Ajker Patrika

বেশি মুনাফায় জেল-জরিমানা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১৬ নভেম্বর ২০২১, ১২: ১৭
বেশি মুনাফায় জেল-জরিমানা

ধান, চাল, ডাল, পেঁয়াজ, রসুন, ডিম, আটা, ময়দা, সবজিসহ কোনো কৃষিপণ্য সর্বোচ্চ কত টাকা লাভে বিক্রি করা যাবে, তা নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। নির্ধারিত হারের থেকে বেশি লাভে এসব পণ্য বিক্রি করলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জেল-জরিমানার বিধান রেখে ‘কৃষি বিপণন বিধিমালা’ জারি করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়।

কৃষি বিপণন আইনের ক্ষমতাবলে এই বিধিমালা জারি করা হয়েছে। কৃষি উপকরণ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করলে বা সরকার-নির্ধারিত হারের থেকে বেশি মুনাফা নিলে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে কৃষি বিপণন আইনে। দ্বিতীয়বার একই অপরাধ করলে সাজা হবে দ্বিগুণ।

কৃষিপণ্যে মুনাফার সর্বোচ্চ হার বেঁধে দেওয়ার ফলে কেউ চাইলেই কোনো কৃষিপণ্যের দাম অতিরিক্ত হারে বাড়াতে পারবে না বলে মনে করছেন কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা।

বিধিমালায় বলা হয়েছে, ‘বাজারে প্রকাশ্য বা সহজে দৃষ্টিগোচর হয়—এমন স্থানে কৃষিপণ্য ও কৃষি উপকরণের পাইকারি ও খুচরা বিক্রয়মূল্য প্রদর্শন করতে হবে। এ ছাড়া এসব পণ্যের কেনা দামের মূল রসিদও দোকান বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে সংরক্ষণ করতে হবে।’

ধান, চাল, গম, ভুট্টা, পাট, চা, তুলা, তামাক, ডাল, কালাই, সব ধরনের মাছ, পেঁয়াজ, রসুন, আদা, হলুদ, কাঁচা মরিচ, শুকনা মরিচ, ধনিয়া, কালিজিরা, ডিম, দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত দ্রব্য, পান, সুপারি, সব ধরনের ভুসি, ডাব, নারকেল, চিড়া, মুড়ি, সুজি, সেমাই, আটা, ময়দা, কৃষিপণ্যের রস ও জুস, আচার, বেসন, চিপস এবং প্রক্রিয়াজাত পণ্য উৎপাদক পর্যায়ে ৩০ শতাংশ, পাইকারিতে ১৫ শতাংশ ও খুচরায় সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ হারে মুনাফা করা যাবে।

এ ছাড়া রাই, সরিষা, তিল, তিশি, বাদাম, নারকেল, রেঢ়ি, সূর্যমুখী, সয়াবিনসহ তেলবীজে উৎপাদক পর্যায়ে ৩০ শতাংশ, পাইকারিতে ১৫ শতাংশ ও খুচরায় সর্বোচ্চ ৩০ এবং ইক্ষু ও গুড় বিক্রিতে উৎপাদক পর্যায়ে ৩০ শতাংশ, পাইকারিতে ১৫ শতাংশ ও খুচরায় ৩০ শতাংশ লাভ করা যাবে।

সকল প্রকার তাজা ও শুকনা ফল উৎপাদক পর্যায়ে ৩০ শতাংশ, পাইকারিতে ২০ শতাংশ ও খুচরায় ৩০ শতাংশ; সকল প্রকার তাজা ও শুকনা ফুল, ক্যাকটাস, অর্কিড, পাতাবাহার এবং আলুসহ সকল প্রকার শাকসবজি উৎপাদক পর্যায়ে ৪০ শতাংশ, পাইকারিতে ২৫ শতাংশ ও খুচরায় ৩০ শতাংশ লাভ করা যাবে। আর পেঁয়াজ, রসুন, আদা, হলুদ ও কাঁচা মরিচ উৎপাদক পর্যায়ে ৪০ শতাংশ, পাইকারিতে ২০ শতাংশ ও খুচরায় সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ লাভ করা যাবে বলে বিধিমালায় উল্লেখ হয়েছে।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের উপপরিচালক (নীতি ও পরিকল্পনা) শাহানাজ বেগম নীনা আজকের পত্রিকাকে বলেন, সুপার শপসহ দেশের সব বাজারেই কৃষিপণ্যগুলো সরকার-নির্ধারিত সর্বোচ্চ মুনাফা অনুযায়ী বিক্রি করতে হবে। সরকারের বেঁধে দেওয়া হারের থেকে বেশি মুনাফা করলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সর্বোচ্চ মুনাফার হারের সঙ্গে পণ্য পরিবহনের খরচসহ অন্যান্য খরচও যুক্ত থাকবে।

কেন কৃষিপণ্যের সর্বোচ্চ মুনাফার হার বেঁধে দেওয়া হলো—এমন প্রশ্নে শাহানাজ বেগম বলেন, হঠাৎ ১০০ টাকার পণ্য যদি ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়, তখন বোঝা যাবে পাইকারি বা খুচরায় অতিরিক্ত লাভ করা হচ্ছ। তখন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে। কোনো ভোক্তা সংক্ষুব্ধ হয়ে অভিযোগ করলে কর্তৃপক্ষ তা আমলে নিয়ে ব্যবস্থা নিতে পারবে।

বিধিমালায় কৃষিপণ্য ও কৃষি উপকরণের রপ্তানিকারক, আমদানিকারক, ডিলার, মিলার, সরবরাহকারী, প্রক্রিয়াজাতকারী এবং চুক্তিবদ্ধ ব্যবস্থার সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের জন্য লাইসেন্স ফি নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত