Ajker Patrika

লাকী আখান্দ্‌

সম্পাদকীয়
লাকী আখান্দ্‌

‘এই নীল মণিহার’, ‘আমায় ডেকো না’, ‘কবিতা পড়ার প্রহর এসেছে’, ‘যেখানে সীমান্ত তোমার’, ‘মা মুনিয়া’, ‘বিতৃষ্ণা জীবনে আমার’, ‘কী করে বললে তুমি’—এই গানগুলো উপহার দিয়েছেন বাংলাদেশের কিংবদন্তি সুরকার, গায়ক লাকী আখান্দ্‌। বাংলা সংগীতের জগতে তিনি সৃষ্টি করেছেন অসংখ্য নন্দিত গান।

তাঁর জন্ম পুরান ঢাকার পাতলাখান লেনের এক সংগীতানুরাগী পরিবারে। পাঁচ বছর বয়সে বাবা আবদুল আলী আখান্দের হাত ধরে সংগীত শিক্ষায় হাতেখড়ি তাঁর। এরপর ১৯৬৩-৬৭ সাল পর্যন্ত টেলিভিশন ও রেডিওতে শিশুশিল্পী হিসেবে অনুষ্ঠানে অংশ নেন। ১৩ বছর বয়সে আধুনিক সংগীতে পাকিস্তান আর্ট কাউন্সিলের পুরস্কার পান। ১৪ বছর বয়সে এইচএমভি পাকিস্তান কোম্পানির সুরকার হিসেবে তাঁর নাম তালিকাভুক্ত হয়। ১৯৭১ সালে ১৬ বছর বয়সে এইচএমভি ইন্ডিয়ায় সুরকার হিসেবে নিযুক্ত হন তিনি।

মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রে যোগ দেন এই কণ্ঠযোদ্ধা। জন্মের পর তাঁর নাম রাখা হয়েছিল এ টি আমিনুল হক। পরে মা নাম বদলে এ টি এম আমিনুল হাসান রেখেছিলেন। তবে যুদ্ধের সময় ভারতে গিয়ে তিনি ছদ্মনাম রাখেন—লাকী আনাম। দেশে থাকা বাবা-মাসহ পরিবারের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করেই এই নাম পাল্টানো। স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্রে তাঁর গান বাজে। পাকিস্তানি আর্মিরা কোনোভাবে আসল পরিচয় জানলে দেশে পরিবারের সদস্যদের মেরে ফেলতে পারে। স্বাধীনতার পর দেশে ফিরে পূর্বপুরুষের পদবি নিয়ে নিজের নাম রাখলেন লাকী আখান্দ্‌।

১৯৮৪ সালে লাকী আখান্দ্‌ তাঁর নিজ নামেই প্রথম একক অ্যালবাম প্রকাশ করেন। অ্যালবামটি সারগাম থেকে বের হয়েছিল। কুমার বিশ্বজিতের কণ্ঠে ‘যেখানে সীমান্ত তোমার’, সামিনা চৌধুরীর কণ্ঠে ‘কবিতা পড়ার প্রহর এসেছে রাতের নির্জনে’ এবং জেমসের কণ্ঠে ‘লিখতে পারি না কোনো গান আর তুমি ছাড়া’ কালজয়ী গানগুলোর সুর করেছেন লাকী আখান্দ।

স্বনামধন্য এই শিল্পী ২০১৭ সালের ২১ এপ্রিল ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত