Ajker Patrika

মিডিয়ায় হামাস বিরোধী প্রচারণার জন্য দল পাকাচ্ছে ইসরায়েলপন্থী ধনকুবেররা

মিডিয়ায় হামাস বিরোধী প্রচারণার জন্য দল পাকাচ্ছে ইসরায়েলপন্থী ধনকুবেররা

গাজায় সংঘটিত ইসরায়েলের ধ্বংসযজ্ঞের প্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাপী দেশটির ভাবমূর্তি অনেকটাই ক্ষুণ্ন হয়েছে। ফিলিস্তিনের সমর্থনে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ। এই প্রেক্ষিতে ইসরায়েলের ভাবমূর্তি বাড়াতে এবং হামাসকে নেতিবাচকভাবে তুলে ধরতে চেষ্টা চালাচ্ছে ধনকুবেররা। কাতারভিত্তিক সংবাদ সংস্থা আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিডিয়াকে ব্যবহার করে এই লক্ষ্য অর্জন করতে দলবদ্ধ হয়েছে বেশ কয়েকজন ধনকুবের। ওই প্রচারাভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ফ্যাক্টস ফর পিস’।

সংবাদমাধ্যম সেমাফর জানিয়েছে, ওয়াল স্ট্রিট এবং হলিউডের বেশ কয়েকজন ধনকুবের সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের কাছে হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করতে মিডিয়ায় প্রচারণা চালানোর পরিকল্পনা করেছে। সে জন্য ৫ কোটি ডলার খরচ করার পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনাও হয়েছে তাদের। গুগলের প্রাক্তন প্রধান নির্বাহী এরিক স্মিট, ডেলের প্রধান নির্বাহী মাইকেল ডেল এবং অর্থদাতা মাইকেল মিলকেন সহ ৫০-এরও বেশি ধনকুবের যুক্ত হয়েছেন এই পরিকল্পনায়; ব্লুমবার্গ এবং ফোর্বসের তথ্য অনুসারে, যাদের সম্মিলিত অর্থের পরিমাণ প্রায় ৫০ হাজার কোটি ডলার।

আবাসন ব্যবসায়ী ও ধনকুবের ব্যারি স্টার্নলিক্ট গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলার পরেই প্রচারাভিযান শুরু করেছিলেন। ই-মেইল যাচাই করে সেমাফর জানিয়েছে, কয়েক ডজন ধনকুবেরের কাছে ১০ লাখ ডলার করে অনুদান চেয়েছিলেন ব্যারি স্টার্নলিক্ট। ই-মেইলটিতে তিনি লিখেছিলেন যে, সিএনএন-এর মালিক ডেভিড জাসলাভের সঙ্গে এই প্রচেষ্টা সম্পর্কে ‘দারুণ কথোপকথন’ হয়েছে তার। সে সঙ্গে, বিনোদন ও মিডিয়া এজেন্সি এনডেভারের প্রধান নির্বাহী অ্যারি ইমানুয়েল এই প্রচারণার সমন্বয় করতে সম্মত হয়েছেন।

সেমাফর অবশ্য জানিয়েছে, উভয় ব্যক্তির মুখপাত্রই স্টার্নলিক্টের এই দাবি অস্বীকার্য করে বলেছেন যে, তারা এই পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত নন।

ই-মেইলটিতে আরও বলা হয়, ‘এই প্রচারাভিযানের লক্ষ্য হবে ইহুদি-বিদ্বেষ এবং ফিলিস্তিনের বর্তমান পরিস্থিতির মধ্যে পার্থক্য তৈরি করা। ব্যারি স্টার্নলিক্ট লিখেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং বিশ্ব মিডিয়া ক্রমবর্ধমানভাবে গাজায় মৃত্যুর খবরকে জোর দিয়ে প্রচার করছে বলে বিশ্বব্যাপী ইসরায়েলের প্রতি সহানুভূতি এবং সমর্থন হ্রাস পাচ্ছে। বাস্তব কিংবা বানোয়াট যাই হোক না কেন, হামাস যেসব ছবি প্রচার করছে তাতে দেখা যাচ্ছে বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের দুর্দশা ও যন্ত্রণার ছবি। এসবের ফলাফল হিসেবে ইসরায়েলের প্রতি বিশ্ব সম্প্রদায়ের সহানুভূতি কমে যাওয়াটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। আমাদের অবশ্যই ঘটনার এই চিত্র পাল্টে দিতে হবে।’

এই পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত আছেন বিনিয়োগকারী বিল অ্যাকম্যান-যিনি ইসরায়েলের সমালোচনাকারী ফিলিস্তিনপন্থী ছাত্রদের কালো তালিকাভুক্ত করার প্রকাশ্য হুমকি দিয়েছেন। সামাজিক প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ তিনি লিখেছিলেন যে, গাজায় ইসরায়েলি নীতির সমালোচনা করে খোলা চিঠিতে স্বাক্ষর করা সংগঠনগুলোর সদস্য শিক্ষার্থীদের নাম যেন আইভি লীগ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো প্রকাশ করে, এমনটি চান তিনি এবং অন্যান্য ব্যবসায়িক নির্বাহীরা।

এ পর্যন্ত ফ্যাক্টস ফর পিস কত ডলার অনুদান পেয়েছে তা এখনো স্পষ্ট না হলেও প্রচারণাটি ইতিমধ্যেই অন্তত কয়েক মিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করেছে বলে দাবি করা হয়েছে সেমাফোরের প্রতিবেদনে। সেখানে বলা হয়েছে, অনেকেই বিষয়টি সম্পর্কে জানে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত