Ajker Patrika

২৩ স্কুল–কলেজ পানিবন্দী

আনোয়ার হোসেন, মনিরামপুর
আপডেট : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০: ৪১
২৩ স্কুল–কলেজ পানিবন্দী

যশোরের মনিরামপুরে কয়েক ঘণ্টার ভারী বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধ হয়ে পড়েছে ২৩টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে কোনোটির শ্রেণিকক্ষে কোমরপানি। আবার কোনোটির সামনে ঢেউ খেলছে থই থই পানি। ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন এসব প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজের শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা। শুধু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, পানিবন্দী হয়ে পড়েছে পাঁচ শতাধিক বাড়ি। ভেসে গেছে শত শত মাছের ঘের।

গতকাল বুধবার খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হরিদাসকাটি ইউনিয়নে ৯টি ও কুলটিয়া ইউনিয়নে ১৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি উঠে কানায় কানায় ভরে গেছে।। এর মধ্যে বাজে কুলটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে কোমরপানি বলে জানিয়েছেন সেটির শিক্ষকেরা। তাঁরা শিক্ষার্থীদের পাশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বসিয়ে ক্লাস নিচ্ছেন।

যশোরের দুঃখ ভবদহের স্লুইসগেট দিয়ে পানি সরতে না পারায় উপজেলার কুলটিয়া ও হরিদাসকাটি ইউনিয়নের মানুষের নিত্যসঙ্গী জলাবদ্ধতা। প্রায় বছরজুড়ে জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ নিয়েই তাঁদের দিন কাটে। বর্ষা মৌসুমে এই জলাবদ্ধতা প্রকট আকার ধারণ করে। বছরের বেশির ভাগ সময় তলিয়ে থাকে এই অঞ্চলের মাঠঘাট ও বসতবাড়িসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

গত রোববার দুপুর থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে পানি উঠেছে এই দুই ইউনিয়নের অন্তত ২৩টি স্কুল কলেজের মাঠে ও আঙিনায়

প্রতিষ্ঠানগুলো হলো মুক্তেশ্বরী ডিগ্রি কলেজ, মশিয়াহাটি ডিগ্রি কলেজ, দিগঙ্গা কুচলিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পাঁচকাটিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বাজে কুলটিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কুলটিয়া বালিকা বিদ্যালয়, বি এইচ এম এস বালিকা বিদ্যালয়, আলিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বাগডাঙা মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বাজে কুলটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

এ ছাড়া কুলটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাটগাছা সুজাতপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাটগাছা মধ্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সুজাতপুর দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাগডাঙা দহকুলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ আশ্রম সেবাসংঘ্য, লখাইডাঙা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চান্দুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উপজেলার শ্রীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নেবুগাতী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাজিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মঠপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দক্ষিণ পাঁচকাটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগে পড়তে হলেও কতটি প্রতিষ্ঠান জলাবদ্ধ রয়েছে তার কোনো হিসাব নেই উপজেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে। বুধবার এই দুই দপ্তর প্রধানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা কোনো তথ্য দিতে পারেননি।

হরিদাসকাটি গুচ্ছের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান বলেন, ‘বুধবার ক্লাস্টার ঘুরে ছয়টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে পানি জমে থাকতে দেখেছি। শ্রেণিকক্ষে পানি না উঠায় পাঠদানে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।’

কুলটিয়া ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত সহকারী থানা শিক্ষা কর্মকর্তা (এটিইও) রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কুলটিয়ায় আটটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ পানিতে কানায় কানায় ভরে গেছে। বাজে কুলটিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে কোমর পানি থাকায় পাশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে বাচ্চাদের ক্লাস চলছে।’

কুলটিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শেখর চন্দ্র রায় বলেন, ‘বর্ষায় হাটগাছা, সুজাতপুর, আলিপুর, বাজেকুলটিয়াসহ দশটি গ্রামের অন্তত ৫০০-৭০০ বাড়িতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবছর এভাবে পানি ওঠে। ভবদহের সমস্যা নিরসন না হলে এই ভোগান্তি শেষ হবে না।’

মনিরামপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র সরকার বলেন, ‘কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে পানি উঠেছে শুনেছি। আমি ছুটিতে থাকায় নামগুলো দিতে পারছি না। তবে পাঠদানে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত