Ajker Patrika

অর্ধেক বাসভাড়ার দাবি বড় হচ্ছে ,রাস্তায় শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২১ নভেম্বর ২০২১, ১০: ৪৯
অর্ধেক বাসভাড়ার দাবি বড় হচ্ছে ,রাস্তায় শিক্ষার্থীরা

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির পর বাসভাড়া বাড়ানো হয়েছে ২৫-৩০ শতাংশ। কিন্তু কোথাও কোথাও ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছিল। বাড়তির বোঝা শেষ পর্যন্ত সাধারণ মানুষের ওপর গিয়ে পড়ে। এতে বেশি ভোগান্তিতে পড়ে শিক্ষার্থীরা। তাই ভাড়া অর্ধেক দেওয়ার দাবিতে পথে নামে তারা। দিনে দিনে তাদের সেই দাবি আরও বড় হচ্ছে, বাড়ছে রাজপথে বিক্ষোভ।

গতকাল শনিবার টানা তৃতীয় দিনের মতো ঢাকার রাস্তায় বিক্ষোভ করেছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। আগের দুদিনের চেয়ে বেশি জায়গায় তারা রাস্তায় নেমেছে। কয়েকটি জায়গায় তারা বাসও ভাঙচুর করেছে। আর তাদের এই বিক্ষোভে রাস্তা আটকে থাকায় ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে পথচলতি মানুষকে।

সমাধানের বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক হুমায়ন কবির গতকাল আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বিআরটিসির বাসে হাফ ভাড়া নেওয়া হয় না, সেখানে আমরা কেন নেব? তা ছাড়া, সরকারের তরফ থেকে হাফ ভাড়া নিতে কোনো নির্দেশনাও দেওয়া হয়নি। হাফ ভাড়া নিতে হলে সরকারকে ভর্তুকি দিতে হবে।’

তবে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বাসে হাফ ভাড়া নেওয়ার বিষয়ে আইনের কোনো বিধান নেই। আগেও ছিল না, এখনো নেই। তবে বাসমালিকদের কিছুটা ছাড় দেওয়া উচিত।’

এর আগে ২০১৮ সালে নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময় ৯টি দাবি জানিয়েছিল শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে বাসে অর্ধেক ভাড়ার বিষয়টি ছিল। সে সময় বলা হয়েছিল, টাস্কফোর্সের মাধ্যমে বাসে শিক্ষার্থীদের জন্য অর্ধেক ভাড়া পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে। কিন্তু তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি।

বাসের অর্ধেক ভাড়া কার্যকরের দাবিতে গতকাল সকাল থেকে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়, ফার্মগেট, মিরপুর, যাত্রাবাড়ী, রামপুরাসহ বিভিন্ন স্থানে ঢাকার বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়। তারা সড়কে বাস চলাচল বন্ধ করে দেয়। দুপুর ১২টার দিকে সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে বিভিন্ন কলেজের পোশাক পরা শিক্ষার্থীরা হঠাৎ করেই উত্তেজিত হয়ে চারটি বাসের গ্লাস ভাঙচুর করে। রাজধানীর ফার্মগেটে স্বাধীন পরিবহনের একটি বাসও ভাঙচুর করা হয়।

সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড়ে ভাঙচুর হওয়া ট্রান্স সিলভা বাসের চালক হামিদুর রহমান বলেন, ‘সড়কে যানজটের মধ্যে থাকাবস্থায় কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই হঠাৎ করে শিক্ষার্থীরা গাড়ি ভাঙচুর শুরু করে। আমরা নিয়মিত হাফ ভাড়া নিচ্ছি।’

রামপুরায় বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ঢাকা ইমপিরিয়াল কলেজের শিক্ষার্থী হাসিবুল হাসনাত জানান, বাসের হেলপাররা ছাত্র-ছাত্রীদের হয়রানি করেন। হাফ ভাড়া দিতে চাইলে নেন না। উল্টো শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।

দাবি আদায়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ছয়টি দাবি তুলেছে। সব গণপরিবহনে শিক্ষার্থীদের অর্ধেক ভাড়া ছাড়াও দাবির মধ্যে আছে বাসের ওয়েবিল বন্ধ করে কাউন্টারভিত্তিক টিকিট সিস্টেম চালু করতে হবে। প্রতিটি গণপরিবহনে নির্দিষ্টভাবে ৯টি আসন বরাদ্দ রাখতে হবে নারীদের জন্য। যাত্রী হয়রানি বন্ধ করে ট্রাফিকব্যবস্থা উন্নত করতে হবে। শিক্ষার্থীদের নিরাপদে বাসে ওঠাতে হবে এবং নামাতে হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত