Ajker Patrika

শঙ্কা এবার আলেশা মার্টকে নিয়েও

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৯ নভেম্বর ২০২১, ১৩: ৪০
শঙ্কা এবার আলেশা মার্টকে নিয়েও

বিশাল মূল্যছাড়ে পণ্য বিক্রির নামে প্রতারণার অভিযোগ ওঠা ইভ্যালি, ই-অরেঞ্জ, কিউকমের মতো আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান আলেশা মার্টও একই পথে হাঁটছে কি না, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। প্রায় ৪৫ হাজার গ্রাহকের কয়েক কোটি টাকা আটকে আছে প্রতিষ্ঠানটিতে। এ ছাড়া তিন মাস ধরে আলেশা মার্টের কর্মীরা বেতন পাচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির জনসংযোগ শাখার একজন কর্মকর্তা।

পাওনা টাকার দাবিতে গ্রাহক এবং কর্মী দুই পক্ষই গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল থেকে রাজধানীর বনানীতে আলেশা মার্টের প্রধান কার্যালয়ে জড়ো হন। এ সময় তাঁরা প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম শিকদারকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

গতকাল আলেশা মার্টের বনানী কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, টাকার দাবিতে সেখানে জড়ো হয়েছেন শতাধিক গ্রাহক ও কর্মচারী। মালিকপক্ষের কাউকেই সেখানে না পেয়ে একপর্যায়ে তাঁরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। বেলা সাড়ে ৩টা নাগাদ পুলিশ এসে তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়।

এ সময় পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সালাউদ্দিন আজকের পত্রিকাকে জানান, আলেশা মার্ট কর্তৃপক্ষ মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছে যে তাদের অফিসে এসে কিছু লোক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ গিয়ে সবাইকে সরিয়ে দেয়।

তাওহিদ তোহান নামের এক গ্রাহক জানান, আলেশা মার্টে তিনি ২৩ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে ১৯টি মোটরসাইকেল অর্ডার করেছেন। গত জুন মাসের ১৬ থেকে ২১ তারিখের মধ্যে এসব অর্ডারের টাকা এস্ক্রো সার্ভিস এসএসএলের মাধ্যমে পরিশোধ করেন তিনি। ৪৫ দিনের মধ্যে পণ্য দেওয়ার কথা থাকলেও এখনো পণ্য বা টাকা কিছুই পাননি তোহান।

তানজিম আহমেদ নামের আরেক গ্রাহক বলেন, ‘ধার করে ৫ লাখ টাকা দিছিলাম (আলেশা মার্টে)। এখন এদিকেও কিছু পাই না, ওদিকে টাকার জন্য পাওনাদারেরা দৌড়ানি দেয়।’

রাজধানীর হাজারীবাগে আলেশা মার্টের ওয়্যারহাউসে গিয়ে দেখা যায়, সেটি বন্ধ। ওয়্যারহাউসের মূল ফটকের সামনে যে সাউনবোর্ড ছিল, সেটিও খুলে ফেলা হয়েছে। জানতে চাইলে সেখানকার নিরাপত্তাকর্মী হাবিব বলেন, ‘গত মাসে গ্যাঞ্জাম হইছিল। তারপর থেইকাই সব বন্ধ। গ্যাঞ্জাম থামলে আবার খুলব মনে হয়।’

এ সময় ওয়্যারহাউসের ভেতরে অর্ধশতাধিক মোটরসাইকেল ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা অবস্থায় দেখা যায়। মোটরসাইকেলগুলো কবে কখন রাখা হয়েছে, সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেননি নিরাপত্তাকর্মী হাবিব।

অন্যদিকে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলেও আলেশা মার্টের অফিস বন্ধ রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন গ্রাহকেরা। গত সোমবার রাত থেকেই আলেশা মার্টের অফিস বন্ধ হয়ে গেছে বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে খবর ছড়িয়ে পড়ে। তবে অফিস বন্ধের খবরটি সত্য নয় বলে ফেসবুকে এসে দাবি করেছেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান। বিষয়টি নিয়ে গত বুধবার সংবাদ সম্মেলন ডেকেও তা বাতিল করা হয়।

এ প্রসঙ্গে জানতে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম শিকদারের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সংযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি। হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি এর জবাব দেননি।

তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে আলেশা মার্টের জনসংযোগ শাখার একজন কর্মকর্তা জানান, বিজ্ঞাপন বাবদ বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানেও আলেশা মার্টের কয়েক লাখ টাকার দেনা রয়েছে। বুধবার ‘পোস্ট ডেটেড’ চেকের মাধ্যমে তা পরিশোধের ব্যবস্থা করা হয়েছে। চেকগুলোতে ডিসেম্বরের তারিখ দেওয়া রয়েছে বলে জানা গেছে। এর আগে ওই চেকগুলো থেকে টাকা উত্তোলন করা সম্ভব হবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত