Ajker Patrika

বিমা খাতেও করোনার প্রভাব

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ২৮ নভেম্বর ২০২১, ১২: ০৬
বিমা খাতেও করোনার প্রভাব

দেশে ২০২০ সালের মার্চে করোনার সংক্রমণ শুরু হয়। জনজীবনে পড়ে এর নেতিবাচক প্রভাব। প্রায় থমকে যায় অর্থনীতি। করোনার প্রভাব থেকে রক্ষা পায়নি বিমা খাতও। এ সময় ৩৫টি জীবনবিমা ও ৪৬টি সাধারণ (নন-লাইফ) বিমার সম্পদের ওপর খড়্গ পড়ে। লকডাউনের সময় ব্যবসা কমে যাওয়া এবং বিমার দাবি বৃদ্ধি পাওয়ায় ৮১টি বিমার সম্পদের ঘাটতি দেখা যায়।

২০২০ সালের শেষে বিমা খাতে সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৫ হাজার ৩৮৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। ২০১৯ সালে যা ছিল ৫৩ হাজার ৩৭৪ কোটি ১ লাখ টাকা। অর্থাৎ করোনার কারণে মাত্র এক বছরের ব্যবধানে সম্পদ হিসাবে ৭ হাজার ৯৮৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকা বা ১৪ দশমিক ৯৬ শতাংশ কমেছে।

বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) কাছে সম্প্রতি জমাকৃত বিমা কোম্পানিগুলোর ২০২০ সালের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

২০১৯ সালে ৪৬টি নন-লাইফ বিমার সম্পদের পরিমাণ ছিল ১২ হাজার ১৯৯ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। করোনা শুরুর পরে তা ২০২০ সালের ডিসেম্বরে হয়েছে ৯ হাজার ১৭৩ কোটি ৯ লাখ টাকা। অর্থাৎ এক বছরের মধ্যে সম্পদ কমেছে ৩ হাজার ২৬ কোটি ৪০ লাখ টাকা।

২০১৯ সালে ৩৫টি জীবনবিমার সম্পদের পরিমাণ ছিল ৪১ হাজার ১৭৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা এবং ২০২০ সালে তা হয়েছে ৩৬ হাজার ২১৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। এক বছরের ব্যবধানে সম্পদ কমেছে ৪ হাজার ৯৫৯ কোটি ৩ লাখ টাকা। জীবনবিমার তুলনায় সাধারণ (নন-লাইফ) বিমার সম্পদ কমেছে প্রায় দ্বিগুণ।

২০২০ সালের ডিসেম্বরে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইনস্যুরেন্সের সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬৪৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকা, যা ২০১৯ সালে ছিল ৪ হাজার ৩৪৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। ন্যাশনাল লাইফ ইনস্যুরেন্সের ২০২০ সালের সম্পদ ৪ হাজার ৪ কোটি ৮২ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে, যা ২০১৯ সালে ছিল ৪ হাজার ৫৮০ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। ডেলটা লাইফ ইনস্যুরেন্সের সম্পদ ২০২০ সালে হয়েছে ৩ হাজার ৮৬২ কোটি ৪০ লাখ টাকা, যা ২০১৯ সালে ছিল ৪ হাজার ৪২১ কোটি ৪১ লাখ টাকা।

এদিকে পপুলার লাইফ ইনস্যুরেন্স কোম্পানির সম্পদের পরিমাণ ২০২০ সালে এসে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৮৬৯ কোটি ৩০ লাখ টাকা, যা ২০১৯ সালে ছিল ২ হাজার ২৬৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা। আর রাষ্ট্রমালিকানাধীন জীবন বীমা করপোরেশনের সম্পদ ২০২০ সালে হয়েছে ১ হাজার ৯৮১ কোটি ৬৫ লাখ টাকা, যা ২০১৯ সালে ছিল ২ হাজার ২২২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। এ প্রতিষ্ঠানের এক বছরের ব্যবধানে সম্পদ কমেছে ২৪০ কোটি ৭৪ লাখ টাকা।

এ বিষয়ে আইডিআরএর নির্বাহী পরিচালক শাকিল আক্তার বলেন, করোনাকালে বিমা কোম্পানিগুলোর বিমার দাবি স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে গিয়েছিল। কিন্তু আয় কিছুটা কমে যায়। ফলে এসব কোম্পানির সম্পদের পরিমাণ কমেছে।

ইনস্যুরেন্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ কবির হোসেন বলেন, কোম্পানিগুলোর বিমার দাবি বেড়েছে। এ ছাড়া আয় কমলেও খরচ একই হারে চলমান ছিল।

সাধারণ বিমা করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ শাহরিয়ার আহসান বলেন, দেশের নন-লাইফ বিমা খাতে ব্যবসা কমে যাওয়ার প্রধান কারণ অগ্নি ও সামুদ্রিক বিমা খাতে শুল্কের হার হ্রাস। ২০২০ সালে প্রিমিয়াম থেকে প্রাপ্ত আয় এর আগের বছরের তুলনায় কমেছে। কিন্তু বিমার দাবি পরিশোধ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে বিমা কোম্পানিগুলোর সম্পদ কমেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত