Ajker Patrika

ইপিজেড নির্মাণ বন্ধের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২১, ১৭: ৫৮
ইপিজেড নির্মাণ বন্ধের দাবি

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে তিন সাঁওতাল হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারসহ তিনফসলি জমিতে ইপিজেড নির্মাণ বন্ধের দাবি জানানো হয়েছে।

গতকাল শনিবার সকালে ‘সাঁওতাল হত্যা দিবস’ উপলক্ষে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম কাটামোড় এলাকায় আয়োজিত এক সমাবেশে বক্তারা এই দাবি জানান।

সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ডা. ফিলিমন বাক্সের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন, মানবাধিকার কর্মী সুলতানা কামাল, ভূমি অধিকার কর্মী ও এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস, জেলা বারের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাবু, প্রাণবৈচিত্র্য গবেষক পাভেল পার্থ, জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সবিন চন্দ্র মুন্ডা, নাগরিক উদ্যোগের নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন, জেলা জাসদ সভাপতি গোলাম মারুফ মনা, জন-উদ্যোগের সদস্যসচিব প্রবীর চক্রবর্তী, আদিবাসী ফোরাম নেতা হরেন্দ্রনাথ সিং, কাপেং ফাউন্ডেশনের সমন্বয়ক খোকন সুইটেন মুরমু, আদিবাসী নেতা প্রিসিলা মুরমু, থমাস হেমব্রম, সুফল হেমব্রম, সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক স্বপন শেখ, আদিবাসী নেতা দ্বীপায়ন শিখা, গোলাম রব্বানী মুসা, আব্দুল খালেক, অঞ্জলী রানী দেবী, মৃণাল কান্তি বর্মণ, সুজন প্রসাদ প্রমুখ

এর আগে সাঁওতাল পল্লিতে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদবেদিতে ফুল ও মোমবাতি জ্বালিয়ে নিহত মঙ্গল মার্ডি, রমেশ টুডু ও শ্যামল হেমব্রম স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা এবং শ্রদ্ধা জানানো হয়। পরে তাঁদের দাবি-দাওয়াসংবলিত ব্যানার-ফেস্টুন ও কালো পতাকা হাতে পাঁচ শতাধিক সাঁওতাল-বাঙালি শোকযাত্রায় অংশ নেন।

বক্তারা অবিলম্বে তিনফসলি জমিতে ইপিজেড স্থাপন বন্ধ, সমতলের আদিবাসীদের ভূমিসংকট নিরসনে পৃথক ও স্বাধীন ভূমি কমিশন গঠনসহ সাত দফা বাস্তবায়নের দাবি জানান।

এদিকে বাগদাফার্মে সাঁওতালদের জমিতে ইপিজেড তৈরি না করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এলাকা গোপালগঞ্জে স্থাপন করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ও ভাসানী অনুসারী পরিষদের সভাপতি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়ার সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট হাসনাত কাইয়ুম, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নুসহ সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংহতি কমিটির নেতারা।

ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘কালকে থেকে কী শুরু হলো! আমরা যাঁরা সুখে ছিলাম, তাঁদের জন্য গাড়িঘোড়া বন্ধ হয়ে গেছে, তেলের দাম বেড়েছে। খাবারের দাম বেড়েছে। সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়াতে আন্দোলন শুরু হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে আন্দোলন-ধর্মঘট চলছে। এ আন্দোলন সহজে থামবে না।’

ডা. জাফরুল্লাহ আরও বলেন, ‘আজকে যেসব জমিনে চার ফসল হয়, সে জমি দখল করে বেপজা করার দরকার নেই। ডাকাতি করবেন না। বঙ্গবন্ধু তো ডাকাতির বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। আদিবাসীদের ওপর ইতিমধ্যে যে অন্যায় করা হয়েছে, ২০১৬ সালে যাঁদের হত্যা করা হয়েছে, তাঁদের পরিবার এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ ও সাহায্য করার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাই।’

পরে শহীদ মিনার থেকে একটি মিছিল বের করেন আন্দোলনকারীরা। মিছিলটি শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি প্রদক্ষিণ করে শাহবাগ মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।

উল্লেখ্য, সাঁওতালেরা গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে রংপুর চিনিকলের জমি তাঁদের বাপ-দাদার দাবি করে ২০১৬ সালে আন্দোলন গড়ে তোলেন। জমি উদ্ধারে গঠিত হয় সাহেবগঞ্জ বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি। শুরু হয় নানা কর্মসূচি। ওই বছরের ৬ নভেম্বর জমি থেকে আখ কাটাকে কেন্দ্র করে চিনিকল কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের সঙ্গে সাঁওতালদের সংঘর্ষ হয়। এতে সাঁওতাল সম্প্রদায়ের তিনজন নিহত ও পুলিশসহ অন্তত ২০ জন আহত হন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত