Ajker Patrika

খাসির মাংস বিক্রেতাদের ধর্মঘট, বিপাকে ক্রেতারা

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাভার
আপডেট : ১১ জুন ২০২২, ০৯: ৪৬
খাসির মাংস বিক্রেতাদের ধর্মঘট, বিপাকে ক্রেতারা

নিজের জন্মদিন উপলক্ষে গতকাল শুক্রবার পরিবার ও বন্ধুদের জন্য বাসায় মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করেছিলেন সাভার উত্তরপাড়ার অসীম চৌধুরী। অন্যান্য পদের সঙ্গে তালিকায় ছিল খাসির রেজালাও। কিন্তু সাভারের মাংস বিক্রেতারা ধর্মঘটে থাকায় তিনি খাসির মাংস জোগাড় করতে পারেননি। পরে মুরগি আর মাছ দিয়েই সেরেছেন আপ্যায়ন।

শুধু অসীম চৌধুরী নন, গত দুই দিন ধরে বিয়েসহ নানা সামাজিক অনুষ্ঠানের আয়োজকদের খাসির মাংস না পেয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে।

খাসি প্রতি টোল এ বছর ১০ গুণ বাড়িয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে সাভার পৌর এলাকার খাসির মাংস বিক্রেতারা গত বৃহস্পতিবার থেকে ধর্মঘট করে যাচ্ছেন। এ কারণে গত দুই দিন ধরে পৌর এলাকায় খাসি জবাই বা মাংস বিক্রি হচ্ছে না। টোল না কমালে অনির্দিষ্টকালের জন্য তাঁরা ধর্মঘট চালিয়ে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।

সাভার নামাবাজারের মাংস বিক্রেতা আব্দুল হাদি বলেন, ‘সাত বছরেরও বেশি সময় ধরে আমরা একটা খাসি জবাই করলে তার জন্য পাঁচ টাকা করে টোল দিয়ে আসছিলাম। এবার খাসি প্রতি টোল দাবি করা হচ্ছে ৫০ টাকা। বাধ্য হয়ে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছি।’

খাসির মাংস বিক্রেতা আব্দুল হাই বলেন, ‘প্রায় ৫০ বছর ধরে নামাবাজারে ব্যবসা করছি। আমার বাপ-চাচারাও এই বাজারে খাসির মাংস বিক্রি করে গেছেন। কিন্তু টোল আদায়ের প্রতিবাদে কোনো দিন তাঁদের মাংস বিক্রি বন্ধ রাখতে হয়নি।’

ব্যবসায়ী সাইদুর রহমান জানান, সাভার নামাবাজারে ছয়জন ব্যবসায়ী গড়ে প্রতিদিন ৬০টি খাসি জবাই করে মাংস বিক্রি করে থাকেন। বছরে এই সংখ্যা দাঁড়ায় ২১ হাজার ৬০০ টি। খাসি প্রতি ৫০ টাকা করে টোল আদায় করা হলে বছরে টোলের পরিমাণ দাঁড়ায় ১০ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

পৌর এলাকার ওয়াপদা সড়কের খাসির মাংস বিক্রেতা নান্টু মিয়া বলেন, ‘মাংসের বাজারের ইজারা পেয়েছেন একজন মাংস বিক্রেতা। তিনি এক লাফে ১০ গুণ টোল বাড়িয়ে দিয়ে ব্যবসায়ীদের বেকায়দায় ফেলে দিয়েছেন। এখন মাংসের দাম বাড়াতে হবে। বিক্রি কমে যাবে।’

সাভারের বিরুলিয়ার ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন জানান, গতকাল শুক্রবার তাঁর ছোট ভাইয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। এ জন্য তাঁর ৪০ কেজি খাসির মাংসের প্রয়োজন ছিল। মাংস বিক্রেতারা ধর্মঘটে থাকায় তিনি সাভার থেকে মাংস জোগাড় করতে পারেননি। পরে নিরুপায় হয়ে পাশের বাজার থেকে মাত্র ১০ কেজি মাংস জোগাড় করতে সক্ষম হয়েছেন।

মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ইজারাদার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমি ব্যস্ত আছি, পরে কথা বলব।’

সাভার পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী বলেন, ‘খাসি প্রতি সরকার নির্ধারিত টোল ৫০ টাকা। ইজারাদার তাই আদায় করছেন। এতে কারও আপত্তি থাকলে তাঁরা নিজেরা বসে সমঝোতা করে নিতে পারেন।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত