Ajker Patrika

‘ টোকেনে’ চলে অটোরিকশা

ফেনী প্রতিনিধি
আপডেট : ৩১ অক্টোবর ২০২১, ১৩: ৪৫
‘ টোকেনে’ চলে অটোরিকশা

ফেনীতে অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নকে চাঁদা দিয়ে চলতে হচ্ছে সহস্রাধিক অবৈধ সিএনজিচালিত অটোরিকশাকে। প্রতি মাসে দিতে হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। এই টাকার বিনিময়ে চালকেরা পান বিশেষ ‘টোকেন’। এই টোকেন দেখালে স্থানীয় প্রশাসন কোনো ঝামেলা করে না বলে জানা গেছে। এসব অটোরিকশার নেই কোনো নম্বর প্লেট, রুট পারমিট কিংবা বৈধ কাগজপত্র। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ চালকের নেই ড্রাইভিং লাইসেন্সও।

তবে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এ বিষয়ে দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ফেনী জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ উল হাসান বলেন, ‘জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। শিগগির নিবন্ধনের বিষয়ে একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ফেনীর বিভিন্ন সড়কে চলাচলকারী অটোরিকশার সংখ্যা প্রায় ২৪ হাজার। এর মধ্যে ৯০ ভাগের কোনো নিবন্ধন নেই।

বিআরটিএ সূত্রমতে, জেলায় নিবন্ধনকৃত অটোরিকশার সংখ্যা ৯ হাজার ২০০। এর মধ্যে ৬ হাজারের নিবন্ধন নবায়ন করা হয়নি। আর নিবন্ধিত চালক রয়েছেন ১ হাজার ২৫৫ জন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অটোরিকশাচালক বলেন, নবায়ন করতে ১০-১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। তার ওপর নানা হয়রানি পোহাতে হয়। অথচ প্রতি মাসে ৫০০ টাকা হারে বছরে ৬ হাজার টাকা দিলে টোকেন পাওয়া যায়। এই সময় কোনো টেনশন থাকে না।

এ রকম আরও কয়েকজন চালক বলেন, গাড়ির সামনের গ্লাসে স্টিকার বা টোকেন লাগানো থাকে। অনেক চালকের হাতে থাকে চাবির রিং। এই রিং দিয়ে পুরো নোয়াখালী অঞ্চল বিনা বাধায় চলাচল করা যায়। টোকেন ও স্টিকারের দাম ৫০০ টাকা এবং চাবির রিংয়ের দাম ১ হাজার টাকা।

‘টোকেন’ দেওয়ার কথা স্বীকার করে ফেনী জেলা অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. হানিফ বলেন, ‘যেসব অটোরিকশার লাইসেন্স, ফিটনেস ও অন্যান্য কাগজপত্র থাকে না, সেসব অটোচালক পুলিশ ও প্রশাসনের হাত থেকে বাঁচতে টাকা দিয়ে স্টিকার নেন। এ ছাড়া সংগঠনের পেছনে কিছু ব্যয় আছে। কেউ মারা গেলে বা দুর্ঘটনার শিকার হলে সমিতি থেকে সহযোগিতা করা হয়।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অনিবন্ধিত, ট্যাক্স-টোকেন ও ফিটনেসবিহীন অবৈধ রুট পারমিটের বিরুদ্ধে বিআরটিএ এবং ট্রাফিক পুলিশ মাঝেমধ্যে অভিযান চালায়। তবে অভিযানের খবর আগেই পেয়ে যান অবৈধ অটোরিকশাচালকেরা।

ফেনী জেলা বিআরটিএর যানবাহন পরিদর্শক জমির হোসেন বলেন, ‘ফেনীতে সরকার নির্ধারিত সিএনজির কোটা পূর্ণ থাকায় গত দুই বছর নতুন করে নিবন্ধন দিচ্ছে না সরকার।’

ফেনী জেলা বিআরটিএর নির্বাহী প্রকৌশলী পার্কন চৌধুরী বলেন, ‘বিআরটিএর বিরুদ্ধে সব অভিযোগ মিথ্যা। অটোরিকশার মালিকেরা নিজেদের সুবিধার জন্য অবৈধভাবে টাকা দিয়ে চলছে। তবে প্রতি মাসেই অভিযান চালিয়ে অবৈধ অটোরিকশা আটক ও জরিমানা করা হচ্ছে।’

এদিকে টাকার বিনিময়ে স্টিকার দেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন ফেনী জেলা ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক আহম্মদ নুর। তিনি বলেন, ‘যাঁদের লাইসেন্স পাওয়া যায় না, তাঁদের বিরুদ্ধে ট্রাফিক পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেয়। ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত থাকবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত