Ajker Patrika

ইবির হল সংস্কারে নয়ছয় করার অভিযোগ

ইবি প্রতিনিধি
আপডেট : ২৩ নভেম্বর ২০২১, ১৩: ১০
ইবির হল সংস্কারে নয়ছয় করার অভিযোগ

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আটটি হলের সংস্কারকাজ চলছে। কিন্তু সংস্কারকাজে নয়ছয় করার অভিযোগ করেছেন প্রকৌশলী। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করছে বলে জানা গেছে।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়কে সংস্কারকাজের জন্য বরাদ্দ দিয়েছে। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় বরাদ্দ পায় ১ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাদ্দের টাকা আটটি হলকে দেয়। প্রকৌশলী দপ্তর আটটি হলের জন্য আটটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেন্ডারের মাধ্যমে বাছাই করে কাজ দেয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তারা নামে-বেনামে প্রতিষ্ঠান খুলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কারকাজকে টাকা ইনকামের পথ খুলে নিয়েছে। 

প্রকৌশল দপ্তর থেকে মেরামত ও রং করার নির্দেশনা থাকলেও বিস্তারিত কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি ঠিকাদারদের। শিক্ষার্থীদের ওঠার আগেই হলগুলো সংস্কারের জন্য বরাদ্দ দিলেও তিন মাস পরও কাজ শেষ হয়নি। একই দিনে সিন্ডিকেট সভায় ৯ অক্টোবর হল খোলার সিদ্ধান্ত হয়। ফলে সংস্কারকাজের মধ্যেই হলে উঠতে হয় শিক্ষার্থীদের। হলে ওঠার পর নানা রকম ভোগান্তিতে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। চলছে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বর্ষের পরীক্ষা। সংস্কারকাজের শব্দে মনোযোগ দিয়ে পড়াশোনা করতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, হলগুলোতে বিদ্যুৎ ও পানির লাইন কোনো রকমে সচল করায় প্রতিনিয়ত নতুন করে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। আগের বড় বেসিনগুলো সরিয়ে বসানো হয়েছে কম দামের ছোট বেসিন। নষ্ট হয়ে যাওয়া স্টিলের পানির টেপ খুলে দেওয়া হচ্ছে নিম্নমানের প্লাস্টিকের টেপ। কয়েকটি হলে টেপ বসানোর দু-এক দিনের মধ্যে তা ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এ ছাড়া হলের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল ও ভাঙা গুলোতে কোনোরকমে সিমেন্ট ও বালুর প্রলেপ দিয়ে কাজ শেষ করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে লালন শাহ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ওয়ায়দুল ইসলাম বলেন, হল প্রশাসনকে দায়িত্ব দিলে এর এক-তৃতীয়াংশ বরাদ্দেও আরও ভালো কাজ করা সম্ভব ছিল। কিন্তু সিস্টেমে সবকিছু আটকে যায়।

বেগম ফজিলাতুন নেসা মুজিব হলের প্রভোস্ট নিলুফা বানু বলেন, সমস্ত কাজে প্রকৌশল দপ্তরের তদারকির কথা থাকলেও তাঁরা কাজগুলো দেখতেই আসেন না। আমাদের ক্লাস পরীক্ষা থাকার কারণে হলে থাকার সুযোগ হয় না। এই সুযোগে ঠিকাদারেরা তাঁদের মতো করে কাজ করছেন। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী মুন্সী শহীদ উদ্দিন মো. তারেক বলেন, সংস্কারকাজ নিয়ে আমাদের কাছেও অভিযোগ আসছে। কয়েক জায়গার কাজে আমি নিজেও সন্তুষ্ট হতে পারিনি। অভিযোগ পাওয়া মাত্র আমরা লোক পাঠিয়ে সেটা ঠিক করার চেষ্টা করছি। 

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভূঁইয়া বলেন, `এসব বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ আসলে খতিয়ে দেখা হবে।'

বিষয়গুলো নিয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, `হলের কাজ নয়ছয় করলে সেটা আমাদের জন্যই ক্ষতিকর। তবে এ ক্ষেত্রে হল প্রভোস্টদের সচেতন থাকা দরকার। অনিয়ম হলে সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনকে জানাতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত