Ajker Patrika

পাশাপাশি মসজিদ-মন্দির

লালমনিরহাট প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ অক্টোবর ২০২১, ১১: ৪১
পাশাপাশি মসজিদ-মন্দির

একই জায়গায় নির্মাণ করা হয়েছে মসজিদ ও মন্দির। আজান হলে মুসলমানেরা যান মসজিদে নামাজ আদায় করতে, আর উপাসনার সময় হিন্দুরা যান মন্দিরে। এভাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নিদর্শন বহন করে আসছে লালমনিরহাট শহরের পুরাণ বাজারে পাশাপাশি একই আঙিনায় অবস্থিত মসজিদ ও মন্দির।

ওই মসজিদ ও মন্দিরের নানা আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয় একই জায়গাতে। হানাহানি ও মতবিরোধ ছাড়াই যুগ যুগ ধরে ধর্মীয় আচার পালন করে আসছেন দুই সম্প্রদায়ের স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মানুষ। প্রতিবছর দুর্গাপূজার সময় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে স্থানটি দেখতে আসেন অনেকে।

স্থানীয়রা জানান, শত বছরেরও বেশি সময় ধরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নিদর্শন বহন করছে লালমনিরহাট শহরের ওই শতবর্ষী মসজিদ ও মন্দির। এ স্থাপনা দুটি নির্মাণের কোনো সঠিক তথ্য পাওয়া না গেলেও জনশ্রুতি রয়েছে ১৮৩৬ সালে দুর্গা মন্দির প্রতিষ্ঠার আগে এখানে কালী মন্দির ছিল। আর সেই কারণে পুরান বাজার এলাকা অনেকের কাছে কালিবাড়ি নামে পরিচিত। অন্যদিকে ১৯০০ সালে এখানে একটি নামাজ ঘর নির্মিত হয়। এ নামাজ ঘরটিই পরবর্তীতে পুরাণ বাজার জামে মসজিদ নামে পরিচিতি পায়। এরপর থেকে সম্প্রীতির সঙ্গে ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি পালন করে আসছে দুই সম্প্রদায়ের মানুষ।

এদিকে, মসজিদ-মন্দির সংলগ্ন খোলা জায়গাটিতে পূজা উপলক্ষে যেমন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের মেলা বসে। কিন্তু এবার করোনার কারণে মেলা বসছে না। তেমনি মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষ এই জায়গায় ওয়াজ মাহফিল ও জানাজা নামাজও আদায় করে থাকে।

ময়মনসিংহ থেকে আগত দর্শনার্থী মুক্তা বেগম বলেন, ‘সম্প্রতি একটি টেলিভিশন চ্যানেলে লাইভে দেখেছি মসজিদ-মন্দির এক জায়গায়। টিভিতে দেখার পর খুব ইচ্ছে ছিল দেখার তাই পরিবারসহ দেখতে চলে এলাম। দেখে খুব ভালো লাগল। একই জায়গায় দুটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান। যে যার ধর্ম পালন করছে। বাংলাদেশ যে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ এর অনন্য দৃষ্টান্ত এটি।’

কালীবাড়ী মন্দির কমিটির সভাপতি ও পুরোহিত শ্রী শংকর চক্রবর্তী বলেন, মসজিদ ও মন্দির কমিটির সদস্যরা বসে ঠিক করে নেওয়া হয় কখন এবং কীভাবে ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি পালন করা হবে। এরই অংশ হিসেবে নামাজের সময়য়ে মন্দিরে বন্ধ থাকে ঢাকের বাদ্য বাজনা।

পুরান বাজার জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা আলাল উদ্দিন জানান, পাশাপাশি মন্দির থাকায় কোনো সমস্যা নেই এবং মিলে মিশে যে যার যার মতো ধর্ম পালন করা হচ্ছে।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর জানান, শত বছরেরও বেশি সময় ধরে একই স্থানে মন্দির-মসজিদের অবস্থান। এখানে যে যার ধর্ম পালন করছেন। এটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির একটি অনন্য নিদর্শন এবং দর্শনীয় স্থান। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন এটি দেখতে মানুষ আসেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত