Ajker Patrika

নবারুণ ভট্টাচার্য

সম্পাদকীয়
নবারুণ ভট্টাচার্য

নবারুণ ভট্টাচার্য একাধারে ছিলেন কবি, গল্পকার ও ঔপন্যাসিক। ১৯৪৮ সালের ২৩ জুন পশ্চিমবঙ্গের বহরমপুরে তাঁর জন্ম। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথমে পড়েছেন ভূতত্ত্ব নিয়ে। এরপর ভর্তি হন ইংরেজি বিভাগে। কলেজে পড়া শেষ হওয়ার পর তিনি ‘সোভিয়েত দেশ’ পত্রিকায় কাজ করেছেন। নাটক করেছেন কলকাতার মঞ্চে।

এরপর কিছুদিন বিষ্ণু দের ‘সাহিত্যপত্র’ পত্রিকায় সম্পাদনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। ২০০৩ থেকে ‘ভাষাবন্ধন’ নামের একটি পত্রিকা পরিচালনা করেন। দীর্ঘ সময় ধরে তিনি ‘নবান্ন’ নাট্যগোষ্ঠী পরিচালনা করেছেন।

বিপ্লবকে লেখনীর মাধ্যমে ভাষা দেওয়ার লড়াকু দায়িত্ব পালন করেছেন নবারুণ ভট্টাচার্য। যুক্ত ছিলেন কলকাতার একটি বামধারার পার্টির সাংস্কৃতিক ফ্রন্টে।

‘এই মৃত্যু উপত্যকা আমার দেশ না’র মতো কবিতা, ‘যুদ্ধপরিস্থিতি’র মতো গল্প, ‘খেলনানগর’, ‘হারবার্ট’ ও ‘কাঙাল মালসাটে’র মতো উপন্যাস তাঁকে খ্যাতি এনে দেয়। ঘোরতর রাজনৈতিক লেখা লিখেও বাম বা ডান তিনি কারও আস্থাভাজন হয়ে ওঠার চেষ্টা করেননি কোনো দিন। যদিও চিন্তার দিক থেকে সব সময়ই বামপন্থী ছিলেন।

তাঁর হারবার্ট, ফ্যাতাড়ু সিরিজ, কাঙাল মালসাট উপন্যাস নিয়ে সিনেমা নির্মাণ করা হয়েছে। আর তাঁর লেখা থেকে দেবেশ চট্টোপাধ্যায় ও সুমন মুখোপাধ্যায় মঞ্চসফল নাটক নির্মাণ করেছেন। নবারুণের উল্লেখযোগ্য অন্য সাহিত্যকর্মের মধ্যে রয়েছে: লুব্ধক, হালাল ঝান্ডা ও অন্যান্য, মহাজনের আয়না, রাতের সার্কাস, আনাড়ির নারীজ্ঞান ইত্যাদি।

পার্টি করা মানুষ হলেও অপ্রিয় সত্য উচ্চারণে দ্বিধাহীন ছিলেন নবারুণ ভট্টাচার্য। তাই তিনি কবিতায় বলেছেন, ‘বিপ্লব গেছে নেতাদের খোঁজে/ যুবকেরা গেছে উৎসবে/ যুবতীরা গেছে বিশিষ্ট ভোজে/ গরীবের হায় কী হবে?’

তিনি টের পেতেন ক্ষত আর দগ্ধ হওয়ার যন্ত্রণা। তাই সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ন্যায্য দাবি আদায়ের মিছিল, বিক্ষোভ, প্রতিবাদেও তিনি শামিল ছিলেন আজীবন।

বরেণ্য নাট্যব্যক্তিত্ব বিজন ভট্টাচার্য তাঁর বাবা আর তাঁর মা বাংলা সাহিত্যে নিম্নবর্গের মানুষের প্রতিলিপিকার মহাশ্বেতা দেবী। ২০১৪ সালের ৩১ জুলাই ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত