Ajker Patrika

তারেককে খুঁজছে পুলিশ

সোহেল মারমা, চট্টগ্রাম
আপডেট : ১৮ জানুয়ারি ২০২২, ১২: ২১
তারেককে খুঁজছে পুলিশ

চট্টগ্রামে ভূমিমালিকের অগোচরে ভূমি অধিগ্রহণ (এলএ) শাখা থেকে ক্ষতিপূরণের প্রায় ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের চেষ্টার মামলায় সরকারি দপ্তরে আরও অনেকেরই সম্পৃক্ততার প্রাথমিক তথ্য পেয়েছে পুলিশ।

ওইসব কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা প্রমাণ করতে তারেক হোসেন রুবেল (২৭) নামের এক ‘দালালকে’ খুঁজছে পুলিশ। আশা করা হচ্ছে, তারেককে আটক করা গেলে এলএ শাখায় জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত একটি বড় চক্রের মুখোশ উন্মোচিত হবে।

জানা গেছে, এক মালিকের অগোচরে ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ বাবদ ২ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যাংক থেকে তোলার চেষ্টা করেন জোহুরা নামের এক নারী। এ ঘটনায় গত বছর ৮ নভেম্বর কোতোয়ালি থানায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা মামলায় জোহরাকে কক্সবাজার উখিয়া থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ছাড়া ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বাঁশখালী ভূমি অফিসের চেইনম্যান নেজামুল করিম ও জেলা প্রশাসনের এলএ শাখার সার্ভেয়ার খাজা উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

চট্টগ্রামের পটিয়ায় ইনস্টলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং উইথ ডাবল পাইপ লেন শীর্ষক প্রকল্পের অধীনে ক্ষতিপূরণের টাকাগুলো দেওয়া হয়েছিল।

চক্রটি ভূমিমালিকের পক্ষে ভুয়া পাওয়ার অব অ্যাটর্নিতে জোহরার নাম দেখিয়ে কাগজপত্র সৃজন ও দাখিল করে ফাইলটি অনুমোদন নিয়েছিল। জোহরার নামে ক্ষতিপূরণের চেকও ইস্যু হয়। টাকা তুলতে গিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তাদের সন্দেহ থেকে জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়ে।

গত বছরের ১০ নভেম্বর আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে জোহরা বলেন, চেকটি পাস হলে তাঁকে ৫ লাখ টাকা দেওয়া হতো। বাকি টাকা চক্রের সদস্যরা ভাগ পেতেন।

পুলিশের তদন্তে এই জালিয়াতির ঘটনায় সরকারি দপ্তরে কর্মরত আরও কয়েকজনের নাম উঠে এসেছে।

জানতে চাইলে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক মোমিনুল হাসান আজকের পত্রিকাকে বলেন, মামলার তদন্তের স্বার্থে এলএ শাখা ও রেজিস্ট্রি অফিসের তিন-চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যগুলো যাচাই করা হচ্ছে। এ ঘটনায় যাঁরাই জড়িত থাকবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপপরিদর্শক মোমিনুল হাসান বলেন, মূলত বাঁশখালী ভূমি অফিসের চেইনম্যান নেজামুল করিম ও তারেক নামে এক দালালের মাধ্যমে এলএ শাখায় এই ফাইলটি আসে। ইতিমধ্যে নেজামুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারেককে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। তাঁকে গ্রেপ্তার করতে পারলে মূল হোতাদের সম্পর্কে জানা যাবে।

জানা গেছে, তারেকের ঠিকানা পুলিশ প্রথমে পূর্ব ষোলোশহরে পেলেও সর্বশেষ সীতাকুণ্ডে পাওয়া যায়। তারেক ভারতে পালিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন অনেকেই।

একটি গোয়েন্দা সংস্থার সূত্র বলেছে, ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণের টাকা আত্মসাতের পেছনে সার্ভেয়ার, রেজিস্ট্রি অফিস ও ভূমি অফিসের লোকজনের সম্পৃক্ততা রয়েছে। কারণ তাঁদের ছাড়া কোনো ফাইল অনুমোদন হয় না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, এলএ শাখার জালিয়াতির সঙ্গে শুধু সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী নয়, এদের বাইরে আরও অনেকেই জড়িত আছেন। এরা বড় একটি সিন্ডিকেট। ইতিমধ্যে এদের বেশ কয়েকজনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। বাকিদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। ধীরে ধীরে চক্রটিকে নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হবে। এদের বিরুদ্ধে আমাদের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না বলে জানান জেলা প্রশাসক।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত