Ajker Patrika

রেমিট্যান্সে আরও বাড়ছে প্রণোদনা

জয়নাল আবেদীন খান, ঢাকা
আপডেট : ৩১ অক্টোবর ২০২১, ১১: ২০
রেমিট্যান্সে আরও বাড়ছে প্রণোদনা

বৈধ পথে সাধারণ প্রবাসীদের দেশে টাকা পাঠাতে উৎসাহী করতে তাঁদের জন্য প্রণোদনা বাড়ানো হচ্ছে। বিদ্যমান ২ শতাংশের সঙ্গে প্রবাসীদের জন্য আরও ১ শতাংশ বাড়ানো হচ্ছে প্রণোদনা। ফলে বৈধ পথে দেশে টাকা পাঠালে ২ শতাংশের জায়গায় এখন থেকে তাঁরা ৩ শতাংশ প্রণোদনা পাবেন। এ-সংক্রান্ত একটি সিদ্ধান্তে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। তবে যেসব প্রবাসী মাসে ৫০০ মার্কিন ডলার কিংবা তার চেয়ে কম রেমিট্যান্স পাঠাবেন কেবল তাঁরাই এ সুবিধা পাবেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, চলমান ২ শতাংশ প্রণোদনার পাশাপাশি ক্ষুদ্র আয়ের প্রবাসীদের অতিরিক্ত আরও ১ শতাংশ প্রণোদনা দিতে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকে এক নির্দেশনা দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। এ নির্দেশনা পাওয়ার পরই কেন্দ্রীয় ব্যাংক একটি প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে প্রেরণ করে। প্রস্তাবটি কার্যকর করার প্রক্রিয়া এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। মূলত হুন্ডির মাধ্যমে টাকা পাঠানো নিরুৎসাহিত করতেই প্রবাসীদের বাড়তি এ প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রস্তাবটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে ২ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে, যা সব রেমিট্যান্স প্রেরণকারীর স্বজনেরা পাচ্ছেন। কিন্তু যাঁরা বিদেশে ছোটখাটো চাকরি করেন, তাঁরা যেন আরও বেশি সুবিধা পান, সে জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, রেমিট্যান্সের সুবিধা পেতে হলে সরাসরি বিদেশে থাকার পাশাপাশি সেখানে বৈধভাবে আয় করতে হবে। এ ছাড়া বিদেশে অবস্থিত বিভিন্ন মানি এক্সচেঞ্জ হাউসের মাধ্যমে অথবা ওই সব দেশের বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে ‘রেমিট্যান্স’ ঘোষণা দিয়ে টাকা পাঠাতে হবে। বিদেশ থেকে টাকা আনলেও রেমিট্যান্সের স্বীকৃতি না পাওয়ার কারণে অনেকেই ২ শতাংশ হারে প্রণোদনার সুবিধা পান না।

জানতে চাইলে ইউএনডিপি বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদ ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, ‘স্বল্প আয়ের প্রবাসী এবং তাঁদের স্বজনদের জন্য এ বাড়তি সুবিধা প্রদান সরকারের একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত। এই শ্রেণির লোকজনের কাছে প্রণোদনা একটি বাড়তি আয়ের মতো। স্বল্প আয়ের প্রবাসীদের জন্য এ বাড়তি সুবিধা অন্যদের মাঝে কোনো নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে না। কারণ, তাঁদের পাঠানো রেমিট্যান্স টাকার অঙ্কে একেবারে কম।’

রেমিট্যান্সের সুবিধা পেতে বেশ কয়েকটি শর্ত ও কিছু নিয়ম মানতে হয় জানিয়ে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহতাব জাবিন বলেছেন, ‘যাঁরা নিয়ম ও শর্ত মানেন না তাঁরা বিদেশ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা আনার পরও রেমিট্যান্সের সুবিধা পান না। তবে সব মিলে এটা ক্ষুদ্র আয়ের প্রবাসীদের জন্য ভালো হবে।’

বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোকে উৎসাহিত করতে ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে সরকার। এ জন্য ওই অর্থবছরে ৩ হাজার ৬০ কোটি টাকা অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছিল। আর ২০২০-২১ অর্থবছরে মূল বাজেটে ৩ হাজার ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হলেও সংশোধিত বাজেটে তা বাড়িয়ে ৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়। এদিকে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরে বাজেটে রেমিট্যান্স খাতে প্রণোদনার পরিমাণ বাড়িয়ে ৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, করোনার মধ্যে ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবাসীরা ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার রেকর্ড সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন। যা আগের অর্থবছরে ছিল ১ হাজার ৮২০ কোটি ডলার। তবে গত চার মাস ধরে টানা কমছে প্রবাসী আয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত