Ajker Patrika

৩১ কিশোরী ক্লাবের অস্তিত্ব নেই

কাজল সরকার, হবিগঞ্জ
আপডেট : ১৪ ডিসেম্বর ২০২১, ১৫: ২২
৩১ কিশোরী ক্লাবের অস্তিত্ব নেই

হবিগঞ্জে ৮৪টি কিশোর-কিশোরী ক্লাবের স্থানে কার্যক্রম চলছে ৫৩টি ক্লাবের। বাস্তবে অস্তিত্ব নেই ৩১টি ক্লাবের। কার্যক্রমহীন বাকি ক্লাবগুলোর অধিকাংশেরই নেই অস্তিত্ব, কোথাও কোথাও সাইনবোর্ডেই সীমাবদ্ধ ক্লাবের কার্যক্রম।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের পরিচালনায় ২০১৯ সালের ৪ ডিসেম্বর হবিগঞ্জে শুরু হয় কিশোর-কিশোরী ক্লাব।

জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, চুনারুঘাট উপজেলায় কাগজপত্রে ১১টি ক্লাবের কথা উল্লেখ থাকলেও কার্যক্রম চলছে মাত্র দুটি ক্লাবে। বাকি নয়টি ক্লাব শুরু থেকেই বন্ধ। শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় চারটি ক্লাবের কথা থাকলেও চলছে একটি ক্লাব। মাধবপুর উপজেলায় ১২টি ক্লাবের মধ্যে চলমান রয়েছে পাঁচটি ক্লাব। এ ছাড়া বানিয়াচংয়ে ১৫টির মধ্যে তিনটি ক্লাবের কার্যক্রম চলছে।

এসব ক্লাবের উদ্দেশ্য বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ ও লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা প্রতিরোধ, প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার, জন্মনিবন্ধন, বিবাহ নিবন্ধন, যৌতুক, ইভ টিজিং, শিশু অধিকার, নারী অধিকার, লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য, যৌন নির্যাতন ও নিপীড়ন, পরিবার পরিকল্পনা, মাদকাসক্তি, নারী পাচার, শিশু পাচারসহ নানা বিষয়ে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সচেতনতা বাড়ানো।

এদিকে অস্তিত্ব না থাকলেও এসব ক্লাবের নামে আসছে নিয়মিত বরাদ্দ। শিক্ষক, কর্মকর্তাদের বেতন ছাড়াও বাদ্যযন্ত্র ও খেলাধুলার সামগ্রীর বাইরে প্রতি মাসে আসছে নাশতারও বরাদ্দ।

এ বিষয়ে বানিয়াচং উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) পিয়ারা বেগম বলেন, ‘বানিয়াচংয়ে তিনটি ক্লাব চালু আছে, শিক্ষকসংকটের কারণে ক্লাবগুলো চালু করা যায়নি। ইতিমধ্যে আমরা প্যানেল পাঠিয়েছি; এর এখনো অনুমোদন হয়নি। অনুমোদন পেলে ক্লাবগুলো চালু করা যাবে। আমি চলমান তিনটি ক্লাবের বরাদ্দের টাকা তুলেছি।’

জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্যমতে, কিশোর-কিশোরী ক্লাব প্রকল্পের আওতায় ৮৪টি ক্লাবের বিপরীতে দুজন ফিল্ড সুপারভাইজার, ৮৪ জন কো-অর্ডিনেটর, ১৭ জন জেন্ডার প্রমোটার, ৪৫ জন সংগীত শিক্ষক এবং ৪১ জন আবৃত্তি শিক্ষক রয়েছেন।

এদিকে দুই দফা করোনার প্রাদুর্ভাবের কারণে বন্ধ থাকার পর জেলায় এ পর্যন্ত ১০৪ দিন ক্লাস নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় ছয়জন ক্লাব কো-অর্ডিনেটরের নাম তালিকায় থাকলেও বর্তমানে তাঁরা সক্রিয় নন বলে জানান ওই ক্লাবগুলোর জেন্ডার প্রমোটার আলপনা আক্তার।

বানিয়াচংয়ে ১১টি ক্লাব চালু না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পদ্মাসন সিংহ বলেন, করোনার কারণে কার্যক্রম বন্ধ ছিল। তবে প্রকৃত কারণ কী তা খোঁজ নিয়ে জানাবেন বলেও জানান তিনি।

চুনারুঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিদ্ধার্থ ভৌমিক বলেন, ‘এই বিষয়ে আমি জানি না। খোঁজ নিয়ে পরে বিস্তারিত জানাব।’

একই বিষয়ে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর হবিগঞ্জের উপপরিচালক মো. মাহবুবুল আলম বলেন, ‘শিক্ষক নিয়োগ দিতে না পারায় ক্লাবগুলো চালু করা যায়নি। করোনার কারণে এই প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হয়েছে। নিয়োগের ক্ষেত্রে আমার কিছু করার নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘উপজেলা পর্যায়ে ইউএনও সভাপতি এবং মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা সদস্যসচিব তাঁরা প্যানেল তৈরি করে পাঠালে প্রকল্প পরিচালক তা চূড়ান্ত অনুমোদন দেন। ইতিমধ্যে আমি ক্লাবগুলো দ্রুত চালু করার জন্য পিডি স্যারের সঙ্গে সরাসরি দেখা করে কথা বলেছি।’

এ প্রকল্প পরিচালক জয়ন্ত কুমার সিকদার (যুগ্ম সচিব) বলেন, শিক্ষক নিয়োগের মাধ্যমে দ্রুত ক্লাবগুলো চালুর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত