পৃথিবী গ্রহে নতুন প্রাকৃতিক বিপর্যয় হিসেবে আবির্ভুত হয়েছে তীব্র তাপপ্রবাহ। তাপপ্রবাহ মানুষের দৈনন্দিন জীবনকেই শুধু অস্বস্তিকর করে তোলে না, মানব স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্যও মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করে।
ফসলের ব্যাপক ক্ষতি এবং দাবানলের ঝুঁকি বাড়াতে ক্রমবর্ধমান তাপপ্রবাহ যে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলে সেটি তো এরই মধ্যে স্পষ্ট হয়েছে। ২০১৯ সালে চরম তাপ বিশ্বব্যাপী ৩ লাখ ৫৬ হাজার মানুষের মৃত্যুর কারণ ছিল বলে ধারণা করা হয়। অর্থাৎ সবচেয়ে বিপজ্জনক অথচ উপেক্ষিত প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোর মধ্য একটি হয়ে উঠেছে তাপপ্রবাহ। তাপপ্রবাহের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে এখনও সঠিক কোনো হিসাব-নিকাশ না থাকলেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ধারণা অনুযায়ী, ১৯৯৮ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ১ লাখ ৬৬ হাজার মানুষ তাপপ্রবাহের কারণে মারা গেছে। অভিজ্ঞতা বলছে, সারা বিশ্বেই তাপপ্রবাহের বিপর্যয়ের মুখে পড়া মানুষের সংখ্যা বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন ভবিষ্যতে তাপপ্রবাহকে আরও ঘন ঘন এবং তীব্র করে তুলবে। তার মানে, এই বিপর্যয় এড়ানোর আর সুযোগ নেই। তাহলে এই দুর্যোগ থেকে বাঁচার উপায় হলো অভিযোজন।
এখন কথা হলো, তাপপ্রবাহে আপনি কীভাবে ঠান্ডা থাকবেন? এর জন্য প্রাচীন ও আধুনিক অনেক কৌশল আছে।
প্রথমত সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টার মধ্যে সরাসরি সূর্যের আলোতে না থাকা। কারণ এই সময়টাতেই সূর্যের তেজ বেশি থাকে। দিনের উষ্ণতম সময়ে বাড়ির ভেতরে বা ছায়াযুক্ত স্থানে থাকা উচিত। গরম এবং ঠান্ডা পানীয়সহ প্রচুর পরিমাণে তরল পান করাও জরুরি। স্ট্রবেরি, শসা, লেটুস এবং তরমুজের মতো উচ্চ পানিযুক্ত খাবার খেলে পানিশূন্যতা থেকে বাঁচা যাবে। মশলাদার এবং গরম খাবারও কিন্তু কাজে দেয়। কারণ এতে বেশি ঘাম হয়। এতে শরীর ঠান্ডা থাকে।
গরমের সময় রঙিন বা কালো পোশাক না পরা ভালো এমনটা অনেকে বলেন। তবে গরমে পোশাকের রঙের কোনো প্রভাব আছে কি না তা নিঃসন্দেহে প্রমাণিত নয়। যদিও ১৯৮০-এর দশকে বেদুইনদের ওপর পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, গরম থেকে বাঁচতে হালকা বা গাঢ় রঙের পোশাক পরার মধ্যে পার্থক্য সামান্যই। বরং ঢিলেঢালা পোশাক ত্বকে বাতাস লাগতে সহায়তা করে।
ঘর ঠান্ডা রাখার জন্য সব জানালা দরজা খোলা রাখা কিন্তু বুদ্ধিমানের কাজ নয়। সব খোলা রাখলে যদি ঘরের বাইরের তাপমাত্রা ভেতরের চেয়ে বেশি হয় তবে একটি সম্ভাব্য শীতল আশ্রয় হারাবেন। বরং সূর্যের দিকের অংশের পর্দা নামিয়ে রাখুন।
বাড়ি শীতল রাখার সবচেয়ে সহজ উপায়গুলোর মধ্যে একটি হলো পানি বাষ্পীভূত হয়ে বাতাসের তাপমাত্রা কমে যাওয়ার সুবিধাটা নেওয়া। ঠান্ডা ঝরনা বা সাঁতার কাটা শরীর দ্রুত ঠান্ডা হতে সাহায্য করবে। প্রাচীন সমাজে মানুষ জানালার সামনে মাটির পাত্র বা ভেজা চাদর রাখত, যা বাতাস ঠান্ডা করতে সাহায্য করত। আপনি যদি বরফের বাটি বা শীতল ভেজা চাদরের ওপর তাক করে ফ্যান রাখেন তাহলেও এই কাজটা হবে।
তবে ফ্যানের কার্যকারিতা কতোখানি তার সপক্ষের প্রমাণগুলো বেশ মিশ্র। সাধারণত, ফ্যানের বাতাস ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা হ্রাসে সাহায্য করে বলে মনে করা হয়। এর বেশি হলে কিন্তু শরীরে উল্টো গরম বাতাস লাগবে, তাতে আরও ক্ষতি হবে। পানিশূন্যতার সমস্যা দেখা দেবে। আবার মনে রাখতে হবে, ফ্যান চলে মোটরে। মোটরও গরম হয়। তাই ফ্যান চালানোর সময় বাতাস চলাচল ঠিক রাখতে জানালা হালকা খোলা রাখা ভালো।
দীর্ঘমেয়াদে বাড়ি এবং বড় ভবনগুলো শীতল রাখতে উইন্ড ক্যাচার টাওয়ার রাখা ভালো। এতে বায়ুচলাচলের একটা ব্যবস্থা হয়। বাড়ি শীতল রাখতে সহস্রাব্দ ধরে মানুষ সবুজ ছাদ এবং সবুজ করিডোর ব্যবহার করছে। শহর শীতল রাখার জন্য গাছ লাগানো সবচেয়ে কার্যকর উপায়। এমনকি একটি রাস্তা বা বাগানের একটি গাছও উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবেশ শীতল রাখে। টোকিওর মতো কিছু বড় শহরে শীতল রাখার নতুন উপায় নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে। সোলার-ব্লকিং পেইন্ট থেকে শুরু করে নতুন ধরনের কম-শক্তির শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা স্থাপন করা হচ্ছে।
তাপপ্রবাহের মধ্যে ঘুম
মানুষের ঘুমের চক্রে তাপমাত্রা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ঘুমানোর সময় যতো কাছে আসে শরীরের তাপমাত্রা হৃদস্পন্দনের সঙ্গে কমে যায়। হাত এবং পায়ের শিরাগুলোতে রক্তপ্রবাহ বাড়ে, এতে ত্বকের তাপমাত্রা বাড়ে ফলত শরীরের তাপামাত্রা কমে যায়।
কিন্তু গরম, আর্দ্র ও ঘর্মাক্ত রাতে শরীরের তাপ হারানো কঠিন হয়ে পড়ে। গরম রাতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। ফলে পরের দিনটি যায় ক্লান্তির মধ্যে।
বিছানার চাদর, ডুভেট এবং রাতের পোশাক যেমন পাতলা পায়জামা ত্বকের চারপাশে একটি মাইক্রোক্লিমেট তৈরি করতে সাহায্য করে, যা শরীরের সর্বোত্তম তাপমাত্রা বজায় রাখে। অনেকে অত্যধিক গরমের সময় বিছানার চাদর সরিয়ে ফেলেন। গবেষণা বলছে, এটা সহায়ক নয়। কারণ চাদর ছাড়া থাকলে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা ব্যাহত হয়। তাই একটি পাতলা চাদর রাখা উচিত। এতে ঘুমও ভালো হবে। সেই সঙ্গে সিলিং ফ্যান হালকা করে চালিয়ে রাখুন। গভীর রাতের খাবার এড়িয়ে চলাও শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করতে পারে।
তাপপ্রবাহ মাথাব্যথা এবং পানিশূন্যতা থেকে হার্ট অ্যাটাক এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা প্রকট করতে পারে। এতে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা তো বটেই এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।
ধারণা করা হয়, বিশ্বের জনসংখ্যার অর্ধেক এবং প্রায় ১০০ কোটি শ্রমিক ক্ষতিকারক উচ্চ তাপমাত্রার সময় ঘরের বাইরে থাকে। গরম আবহাওয়া গর্ভাবস্থা এবং সন্তান প্রসবে জটিলতা তৈরি করতে পারে। এছাড়া উচ্চ আত্মহত্যার হার, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মতো জটিলতার হারও বাড়িয়ে দিতে পারে।
কিছু ওষুধ গরম আবহাওয়ার সময় ঝুঁকি বাড়াতে পারে। মৃগী রোগ এবং পারকিনসনের জন্য কিছু ওষুধ ঘাম কমাতে এবং ঠান্ডা থাকা কঠিন করে তোলে। মূত্রবর্ধক ওষুধ প্রস্রাব হিসেবে শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি বের করে দিতে পারে এবং খনিজের ভারসাম্যহীনতা তৈরি করতে পারে।
তাপপ্রবাহ বৈষম্য তীব্র করে?
জলবায়ু পরিবর্তন সবাইকে সমানভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে না। প্রভাবগুলো অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে দরিদ্রদের ক্ষতিগ্রস্ত করে। যেমন, জলবায়ু পরিবর্তনে খুব সামান্যই অবদান রাখা আফ্রিকার দেশগুলো খরা এবং দাবদাহ প্রবলভাবে অনুভব করে। কিন্তু আফ্রিকার এই বিপর্যয় সেভাবে গণমাধ্যমে গুরুত্ব পায় না যতোটা গুরুত্ব পায় ইউরোপ-আমেরিকার উন্নত দেশগুলোর খবর। জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলনেও আফ্রিকার ক্ষীণ কণ্ঠস্বর তেমন একটা বাজে না।
মস্তিষ্কে তাপপ্রবাহের প্রভাব
উষ্ণ আবহাওয়ায় মানুষের মনমেজাজও একটু চড়া থাকে। তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সবাই একটু বেশি খিটখিটে, রাগান্বিত থাকে। মানসিক চাপ বাড়ে এবং মানুষকে কম খুশি মনে হয়। গরমের মধ্যে গাড়িচালকেরা যখন যানজটে আটকে থাকেন তখন তাঁদের বারবার হর্ন বাজানোর প্রবণতা বাড়ে এবং তাদের মধ্যে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ লক্ষ্য করা যায়।
পৃথিবী গ্রহে নতুন প্রাকৃতিক বিপর্যয় হিসেবে আবির্ভুত হয়েছে তীব্র তাপপ্রবাহ। তাপপ্রবাহ মানুষের দৈনন্দিন জীবনকেই শুধু অস্বস্তিকর করে তোলে না, মানব স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্যও মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করে।
ফসলের ব্যাপক ক্ষতি এবং দাবানলের ঝুঁকি বাড়াতে ক্রমবর্ধমান তাপপ্রবাহ যে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলে সেটি তো এরই মধ্যে স্পষ্ট হয়েছে। ২০১৯ সালে চরম তাপ বিশ্বব্যাপী ৩ লাখ ৫৬ হাজার মানুষের মৃত্যুর কারণ ছিল বলে ধারণা করা হয়। অর্থাৎ সবচেয়ে বিপজ্জনক অথচ উপেক্ষিত প্রাকৃতিক দুর্যোগগুলোর মধ্য একটি হয়ে উঠেছে তাপপ্রবাহ। তাপপ্রবাহের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে এখনও সঠিক কোনো হিসাব-নিকাশ না থাকলেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ধারণা অনুযায়ী, ১৯৯৮ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ১ লাখ ৬৬ হাজার মানুষ তাপপ্রবাহের কারণে মারা গেছে। অভিজ্ঞতা বলছে, সারা বিশ্বেই তাপপ্রবাহের বিপর্যয়ের মুখে পড়া মানুষের সংখ্যা বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন ভবিষ্যতে তাপপ্রবাহকে আরও ঘন ঘন এবং তীব্র করে তুলবে। তার মানে, এই বিপর্যয় এড়ানোর আর সুযোগ নেই। তাহলে এই দুর্যোগ থেকে বাঁচার উপায় হলো অভিযোজন।
এখন কথা হলো, তাপপ্রবাহে আপনি কীভাবে ঠান্ডা থাকবেন? এর জন্য প্রাচীন ও আধুনিক অনেক কৌশল আছে।
প্রথমত সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টার মধ্যে সরাসরি সূর্যের আলোতে না থাকা। কারণ এই সময়টাতেই সূর্যের তেজ বেশি থাকে। দিনের উষ্ণতম সময়ে বাড়ির ভেতরে বা ছায়াযুক্ত স্থানে থাকা উচিত। গরম এবং ঠান্ডা পানীয়সহ প্রচুর পরিমাণে তরল পান করাও জরুরি। স্ট্রবেরি, শসা, লেটুস এবং তরমুজের মতো উচ্চ পানিযুক্ত খাবার খেলে পানিশূন্যতা থেকে বাঁচা যাবে। মশলাদার এবং গরম খাবারও কিন্তু কাজে দেয়। কারণ এতে বেশি ঘাম হয়। এতে শরীর ঠান্ডা থাকে।
গরমের সময় রঙিন বা কালো পোশাক না পরা ভালো এমনটা অনেকে বলেন। তবে গরমে পোশাকের রঙের কোনো প্রভাব আছে কি না তা নিঃসন্দেহে প্রমাণিত নয়। যদিও ১৯৮০-এর দশকে বেদুইনদের ওপর পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, গরম থেকে বাঁচতে হালকা বা গাঢ় রঙের পোশাক পরার মধ্যে পার্থক্য সামান্যই। বরং ঢিলেঢালা পোশাক ত্বকে বাতাস লাগতে সহায়তা করে।
ঘর ঠান্ডা রাখার জন্য সব জানালা দরজা খোলা রাখা কিন্তু বুদ্ধিমানের কাজ নয়। সব খোলা রাখলে যদি ঘরের বাইরের তাপমাত্রা ভেতরের চেয়ে বেশি হয় তবে একটি সম্ভাব্য শীতল আশ্রয় হারাবেন। বরং সূর্যের দিকের অংশের পর্দা নামিয়ে রাখুন।
বাড়ি শীতল রাখার সবচেয়ে সহজ উপায়গুলোর মধ্যে একটি হলো পানি বাষ্পীভূত হয়ে বাতাসের তাপমাত্রা কমে যাওয়ার সুবিধাটা নেওয়া। ঠান্ডা ঝরনা বা সাঁতার কাটা শরীর দ্রুত ঠান্ডা হতে সাহায্য করবে। প্রাচীন সমাজে মানুষ জানালার সামনে মাটির পাত্র বা ভেজা চাদর রাখত, যা বাতাস ঠান্ডা করতে সাহায্য করত। আপনি যদি বরফের বাটি বা শীতল ভেজা চাদরের ওপর তাক করে ফ্যান রাখেন তাহলেও এই কাজটা হবে।
তবে ফ্যানের কার্যকারিতা কতোখানি তার সপক্ষের প্রমাণগুলো বেশ মিশ্র। সাধারণত, ফ্যানের বাতাস ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তাপমাত্রা হ্রাসে সাহায্য করে বলে মনে করা হয়। এর বেশি হলে কিন্তু শরীরে উল্টো গরম বাতাস লাগবে, তাতে আরও ক্ষতি হবে। পানিশূন্যতার সমস্যা দেখা দেবে। আবার মনে রাখতে হবে, ফ্যান চলে মোটরে। মোটরও গরম হয়। তাই ফ্যান চালানোর সময় বাতাস চলাচল ঠিক রাখতে জানালা হালকা খোলা রাখা ভালো।
দীর্ঘমেয়াদে বাড়ি এবং বড় ভবনগুলো শীতল রাখতে উইন্ড ক্যাচার টাওয়ার রাখা ভালো। এতে বায়ুচলাচলের একটা ব্যবস্থা হয়। বাড়ি শীতল রাখতে সহস্রাব্দ ধরে মানুষ সবুজ ছাদ এবং সবুজ করিডোর ব্যবহার করছে। শহর শীতল রাখার জন্য গাছ লাগানো সবচেয়ে কার্যকর উপায়। এমনকি একটি রাস্তা বা বাগানের একটি গাছও উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবেশ শীতল রাখে। টোকিওর মতো কিছু বড় শহরে শীতল রাখার নতুন উপায় নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চলছে। সোলার-ব্লকিং পেইন্ট থেকে শুরু করে নতুন ধরনের কম-শক্তির শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা স্থাপন করা হচ্ছে।
তাপপ্রবাহের মধ্যে ঘুম
মানুষের ঘুমের চক্রে তাপমাত্রা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ঘুমানোর সময় যতো কাছে আসে শরীরের তাপমাত্রা হৃদস্পন্দনের সঙ্গে কমে যায়। হাত এবং পায়ের শিরাগুলোতে রক্তপ্রবাহ বাড়ে, এতে ত্বকের তাপমাত্রা বাড়ে ফলত শরীরের তাপামাত্রা কমে যায়।
কিন্তু গরম, আর্দ্র ও ঘর্মাক্ত রাতে শরীরের তাপ হারানো কঠিন হয়ে পড়ে। গরম রাতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। ফলে পরের দিনটি যায় ক্লান্তির মধ্যে।
বিছানার চাদর, ডুভেট এবং রাতের পোশাক যেমন পাতলা পায়জামা ত্বকের চারপাশে একটি মাইক্রোক্লিমেট তৈরি করতে সাহায্য করে, যা শরীরের সর্বোত্তম তাপমাত্রা বজায় রাখে। অনেকে অত্যধিক গরমের সময় বিছানার চাদর সরিয়ে ফেলেন। গবেষণা বলছে, এটা সহায়ক নয়। কারণ চাদর ছাড়া থাকলে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা ব্যাহত হয়। তাই একটি পাতলা চাদর রাখা উচিত। এতে ঘুমও ভালো হবে। সেই সঙ্গে সিলিং ফ্যান হালকা করে চালিয়ে রাখুন। গভীর রাতের খাবার এড়িয়ে চলাও শরীর ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করতে পারে।
তাপপ্রবাহ মাথাব্যথা এবং পানিশূন্যতা থেকে হার্ট অ্যাটাক এবং শ্বাসকষ্টের সমস্যা প্রকট করতে পারে। এতে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা তো বটেই এমনকি মৃত্যুও হতে পারে।
ধারণা করা হয়, বিশ্বের জনসংখ্যার অর্ধেক এবং প্রায় ১০০ কোটি শ্রমিক ক্ষতিকারক উচ্চ তাপমাত্রার সময় ঘরের বাইরে থাকে। গরম আবহাওয়া গর্ভাবস্থা এবং সন্তান প্রসবে জটিলতা তৈরি করতে পারে। এছাড়া উচ্চ আত্মহত্যার হার, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মতো জটিলতার হারও বাড়িয়ে দিতে পারে।
কিছু ওষুধ গরম আবহাওয়ার সময় ঝুঁকি বাড়াতে পারে। মৃগী রোগ এবং পারকিনসনের জন্য কিছু ওষুধ ঘাম কমাতে এবং ঠান্ডা থাকা কঠিন করে তোলে। মূত্রবর্ধক ওষুধ প্রস্রাব হিসেবে শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি বের করে দিতে পারে এবং খনিজের ভারসাম্যহীনতা তৈরি করতে পারে।
তাপপ্রবাহ বৈষম্য তীব্র করে?
জলবায়ু পরিবর্তন সবাইকে সমানভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে না। প্রভাবগুলো অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে দরিদ্রদের ক্ষতিগ্রস্ত করে। যেমন, জলবায়ু পরিবর্তনে খুব সামান্যই অবদান রাখা আফ্রিকার দেশগুলো খরা এবং দাবদাহ প্রবলভাবে অনুভব করে। কিন্তু আফ্রিকার এই বিপর্যয় সেভাবে গণমাধ্যমে গুরুত্ব পায় না যতোটা গুরুত্ব পায় ইউরোপ-আমেরিকার উন্নত দেশগুলোর খবর। জলবায়ু শীর্ষ সম্মেলনেও আফ্রিকার ক্ষীণ কণ্ঠস্বর তেমন একটা বাজে না।
মস্তিষ্কে তাপপ্রবাহের প্রভাব
উষ্ণ আবহাওয়ায় মানুষের মনমেজাজও একটু চড়া থাকে। তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সবাই একটু বেশি খিটখিটে, রাগান্বিত থাকে। মানসিক চাপ বাড়ে এবং মানুষকে কম খুশি মনে হয়। গরমের মধ্যে গাড়িচালকেরা যখন যানজটে আটকে থাকেন তখন তাঁদের বারবার হর্ন বাজানোর প্রবণতা বাড়ে এবং তাদের মধ্যে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ লক্ষ্য করা যায়।
আজ ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আকাশ মেঘলা থাকলেও এ এলাকার আবহাওয়া মূলত শুষ্ক থাকবে বলেই জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আজ মঙ্গলবার, সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার জন্য ঢাকা ও আশপাশের এলাকার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
১২ আগস্ট ২০২৫বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী আজ মঙ্গলবারও ঢাকার বায়ুমান ৬০, যা সহনীয় পর্যায়ের বাতাসের নির্দেশক। আজ দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান ৪৯। গতকাল সোমবার ৫৫ বায়ুমান নিয়ে ৬০তম স্থানে ছিল ঢাকা।
১২ আগস্ট ২০২৫আজ ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার আকাশ মেঘলা থাকলেও এ এলাকর আবহাওয়া মূলত শুষ্ক থাকবে বলেই জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আজ সোমবার, সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার জন্য ঢাকা ও আশপাশের এলাকার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
১১ আগস্ট ২০২৫বায়ুমান নিয়ে কাজ করা সুইস প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ারের সকাল ৮টা ৩০ মিনিটের রেকর্ড অনুযায়ী আজ সোমবারও ঢাকার বায়ুমান ৫৫, যা সহনীয় পর্যায়ের বাতাসের নির্দেশক। আজ দূষিত শহরের তালিকায় ঢাকার অবস্থান ৬০।
১১ আগস্ট ২০২৫