Ajker Patrika

তবু বলব, চ্যাম্পিয়নের মতো খেলেছে পাকিস্তান

আফতাব আহমেদের কলাম
আপডেট : ১৩ নভেম্বর ২০২১, ১২: ২৮
তবু বলব, চ্যাম্পিয়নের মতো খেলেছে পাকিস্তান

কী দুর্দান্ত একটা ম্যাচই-না দেখলাম। এখনো চোখে ভাসছে। অনেকে হয়তো হাসান আলীকে দোষ দিতে চাইবেন না। আমি বলব, তার ক্যাচ হাতছাড়াই ম্যাচটা অস্ট্রেলিয়ার দিকে হেলে দিয়েছে। কারণ, ক্যাচটা হলে ওই সময় নতুন কেউ এসে শাহিন শাহ আফ্রিদির মতো বোলারকে তিনটা ছক্কা মেরে দেবে—বিষয়টি অত সোজা ছিল না। জীবন পেয়ে ম্যাথু ওয়েড যে সাহসটা পেয়েছে, সেই সাহসের প্রদর্শনী ওই ছক্কাগুলো।

শুধু এই ক্যাচ মিস নয়, হাসান কিন্তু বোলিংটাও বাজে করেছে। পুরো বিশ্বকাপে নিজের ছায়া হয়ে থাকা এই বোলারের জায়গায় মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়রকে খেলানোর কথা ভাবতে পারত পাকিস্তান।

উইকেটটা শুরু থেকেই ভালো ছিল। এরপরও ১৭৬ রানের আগে অজিদের থামানোর কাজটা দুর্দান্তভাবে করে যাচ্ছিল পাকিস্তান। কিছু ছোট ছোট ভুল পিছিয়ে দিয়েছে পাকিস্তানকে। মাঝখানে মোহাম্মদ হাফিজকে ওই ওভারটা না দিয়ে ইমাদ ওয়াসিমকেই করালে ভালো হতো। আরেকটা বিষয়—যেখানে কুয়াশা থাকবে, সেখানে কিন্তু টস বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায়। টস জিতলে পাকিস্তানও হয়তো আগে বোলিংই করত।

উইকেট যে ব্যাটারদের কাছে কত বড় ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়ায়, সেটি ওয়েডকে দেখে বোঝা গেল। বাংলাদেশ সিরিজে কী সংগ্রামটাই-না করল সে। সেখানে শাহিনের মতো বোলারকে নির্দ্বিধায় স্কুপ করে ছক্কা মারল। চোখের সৌন্দর্য! কিন্তু এভাবে যদি ওয়েড মিরপুরে মারত, দেখা যেত ফাইন লেগে ক্যাচ হতো।

ডেভিড ওয়ার্নারের রিভিউ না নেওয়া নিয়েও অনেক কথা হচ্ছে। তবে রিজওয়ানের হাতে বল যাওয়ার আগে কিন্তু একটা আওয়াজ হয়েছে। সেই আওয়াজের কারণে বিভ্রান্ত ওয়ার্নার রিভিউ নেওয়ার ঝুঁকিটা নিতে চায়নি।

অস্ট্রেলিয়া দুর্দান্ত খেলে জিতেছে। তবু পুরো টুর্নামেন্টে যেভাবে খেলল পাকিস্তান, দলটার জন্য হাততালি দিতেই হবে। হারার পরও পাকিস্তানের অধিনায়ক বাবর আজম ড্রেসিংরুমে দলকে যেভাবে সাহস জুগিয়ে গেল, অসাধারণ। সে বলল, ‘একটা দলকে গোছানো অনেক কষ্ট; কিন্তু ভেঙে দেওয়া খুব সহজ। কেউ যেন হারার জন্য কারও দিকে আঙুল না তোলে।’ অধিনায়কের এই ইতিবাচক মানসিকতাই দলটাকে বদলে দিয়েছে, যা বুঝলাম। সব মিলিয়ে আমি বাবরের মধ্যে ইমরান খানের ছায়া দেখতে পাচ্ছি।। বাবরের হাতে তাই আমি ২০২২ সালের বিশ্বকাপটা দেখছি।

মোহাম্মদ রিজওয়ানের আইসিইউতে থাকার বিষয়টি শুনে তো বিস্মিত হয়েছি। একটা মানুষ দুই রাত আইসিইউতে ছিল, এরপর খেলতে নেমে গেল, আবার বাউন্সারে মুখে আঘাত পাওয়ার পরও অনড় ছিল। খেলোয়াড়দের মধ্যে দলের জন্য উৎসর্গ করার এই মানসিকতা কিন্তু এসেছে ড্রেসিংরুমে অধিনায়কের এসব বার্তা থেকেই। পাকিস্তানের বিদায় হয়েছে। তবুও আমি বলব, ওরা চ্যাম্পিয়নের মতো খেলেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত