Ajker Patrika

রাজু গ্রেপ্তার, কালাম অধরা

প্রতিনিধি, ফেনী ও পরশুরাম
আপডেট : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১০: ৫১
রাজু গ্রেপ্তার, কালাম অধরা

ফেনীতে গরু ব্যবসায়ী শাহজালাল হত্যা মামলার আরেক আসামি আশরাফ হোসেন রাজুকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি এই মামলার প্রধান আসামি কাউন্সিলর আবুল কালামের ভাতিজা।

গত মঙ্গলবার ভোর রাত চারটার দিকে পরশুরাম উপজেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকার বিলোনীয়ার তালুকপাড়া থেকে রাজুকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে এই মামলার দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হলো। তবে প্রধান আসামি কাউন্সিলর কালাম এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে আছেন। রাজু (২৩) ফেনী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড মধ্যম বিরিঞ্চি এলাকার বাসিন্দা। তাঁকে তালুকপাড়ায় কাউন্সিলর কালামের মামার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ১৬ জুলাই চাঁদা না দেওয়ায় ফেনীর সুলতানপুরে গরু ব্যবসায়ী শাহজালালকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় ফেনী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাউন্সিলর কালাম ও তাঁর দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে ফেনী মডেল থানায় মামলা করা হয়। দুই নম্বর আসামি নাঈমুল হাসান ইতিমধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) জসিম উদ্দিন বলেন, জবানবন্দিতে নাঈমুলের ভাষ্যমতে, ঘটনার দিন কাউন্সিলর কালাম তাঁকে অফিসে ডেকে পাঠান। আর তাঁর ভাতিজা রাজুকে বাড়ি পাঠিয়ে অস্ত্র আনান। এরপর কালাম একটি মোটরসাইকেলে এবং রাজু ও নাঈমুল আরেকটি মোটরসাইকেলে ঘটনাস্থলে যান। বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে গরু ব্যবসায়ী শাহজালালকে গুলি করেন কালাম। শাহজালাল মাটিতে লুটিয়ে পড়লে অন্যরা ভয়ে ছোটাছুটি করতে থাকেন। পরে শাহজালালের লাশ মোটরসাইকেলে তুলে পার্শ্ববর্তী নাগপুকুরে ফেলে কালামসহ তাঁরা চলে যান। এসআই জসিম উদ্দিন আরও বলেন, আদালতে জবানবন্দি রেকর্ড শেষে নাঈমুলকে ফেনী কারাগারে পাঠানো হয়।

এদিকে রাজুকে গ্রেপ্তারের বিষয়ে গতকাল বুধবার জানতে চাইলে পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মু. খালেদ হোসেন বলেন, আসামি রাজুকে আদালতে সোপর্দ করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ। আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, গরু ব্যবসায়ীকে হত্যার পর কাউন্সিলর কালামকে ধরতে পারত পুলিশ। কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। পরে তিনি আত্মগোপনে চলে যান।

গরু ব্যবসায়ী শাহজালালকে হত্যার ওই ঘটনার প্রতিবাদে সামাজিক মাধ্যমসহ স্থানীয়রা বাসিন্দারা সরব হয়ে ওঠে। অনেকের অভিযোগ, ১৯৯৮ সালে ছাত্রলীগ নেতা নজরুলকে গুমের মাধ্যমে কালামের অপকর্মের যাত্রা শুরু। নজরুলের সন্ধান আজও মেলেনি। তা ছাড়া ১৯৯৯ সালের ডিসেম্বরে পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন রতনকে যেখানে হত্যা করা হয়েছিল, সেখানেই গরু ব্যবসায়ী শাহজালালকে হত্যা করা হয়েছে। বিএনপির সাবেক সাংসদ ভিপি জয়নালের দেহরক্ষী হিসেবে ২০০০ সালে বিপুল অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হন আবুল কালাম। পরে তিনি দল পাল্টে আওয়ামী লীগে ঢোকেন। তবে এ ঘটনায় তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।

ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, কালামকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। ইতিমধ্যে পুলিশ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত