Ajker Patrika

ঘাঘট পারে ভরসা সাঁকো

আব্দুর রহিম পায়েল, গঙ্গাচড়া
আপডেট : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১১: ৩২
ঘাঘট পারে ভরসা সাঁকো

গঙ্গাচড়া উপজেলা সদর থেকে আলমবদিতির ইউনিয়নের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে ঘাঘট নদ। এলাকাবাসী যোগাযোগের এই বিচ্ছিন্নতা দূর করতে কুটির ঘাটে একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছেন দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে। কিন্তু সেই দাবি এখনো পূরণ হয়নি।

চলাচলের ভোগান্তিতে থাকা প্রায় ৩০ হাজার মানুষের নদ পাড়ি দেওয়ার একমাত্র ভরসা নিজেদের অর্থায়নে নির্মিত বাঁশের সাঁকো।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ডাঙ্গী পাইকান, প্রামাণিক পাড়া, মেছনিকুন্ডা, সয়রাবাড়ী, তুলশীরহাট ও ফুলবাড়ি চওড়াসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ কুটির ঘাট দিয়ে যাতায়াত করেন। সেখানে সেতুর অভাবে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ জনসাধারণ নদী পারাপারে চরম ভোগান্তির শিকার হন। এ ভোগান্তি লাঘবে প্রতি বছর বর্ষাকালে নিজেদের অর্থায়নে বাঁশের সাঁকো তৈরি করেন স্থানীয়রা। কিন্তু যাতায়াতে অধিক চাপের কারণে সাঁকোটি দুই থেকে তিন মাসের বেশি স্থায়ী হয় না। ফলে বছরে কয়েকবার সাঁকো সংস্কার করতে হয়। এরপরও অনেক ঝুঁকি নিয়ে এখান দিয়ে পারাপার হতে হয়।

ডাঙ্গী পাইকানের বাসিন্দা শফিয়ার রহমান জানান, এলাকার ব্যবসায়ীরা ঝুঁকিপূর্ণ সাঁকো দিয়ে মালামাল বহন করতে পারেন না। মাত্র ১০০ মিটারের এই দূরত্ব অতিক্রম করতে মালামাল কিংবা যাত্রীবাহী গাড়ি বাধ্য হয়ে বেতগাড়ির হাট হয়ে অতিরিক্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে আসে।

এই সাঁকোর জন্য ধান কাটা নিয়ে চিন্তায় আছেন কুটিপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুর রশিদ। তিনি বলেন, কিছুদিনের মধ্যে আমন ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ শুরু হবে। কিন্তু ভাঙা বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়ে কৃষিশ্রমিকেরা ধানের আঁটি নিয়ে আসতে চান না। কারণ সাঁকোটি যেকোনো সময় ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সেতু না থাকায় ভ্যানচালককে কয়েকগুণ টাকা বেশি দিয়ে ১৫ কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে ধান নিয়ে আসতে হয়।

সেতু না থাকায় স্থানীয় শিক্ষার্থীরাও রয়েছে ভোগান্তিতে। পাইকান ঢিংটারী গ্রামের ছাত্রী তহমিনা ও মাসুমা আক্তারসহ অনেকে জানায়, সাঁকো দিয়ে স্কুলে যাতায়াতে তাদের অনেক দুর্ভোগ পোহাতে হয়। একদিন স্কুলে যাওয়ার পথে সাঁকো ভেঙে তারা পানিতে পড়ে গিয়েছিল।

পাইকান এলাকার তোতা মিয়া বলেন, ‘দেশ স্বাধীনের পর থেকে আমাদের একটি মাত্র দাবি, পাইকান কুটির ঘাটে ঘাঘট নদের ওপর ব্রিজ নির্মাণ। নির্বাচনের প্রাক্কালে অনেক জনপ্রতিনিধি ব্রিজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁরা তা বেমালুম ভুলে যান।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আলমবিদিতর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফতাবুজ্জামান জানান, সেতু নির্মাণের জন্য তাঁরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

গঙ্গাচড়া উপজেলা প্রকৌশলী মাজেদুল ইসলাম বলেন, সেতু নির্মাণের জন্য কয়েক দিন আগে মাটি পরীক্ষা করা হয়েছে। আগামী অর্থবছরে কাজ শুরু হতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত