Ajker Patrika

‘কম টাকা আনায় খুন হন লাইলী’

ফেনী প্রতিনিধি
আপডেট : ১৭ ডিসেম্বর ২০২১, ১৩: ১৫
‘কম টাকা আনায় খুন হন লাইলী’

ফেনীর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ঝোপ থেকে তিন মাস আগে অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে উদ্ধার হওয়া নারীর লাশের পরিচয় মিলেছে। তাঁর নাম লাইলী বেগম। তিনি কুমিল্লার কোতোয়ালি থানার ধর্মপুরের আমতলী এলাকার গৃহবধূ।

পরকীয়া প্রেমিক আবদুল্লাহ আনসারী মুন্নার (২৩) হাত ধরে স্বামীর বাড়ি থেকে চলে আসেন লাইলী বেগম। এ সময় তিনি ১৮ হাজার টাকা নিয়ে আসেন। কম টাকা আনার কারণে মুন্না তাঁর ওপর ক্ষুব্ধ হন। এ নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে লাইলীকে তিনি শ্বাসরোধে হত্যা করেন।

গত বুধবার রাতে ফেনীতে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব জানান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) থোয়াই অং প্রু মারমা। তিনি আরও জানান, গ্রেপ্তার প্রেমিক আবদুল্লাহ আনসারী মুন্না ও মাইক্রোবাসচালক দ্বীন ইসলাম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

এ সময় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ফেনী মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া জানান, লাইলী হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আবদুল্লাহ আনসারী মুন্না গত বুধবার বিকেলে ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসানের আদালতে ও গাড়িচালক দ্বীন ইসলাম সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারহানা লোকমানের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পরে তাঁদের জেলা কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

থোয়াই অং প্রু মারমা জানান, গত ১৩ সেপ্টেম্বর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ফেনী সদর উপজেলার মোহাম্মদ আলী বাজারের পাশে সুন্দরপুর এলাকায় ঝোপ থেকে এক নারীর গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ওই নারীর পরিচয় শনাক্ত করা হয়।

থোয়াই অং প্রু মারমা আরও জানান, ঘটনার এক মাস আগে কুমিল্লার ক্যান্টনমেন্ট এলাকার হোটেলের শ্রমিক আবদুল্লাহ আনসারী মুন্নার সঙ্গে মোবাইল ফোনে গৃহবধূ লাইলীর পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক হয়। একপর্যায়ে গত ২ সেপ্টেম্বর পরকীয়া প্রেমিক মুন্নার সঙ্গে পালিয়ে বিয়ে করতে তিন বছর বয়সী এক সন্তানের জননী লাইলী বাড়ি থেকে বের হন। তাঁরা কুমিল্লার বিশ্বরোড জাগরতলী এলাকা থেকে মাইক্রোবাসে চট্টগ্রামের উদ্দেশে রওনা হন। বাড়ি থেকে লাইলী মাত্র ১৮ হাজার টাকা নিয়ে আসায় ক্ষুব্ধ হন মুন্না। আরও বেশি টাকা আনেননি কেন এ নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে গাড়িতে তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে মহাসড়কের ফেনীর মোহাম্মদ আলী বাজার এলাকায় ঝোপে লাইলীর মরদেহ ফেলে পালিয়ে যান।

পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, অজ্ঞাতপরিচয় লাশ উদ্ধারের বিষয়টি পাশের কয়েকটি জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে জানানো হয়। সম্প্রতি অন্য একটি হত্যা মামলায় আবদুল্লাহ আনসারী মুন্নাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পরবর্তী সময়ে ফেনী জেলা পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে মুন্না এ বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নিজাম উদ্দিন, ফেনীর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (এসআই) রফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত