Ajker Patrika

চবি উপাচার্যকে শিক্ষার্থী নেটওয়ার্কের পাল্টা শোকজ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
আপডেট : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২১, ২১: ৫৮
চবি উপাচার্যকে শিক্ষার্থী নেটওয়ার্কের পাল্টা শোকজ

পরিবহন ব্যবস্থার দাবি করায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নেটওয়ার্ক। শুধু তা-ই নয়, আজ শুক্রবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শিরীণ আখতার বরাবর পাল্টা শোকজ পাঠিয়েছে সংগঠনটি। 

পরিবহনের দাবিতে হওয়া মানববন্ধনে পালি বিভাগের এক শিক্ষার্থীকে অংশ নিতে বাধ্য করার অভিযোগে তিন শিক্ষার্থীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শিক্ষার্থী নেটওয়ার্কের পাল্টা শোকজে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সম্মিলিত প্ল্যাটফর্ম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নেটওয়ার্ক-এর পক্ষ থেকে গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, সম্প্রতি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক গৃহীত কতিপয় সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের হেনস্তা করা, তাদের সামাজিক মর্যাদা ক্ষুণ্ন করা এবং এক শিক্ষার্থীর কাছ থেকে জোরপূর্বক মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায়ের মধ্য দিয়ে কতিপয় গুরুতর অপরাধ সংগঠিত করা হয়েছে। 

করোনার অজুহাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিভাগে পরীক্ষা নেওয়ার শর্ত হিসেবে, আবাসিক হলে না থাকা এবং যাতায়াত ব্যবস্থার দাবি তোলা যাবে না মর্মে নির্দিষ্ট ফরমে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে মুচলেকা আদায় করা হয়েছে। আমরা মনে করি, চবি প্রশাসনের এই সকল কর্মকাণ্ড নজিরবিহীন এবং চরম স্বেচ্ছাচারিতার বহিঃপ্রকাশ। সংবিধানের ৩৭ ও ৩৯ অনুচ্ছেদে রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে একজন শিক্ষার্থীর সভা সমাবেশ ও স্বাধীন মত প্রকাশের মৌলিক অধিকারকে হরণ করা হয়েছে বলেও এতে উল্লেখ করা হয়েছে। 

শিক্ষার্থীরা বলেন, একটি অবৈধ মুচলেকার ওপর ভিত্তি করে কোনো শিক্ষার্থী কোনো নৈতিক আন্দোলনে যুক্ত হবে কি হবে না সেই প্রশ্ন তোলাই প্রক্টরের এখতিয়ার বহির্ভূত কাজ। এ নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের মধ্য দিয়ে মিটন চাকমার ওপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে এবং তিন ছাত্র নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপনে বাধ্য হয়েছে। যা সরাসরি ফৌজদারি অপরাধের অন্তর্ভুক্ত। 

শোকজে বলা হয়, বাংলাদেশ দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ১০৭ ধারা অনুসারে কোন অপরাধ সংগঠনে সহায়তা করাকে প্ররোচনা বলে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। অথচ সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট যেকোনো দাবিতে মিছিল, মানববন্ধন কিংবা প্রতিবাদ কর্মসূচি করা কোন অপরাধমূলক কাজ নয়। এখানে শিক্ষার্থীরা নিজের অধিকার আদায়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করে। ফলে ছাত্রদের ন্যায্য আন্দোলনে অংশ নেওয়ার জন্য কোনো শিক্ষার্থীকে প্ররোচিত ও বাধ্য করার অভিযোগ একটি অন্তঃসারশূন্য অভিযোগ। 

আরও বলা হয়, অভিযোগকারী মিটন চাকমা বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি তাঁর সংগঠনের পক্ষ থেকে পরিবহনের দাবির পক্ষে সংহতি প্রকাশ করেছেন। ফলে তাঁকে ব্যক্তিগত প্ররোচনার অভিযোগ ভিত্তিহীন। 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কার্যক্রমকে কেন রাষ্ট্রের আইন ও সংবিধান পরিপন্থী ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে অভিযুক্ত তিন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ও ইস্যুকৃত শোকজ নোটিশ কেন প্রত্যাহার করা হবে না-এই মর্মে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নেটওয়ার্কের পক্ষে শোকজে ঢাকা, জাহাঙ্গীরনগর, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, জগন্নাথ, খুলনা, বরিশাল, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, শাবিপ্রবি, বশেমুরবিপ্রবি, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, কুয়েটসহ ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে পঁচাত্তর জন শিক্ষার্থী শোকজে স্বাক্ষর করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত