে। তিনি লিখেছেন ‘আসাদের শার্ট’। পল্টন ময়দানে মওলানা ভাসানীর কণ্ঠে মজলুমের দৃঢ় কণ্ঠ শুনে কবি লিখলেন, মৌলানার সফেদ পাঞ্জাবি। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় ‘আসামিদের’ ওপর লোমহর্ষক অত্যাচারের কাহিনি শুনে পুরো জাতি প্রতিবাদে ফেটে পড়েছিল। জনগণের সেই অভ্যুত্থানের মুখে জেলের তালা ভাঙা হলো, শেখ মুজিবসহ সব রাজবন্দী মুক্তি পেলেন। সেইসব আপসহীন কমিউনিস্ট আর জাতীয়তাবাদী নেতাদের আমরা পরম কৌতূহলে, ভালোবাসায় দেখলাম। তারপর চির পরাধীন বাংলায় শুরু হলো মুক্তির সশস্ত্র যাত্রা। যার পরিণতিতে পেলাম স্বাধীন দেশ।
স্বাধীন দেশে সব সুশৃঙ্খল ছিল না। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হলো। যাঁরা হত্যা করলেন তাঁরা অকপটে স্বীকার করলেন যে তাঁরা হত্যা করেছেন। ঘোষণাকারীদের মধ্যে একজন মেজর ডালিম। বারবার একই ঘোষণা প্রচারিত হলো বাংলাদেশ বেতার থেকে। দ্রুতই বেতারের নাম পরিবর্তন হয়ে গেল। নতুন নাম—রেডিও বাংলাদেশ। ৫০ বছর পর মেজর ডালিম মুখ খুলেছেন। অদ্ভুত সব তথ্য দিলেন। ৫০ বছরে বেশ কটি প্রজন্ম এসেছে, যারা ওইসব ইতিহাস চর্চার পরও আগ্রহ নিয়ে ডালিমের সাক্ষাৎকার শুনেছে। আবার কেউ কেউ দাবি করছে, তিনি সত্যিকারের ডালিম নন। ওই ডালিম যদি সত্যিকারের হন, তাহলে তাঁর সাক্ষাৎকারে যেসব মিথ্যাচার আছে, তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেওয়ার লোকের তো অভাব হবে না।
জিয়াউর রহমান কিংবা বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নিয়ে ডালিমের মনগড়া কথাও কি শুনতে হবে আমাদের? মেজর ডালিমের ঔদ্ধত্যপূর্ণ এসব বক্তব্য প্রকাশ করার জন্য প্রবাসী ইউটিউব মালিককেও জবাব দিতে হবে। প্রবাসে বেশ কিছু ইউটিউবার জনগণকে বিভ্রান্ত এবং উত্তেজিত করার জন্য নানা সময় নানা কৌশল নিয়ে থাকে। যেহেতু জ্ঞানের উৎস এখন ফেসবুক আর ইউটিউব, তাই বিভ্রান্তি ছড়াতে তাদের বড়ই সুবিধা হয়েছে। দেশের ভেতরে থেকে আমরা যাঁরা সরকারের দুঃশাসন নিয়ে প্রতিবাদ করি, আন্দোলন করি, অনেকেই নানা ধরনের নিগ্রহের, নির্যাতনের শিকার হই, বঞ্চনার তো শেষই নেই। সে ক্ষেত্রে প্রবাসী বুদ্ধিজীবীদের নানা সুবিধা।
প্রথমে যেখান থেকে শুরু করেছিলাম, স্মৃতি-বিস্মৃতি নিয়ে, সেখানে ফিরে আসি। সমবয়সী বা কম বয়সী অনেক বন্ধু, পরিচিতজনের কাছে যখন অতীতের কোনো কথা বলি, অনেকেই স্মরণ করতে পারেন না। হয়তো স্মরণ করতেও চান না। যাঁরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাঁরা তো চানই না। কয়েক দিন ধরে মেজর ডালিমের সাক্ষাৎকার একটা বড় আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সবাই অবাক, ঘরে ঘরে প্রতিবাদের ঝড়। চায়ের কাপেও ঝড়, কিন্তু কোথায় যেন মব জাস্টিসের ভয়! তার মধ্যেও আমরা যে সত্য, যা দিনের আলোর মতো সত্য, তা প্রকাশ হবে না?
একটা ঘটনা বলার লোভ সংবরণ করতে পারছি না। নব্বইয়ের দশকে একবার টোকিও গিয়েছিলাম নাট্য কর্মশালার প্রশিক্ষক হিসেবে। এর কিছুদিন আগেই নির্বাচন হয়েছে। এরশাদ পাঁচটি আসনে জয়ী হয়েছেন। ওই কর্মশালায় আরও দুজন সহপ্রশিক্ষক ছিলেন। একজন মালয়েশিয়ার, আরেকজন সিঙ্গাপুরের। মালয়েশিয়ার প্রশিক্ষক ইতিহাসের অধ্যাপক। সান্ধ্য আড্ডায় জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আচ্ছা, তোমরা এত বছর এরশাদের বিরুদ্ধে লড়াই করলে অথচ তিনি পাঁচটি আসনে জয়ী হলেন কী করে?’ আমি বিষয়টি নিয়ে নানা ধরনের ব্যাখ্যা দাঁড় করাবার চেষ্টা করলাম। কিন্তু ভদ্রলোক শুরুতেই একটা টান দিয়ে বললেন, ‘শর্ট মেমোরি অব দ্য পিপল!’ মানে, জনগণের অতিসংক্ষিপ্ত স্মরণশক্তি। আমার আর বলার কিছু থাকল না। সরকার পরিবর্তনেও জনগণের ভাগ্যের কিছু পরিবর্তন হয় না বলে জনগণের স্মৃতিতেও নতুন কিছু বোনা হয় না। বরং দুঃসহ স্মৃতিগুলোই থেকে যায়।
এ দেশের শাসকগোষ্ঠীর আয়তন খুব বেশি বড় নয়। বিভিন্ন দল, গোষ্ঠী, আমলাতন্ত্র, সেনাবাহিনী—সবটা মিলে খুব বড়, তা নয়। যেকোনো রাজনৈতিক পরিবর্তনে অনেক মানুষ পথে নামে, বড় ধরনের ত্যাগ স্বীকার করে থাকে, প্রয়োজনে প্রাণটাই দিয়ে দেয়। কিন্তু যখন ক্ষমতার ভাগাভাগি হয় শীতাতপনিয়ন্ত্রিত কক্ষে, তখন ওই গণমানুষের বিষয়টি সাধারণত আর থাকে না। শাসকগোষ্ঠী আবার নির্বাচনটাও নিজেদের করে নিয়েছে। দিনের ভোট পরিণত হয়েছে রাতের ভোটে। তাই জনগণ সেই সফোক্লিসের ‘ইডিপাস’ নাটকের সংলাপের অনুসারী হয়ে পড়েছে—‘যে ভোলে সে বাঁচে।’ যদিও এটি একটি নেতিবাচক উপায়, তবু ভুলে ভুলেই মানুষ বেঁচে যায়।
জীবনে যদি এত বঞ্চনা থাকে তাহলে যে মনঃপীড়ার নির্যাতন সহ্য করার চেয়ে ভুলে যাওয়াই ভালো। সেভাবেই বাঁচা উৎকৃষ্ট উপায়। কিন্তু এসবই একটা পশ্চাৎপদ সংস্কৃতির বিষয়। মানুষ ভুলবে না এবং ইতিহাস বিস্মৃতও হবে না। মানুষ ইতিহাসের অতল থেকে সত্যের আগুনকে বের করে আনবে। কোনো ধরনের বিভ্রান্তি তাকে ভোলাতে পারবে না। সেখানেই মানুষের জয়।
মামুনুর রশীদ, নাট্যব্যক্তিত্ব
শান্তিতে নোবেল পুরস্কার একসময় ছিল আন্তর্জাতিক নৈতিকতার শীর্ষ সম্মান—যেখানে পুরস্কার পেতেন তাঁরা, যাঁদের জীবন ও কর্ম বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় এক অনন্য দৃষ্টান্ত। আজ সেই পুরস্কার অনেকটা হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজনৈতিক সৌজন্য উপহার। যা দেওয়া হয় যখন কারও হাত মলতে হয়, অহংকারে তেল দিতে হয় বা নিজের অ্যাজেন্ডা...
১২ আগস্ট ২০২৫গত বছর জুলাই মাস থেকে আমাদের আন্দোলনকারী তরুণ ছাত্রছাত্রীদের মুখে ও কিছু কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মুখে, বেশি বেশি করে কয়েকটি বাক্য উচ্চারিত হয়ে আসছিল। বাকিগুলোর মধ্যে প্রথম যে বাক্যটি সবার কানে বেধেছে, সেটা হলো ‘বন্দোবস্ত’।
১২ আগস্ট ২০২৫প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন সম্প্রতি রংপুরে অনুষ্ঠিত এক সভায় যে কথাগুলো বলেছেন, তা দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি অকপটে স্বীকার করেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা এখন নির্বাচন কমিশনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
১২ আগস্ট ২০২৫জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকার অবসানের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর পূর্ণ হয়েছে। এ উপলক্ষে কয়েক দিন ধরে পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশনের টক শোতে চলছে এক বছরের মূল্যায়ন।
১১ আগস্ট ২০২৫