গোলাম ওয়াদুদ, ঢাকা
জাতীয় নির্বাচনের বাকি আর মাত্র কয়েক মাস। রাজনীতির মাঠ দখলে মরিয়া রাজনৈতিক দলগুলো। নিজেদের স্বার্থে সমাবেশ, মহাসমাবেশ, পদযাত্রা, জয়যাত্রা, শান্তি সমাবেশ করছে রাজনৈতিক দলগুলো। তাদের শান্তি সমাবেশ ও শান্তিপূর্ণ অবস্থানের ফলে অশান্তি তৈরি হয়েছে জনসাধারণের মধ্যে। ২৯ জুলাই আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ শেষে ফেরার পথে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। জানা যায়, নিহত শিক্ষার্থীর নাম রেজাউল ইসলাম (২১)। তিনি ঢাকার যাত্রাবাড়ি মাদ্রাসার দাওরা হাদিস বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তিনি শেরপুরের নকলা উপজেলার চরঅষ্টাধর ইউনিয়নের নারায়ণখোলা পশ্চিমপাড়া গ্রামের বর্গাচাষি আব্দুস সাত্তারের ছেলে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, তিনি সেদিন বায়তুল মোকাররমে নামাজ আদায় করে গুলিস্থানের পথ ধরে যাচ্ছিলেন। তখনই শান্তি সমাবেশ থেকে ফেরা আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সেখানে তাকে কোপানো হয়। হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। শান্তির ছড়িয়ে না দিয়ে একটি পরিবারের স্বপ্ন এভাবে শেষ করে দেওয়া হলো। তাকে নিয়ে বড় স্বপ্ন দেখত তাঁর বর্গাচাষি বাবা ও গৃহিণী মা। তাদের স্বপ্নের এখন কি হবে! বছরের পর বছর অভাবের সংসার থেকে ছেলেকে পড়ার খরচ যোগান দিয়েছেন তারা। হয়তো ভেবেছিলেন ছেলে পড়াশোনা শেষ করে পরিবারের দায়িত্ব নেবে। তখন তাদের এই কষ্টের দিন আর থাকবে না।
রেজাউল ইসলাম দাওরা হাদিস বিভাগে পড়তেন মানে কওমীর সর্বোচ্চ ক্লাস। যেটাকে মাস্টার্সের সমমান দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ বছরই শিক্ষা জীবন শেষ করে কর্মজীবনে প্রবেশ করতেন রেজাউল। বাবা-মার দুঃখ কমানোর নানা প্রতিশ্রুতিও হয়তো তিনি দিয়েছিলেন। কিন্তু তাকে হত্যা করল এই সহিংস রাজনীতি। যেটার সঙ্গে ছিল না তাঁর বা তাঁর বর্গাচাষি বাবার কোনো সম্পৃক্ততা। কে ক্ষমতায় যাবে বা গেলেই তাদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হবে এমন চিন্তাও কখনো হয়তো ছিল না তাদের। যে দলই ক্ষমতায় যাক আব্দুস সাত্তারকে চাষাবাদ করেই খেতে হবে। অবস্থা হয়েছে এমন, রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয় উলুখাগড়ার প্রাণ যায়। যে রাজনীতির সাতেও ছিলেন না, পাঁচেও ছিলেন না তিনি প্রাণ হারালেন।
ছেলের মৃত্যুর খবরে দিশেহারা বাবা বলেন, ‘ও তো কোনো দল করত না, তাইলে কেন অরে মারল। কত কষ্ট কইরা লেহাপড়া (লেখাপড়া) করাইতাছি। শুক্রবার সকালেও মোবাইলে কথা হইল। পুলাডা ডেঙ্গু পরীক্ষা করবো বইলা তিন হাজার টাকাও চাইছে। জুম্মার দিন বাজারের দোকান বন্ধ আছিলো বইলা পাঠাবার পাই নাই। পরদিন সকালে তো শুনি বাপ আমার নাই। আমার বাপের কী দোষ?’ এ ঘটনায় রেজাউলের বড়বোন ফারহানা আফরিন সুমি বাদি হয়ে পল্টন থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলার তিন দিন পার হলেও এ ঘটনায় এখনও গ্রেপ্তারের খবর পাওয়া যায়নি। তাকে কারা মারল, কেন মারল তা এখনও অজানা।
বাবার এমন আকুতি হয়তো হত্যাকারীদের মনে কোনো অনুভূতি জাগাবে না। কিন্তু তিনি এই হত্যার ন্যায় বিচার চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার পুলারে যারা মারছে আপনে তাদের সঠিক বিচার করবেন।’ হয়ত প্রধানমন্ত্রীর কাছে একজন সন্তান হারা বাবার আকুতি পৌঁছাবে। হয়তো ন্যায় পাবে এই বাবা।
সোমবার নিজ বাড়িতে দাফন করা হয় রেজাউলকে। সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে তাঁর পরিবারের সঙ্গে এখনো সরকার বা আওয়ামী লীগের কেউ দেখা করেনি, খোঁজ নেয়নি বলে জানা যায়। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য আজকের পত্রিকার নালিতাবাড়ি প্রতিনিধি অভিজিৎ সাহা রেজাউলের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁর চাচা আজাহারুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এলাকার চেয়ারম্যান ও মেম্বার ছাড়া কেউ খোঁজ নেননি। আওয়ামী লীগ বা প্রশাসনের কেউ এখনো আসেনি এমনকি যোগাযোগও করেনি। মানুষ একটু খোঁজ খবরও তো নেয়। কিন্তু এত বড় ঘটনায় কেউ আসলো না।’
রাজনৈতিক সহিংসতায় রেজাউল নিহত হয়েছে আজ চার দিন হলো, এখনো তাঁর দরিদ্র পরিবারের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেনি। এই হত্যার বিচার হওয়ার আশ্বাসও কেউ দেয়নি। দরিদ্র পরিবারকে ক্ষতিপূরণের বিষয়েও কোনো আলাপ ওঠেনি। নাকি দরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় তাঁর মৃত্যুর কোনো বিচার হবে না? তাঁর পরিবার কি ক্ষতিপূরণ পাবে না?
