Ajker Patrika

জ্যাকলিনের সিদ্ধান্ত

সম্পাদকীয়
জ্যাকলিনের সিদ্ধান্ত

পিকাসোর জীবনে অনেক নারীই এসেছেন। তবে আমরা আজ বলব তাঁর আশি বছর বয়সের নতুন প্রেম নিয়ে। যে মেয়েটির সঙ্গে তিনি নিজেকে জড়ালেন এবার, তাঁর নাম জ্যাকলিন রোক। পাড়ার এক দোকানে অল্পবয়সী মেয়েটির সঙ্গে দেখা হয়ে গিয়েছিল পিকাসোর। সে সময় মেয়েটি একটি অসফল বিয়ের যন্ত্রণায় ভুগে বেরিয়ে এসেছিল সেই সম্পর্ক থেকে। তাঁর ছিল কেটি নামে একটি ছোট্ট মেয়ে।

১৯৬১ সালের ১৪ মার্চ ফ্রান্সের পত্রিকাগুলো ছাপল একটি সংবাদ। জানা গেল, পিকাসো আবার বিয়ে করছেন। কনে জ্যাকলিন রোক। পিকাসোর বন্ধুরা এটাকে গুজব বলে উড়িয়ে দিলেন। কিন্তু তাঁরা খবরটি বিশ্বাস করতে বাধ্য হলেন ২৪ মার্চ তারিখের একটি ঘটনায়। এ দিন বালোরিসার মেয়র অফিসে এই দুজনের বিয়ে নিবন্ধিত হলো।
খুব সাদামাটা ছিল বিয়েটা, জাঁকজমকের কোনো চিহ্ন ছিল না তাতে। এমনকি বিয়ে হয়ে যাওয়ার দশ দিনের মধ্যে মেয়র, দুই সাক্ষী ছাড়া আর কেউ বিয়ের কথা জানতেন না। জ্যাকলিন ছিলেন একেবারে অন্য রকম নারী। পিকাসোকে কাজের সুযোগ করে দিয়ে বাড়ি সামলানোর পুরো দায়িত্ব তিনি তুলে নিয়েছিলেন নিজের কাঁধে। তিনি পিকাসোর মৃত্যুর পর একসময় বলেছিলেন, ‘পিকাসো আমার জীবনের সবকিছু—মহান শিল্পী, প্রায় ভগবানতুল্য, আবার একেবারে দুধের শিশু। আমাকে ছাড়া থাকতেই পারতেন না। একটু দূরে গেলেই বলে উঠতেন, ‘জ্যাকলিন, তুমি কোথায়?’

‘জ্যাকলিন তুমি কোথায়’ বাক্যটি এতবার পুনরাবৃত্তি করেছেন পিকাসো যে তাঁদের পোষা টিয়া পাখিটিও শব্দগুলো মুখস্থ করে নিয়েছিল। মাঝে মাঝে জ্যাকলিন বুঝতে পারতেন না, কথাটা বলছে কে, পিকাসো নাকি টিয়া পাখি!

১৯৭৩ সালের ৮ এপ্রিল পিকাসোর মৃত্যু হলে চারদিকে সাড়া পড়ে যায়। কেমন হবে তাঁর শবযাত্রা, তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়। জ্যাকলিন সবাইকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, তাঁর স্বামী জমকালো অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া পছন্দ করতেন না। ভোবনার্গ নামের ছোট্ট শহরের একটি ভজনালয়ে সাদামাটাভাবে হবে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া।
সেভাবেই হলো অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া। জ্যাকলিন, ছেলে পাওলো আর ছোট্ট একটি বন্ধুবলয় উপস্থিত ছিল সমাধিক্ষেত্রে। 

সূত্র: জাহীদ রেজা নূর, পিকাসোর প্রেম

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত