আওয়ামী লীগ প্রতিশোধপরায়ণ না, তাই বিএনপি কথা বলার সুযোগ পায়: শেখ হাসিনা

আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিএনপির ভাগ্য ভালো আমরা ক্ষমতায় আছি, আমরা তাদের মতো প্রতিশোধপরায়ণ না দেখে, তার এখনো কথা বলার সুযোগ পায়। তারা সারা দিন কথা বলে মাইক লাগিয়ে, তারপর বলবে কথা বলার সুযোগ পায় না।’ 

আজ শুক্রবার গণভবনে কৃষক লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সংগঠনটির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। 

বিরোধী দলে থাকার সময়কার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ অফিসে তো আমরা ঢুকতেই পারতাম না। কীভাবে তারা অত্যাচার করেছে আমাদের ওপর, আমরা তো তার কিছুই করি নাই। আমরা প্রতিশোধ নিতে ব্যস্ত থাকিনি। আমরা আমাদের সব শক্তি-মেধা কাজে লাগিয়েছি দেশের উন্নয়নে, দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে।’ 

সারা দেশের সব অপরাধীই বিএনপির কি না—এমন প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, তারা (বিএনপি) যেভাবে বলছে ৬০ লাখ লোক তাদের গ্রেপ্তার, ৬০ লাখ তো জেলে আমাদের ধারণক্ষমতাও নেই। তারপরও যতটুকু ধারণক্ষমতা আছে সবই বিএনপির লোক, এটাই তো তারা বলতে চাচ্ছে। এর মানে বাংলাদেশে যত অপরাধ, সব অপরাধ করে বিএনপি। সেখানে চুরি, ডাকাতিসহ যা আছে ওদের হিসেবে সব অপরাধী হচ্ছে বিএনপির। ওরাই সব, এটাই তো বলতে চাচ্ছে।

বিভিন্ন সময় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ওপর অত্যাচারের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে তারা চিৎকার করে তাদের ওপর অত্যাচার নিয়ে। কী অত্যাচার হচ্ছে তাদের ওপর? তারা যে অত্যাচার করেছে, সেই জিয়াউর রহমানের ক্ষমতায় আসার পর থেকে আওয়ামী লীগের ওপর অত্যাচারের যে স্টিম রোলার চালিয়েছিল, যেভাবে হত্যা করেছিল, খালেদা জিয়া আসার পরে ২০০১-এর নির্বাচনের পর কোনো আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী ঘরে থাকতে পারেনি। ধরে নিয়ে যেভাবে অত্যাচার এবং আমাদের কতগুলো নেতাকে মেরে ফেলে দিল। আহসান উল্লাহ মাস্টার থেকে শুরু করে আমাদের বহু নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে। ওরা শুধু আওয়ামী লীগ না, সাধারণ মানুষের ওপরও অত্যাচার করেছে।’ 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে (বিএনপি) সব জায়গায় কান্নাকাটি, বলছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা। তাদের জিজ্ঞেস করতে হবে মামলাগুলো কিসের মামলা? অগ্নিসন্ত্রাস, অস্ত্রপাচার, গ্রেনেড হামলাসহ বিভিন্ন অপরাধের মামলা। তারা অপরাধ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সেটাই তো বাস্তবতা।’ 

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘তারা ৩ হাজার ৮০০ গাড়ি পুড়িয়েছে। বাস, লঞ্চ, রেল পুড়িয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে না তো কী হবে। ওদের বিরুদ্ধে কোনো মামলা তো পলিটিক্যাল মামলা না। প্রত্যেকটা মামলা হচ্ছে অগ্নিসন্ত্রাসের মামলা। তারা মানুষ হত্যা করেছে আগুন দিয়ে, ২৮ অক্টোবর যে ঘটনা তারা ঘটাল নির্বাচন ঠেকাতে গিয়ে রেলে আগুন দিয়ে মা-শিশুকে পুড়িয়ে মেরেছে। যারা এগুলো করল, তাদের বিরুদ্ধে কি মামলা হবে না? তাদের কি মানুষ পূজা করবে?’

মামলাগুলো আরও দ্রুত শেষ করে এগুলোর শাস্তি দিয়ে দেওয়া উচিত বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা। 

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দলের কেন্দ্রীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানান সংগঠনের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার বিটু। 

উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালের ১৯ এপ্রিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষক লীগ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।