লেখক: সহ সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
জাতীয় নির্বাচনের বাকি আর মাত্র কয়েক মাস। রাজনীতির মাঠ দখলে মরিয়া রাজনৈতিক দলগুলো। নিজেদের স্বার্থে সমাবেশ, মহাসমাবেশ, পদযাত্রা, জয়যাত্রা, শান্তি সমাবেশ করছে রাজনৈতিক দলগুলো। তাদের শান্তি সমাবেশ ও শান্তিপূর্ণ অবস্থানের ফলে অশান্তি তৈরি হয়েছে জনসাধারণের মধ্যে। ২৯ জুলাই আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ শেষে ফেরার পথে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে একজন শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। জানা যায়, নিহত শিক্ষার্থীর নাম রেজাউল ইসলাম (২১)। তিনি ঢাকার যাত্রাবাড়ি মাদ্রাসার দাওরা হাদিস বিভাগের ছাত্র ছিলেন। তিনি শেরপুরের নকলা উপজেলার চরঅষ্টাধর ইউনিয়নের নারায়ণখোলা পশ্চিমপাড়া গ্রামের বর্গাচাষি আব্দুস সাত্তারের ছেলে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, তিনি সেদিন বায়তুল মোকাররমে নামাজ আদায় করে গুলিস্থানের পথ ধরে যাচ্ছিলেন। তখনই শান্তি সমাবেশ থেকে ফেরা আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সেখানে তাকে কোপানো হয়। হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। শান্তির ছড়িয়ে না দিয়ে একটি পরিবারের স্বপ্ন এভাবে শেষ করে দেওয়া হলো। তাকে নিয়ে বড় স্বপ্ন দেখত তাঁর বর্গাচাষি বাবা ও গৃহিণী মা। তাদের স্বপ্নের এখন কি হবে! বছরের পর বছর অভাবের সংসার থেকে ছেলেকে পড়ার খরচ যোগান দিয়েছেন তারা। হয়তো ভেবেছিলেন ছেলে পড়াশোনা শেষ করে পরিবারের দায়িত্ব নেবে। তখন তাদের এই কষ্টের দিন আর থাকবে না।
রেজাউল ইসলাম দাওরা হাদিস বিভাগে পড়তেন মানে কওমীর সর্বোচ্চ ক্লাস। যেটাকে মাস্টার্সের সমমান দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ বছরই শিক্ষা জীবন শেষ করে কর্মজীবনে প্রবেশ করতেন রেজাউল। বাবা-মার দুঃখ কমানোর নানা প্রতিশ্রুতিও হয়তো তিনি দিয়েছিলেন। কিন্তু তাকে হত্যা করল এই সহিংস রাজনীতি। যেটার সঙ্গে ছিল না তাঁর বা তাঁর বর্গাচাষি বাবার কোনো সম্পৃক্ততা। কে ক্ষমতায় যাবে বা গেলেই তাদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হবে এমন চিন্তাও কখনো হয়তো ছিল না তাদের। যে দলই ক্ষমতায় যাক আব্দুস সাত্তারকে চাষাবাদ করেই খেতে হবে। অবস্থা হয়েছে এমন, রাজায় রাজায় যুদ্ধ হয় উলুখাগড়ার প্রাণ যায়। যে রাজনীতির সাতেও ছিলেন না, পাঁচেও ছিলেন না তিনি প্রাণ হারালেন।
ছেলের মৃত্যুর খবরে দিশেহারা বাবা বলেন, ‘ও তো কোনো দল করত না, তাইলে কেন অরে মারল। কত কষ্ট কইরা লেহাপড়া (লেখাপড়া) করাইতাছি। শুক্রবার সকালেও মোবাইলে কথা হইল। পুলাডা ডেঙ্গু পরীক্ষা করবো বইলা তিন হাজার টাকাও চাইছে। জুম্মার দিন বাজারের দোকান বন্ধ আছিলো বইলা পাঠাবার পাই নাই। পরদিন সকালে তো শুনি বাপ আমার নাই। আমার বাপের কী দোষ?’ এ ঘটনায় রেজাউলের বড়বোন ফারহানা আফরিন সুমি বাদি হয়ে পল্টন থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলার তিন দিন পার হলেও এ ঘটনায় এখনও গ্রেপ্তারের খবর পাওয়া যায়নি। তাকে কারা মারল, কেন মারল তা এখনও অজানা।
বাবার এমন আকুতি হয়তো হত্যাকারীদের মনে কোনো অনুভূতি জাগাবে না। কিন্তু তিনি এই হত্যার ন্যায় বিচার চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘আমার পুলারে যারা মারছে আপনে তাদের সঠিক বিচার করবেন।’ হয়ত প্রধানমন্ত্রীর কাছে একজন সন্তান হারা বাবার আকুতি পৌঁছাবে। হয়তো ন্যায় পাবে এই বাবা।
সোমবার নিজ বাড়িতে দাফন করা হয় রেজাউলকে। সবচেয়ে দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে তাঁর পরিবারের সঙ্গে এখনো সরকার বা আওয়ামী লীগের কেউ দেখা করেনি, খোঁজ নেয়নি বলে জানা যায়। বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য আজকের পত্রিকার নালিতাবাড়ি প্রতিনিধি অভিজিৎ সাহা রেজাউলের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাঁর চাচা আজাহারুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এলাকার চেয়ারম্যান ও মেম্বার ছাড়া কেউ খোঁজ নেননি। আওয়ামী লীগ বা প্রশাসনের কেউ এখনো আসেনি এমনকি যোগাযোগও করেনি। মানুষ একটু খোঁজ খবরও তো নেয়। কিন্তু এত বড় ঘটনায় কেউ আসলো না।’
রাজনৈতিক সহিংসতায় রেজাউল নিহত হয়েছে আজ চার দিন হলো, এখনো তাঁর দরিদ্র পরিবারের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেনি। এই হত্যার বিচার হওয়ার আশ্বাসও কেউ দেয়নি। দরিদ্র পরিবারকে ক্ষতিপূরণের বিষয়েও কোনো আলাপ ওঠেনি। নাকি দরিদ্র পরিবারের সন্তান হওয়ায় তাঁর মৃত্যুর কোনো বিচার হবে না? তাঁর পরিবার কি ক্ষতিপূরণ পাবে না?
লেখক: সহ সম্পাদক, আজকের পত্রিকা
শান্তিতে নোবেল পুরস্কার একসময় ছিল আন্তর্জাতিক নৈতিকতার শীর্ষ সম্মান—যেখানে পুরস্কার পেতেন তাঁরা, যাঁদের জীবন ও কর্ম বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় এক অনন্য দৃষ্টান্ত। আজ সেই পুরস্কার অনেকটা হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজনৈতিক সৌজন্য উপহার। যা দেওয়া হয় যখন কারও হাত মলতে হয়, অহংকারে তেল দিতে হয় বা নিজের অ্যাজেন্ডা...
১২ আগস্ট ২০২৫গত বছর জুলাই মাস থেকে আমাদের আন্দোলনকারী তরুণ ছাত্রছাত্রীদের মুখে ও কিছু কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের মুখে, বেশি বেশি করে কয়েকটি বাক্য উচ্চারিত হয়ে আসছিল। বাকিগুলোর মধ্যে প্রথম যে বাক্যটি সবার কানে বেধেছে, সেটা হলো ‘বন্দোবস্ত’।
১২ আগস্ট ২০২৫প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন সম্প্রতি রংপুরে অনুষ্ঠিত এক সভায় যে কথাগুলো বলেছেন, তা দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি অকপটে স্বীকার করেছেন, সুষ্ঠু নির্বাচনে জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা এখন নির্বাচন কমিশনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
১২ আগস্ট ২০২৫জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকার অবসানের পর অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের এক বছর পূর্ণ হয়েছে। এ উপলক্ষে কয়েক দিন ধরে পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশনের টক শোতে চলছে এক বছরের মূল্যায়ন।
১১ আগস্ট ২০২৫