‘অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য অনলাইন শিক্ষা চলতে পারে না’

ঢাকা: অনলাইনে কেনাকাটা করা আর অনলাইনে শিক্ষা দান এক জিনিস নয়। অনলাইন এডুকেশন শুধুমাত্র সংকট উত্তরণের জন্য চলতে পারে, অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য নয়। অনলাইন এডুকেশন কখনো হাতে কলমে শিক্ষা এবং মানুষের সম্পৃক্ততার বিকল্প মাধ্যম হতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক ড. আলমগীর।  

আজ বৃহস্পতিবার ‘টার্নিটিন ভার্চ্যুয়াল কনক্লেভ: লিভারেজিং টেকনোলজি ফর এনহেনসিং এডুকেশন’ শীর্ষক আন্তজার্তিক সম্মেলনের প্যানেল বক্তা হিসেবে দেশের অনলাইন এডুকেশন বিষয়ক বক্তব্যকালে তিনি এ কথা বলেন।

সভায় সরাসরি পাঠদানের গুরুত্ব তুলে ধরে অধ্যাপক আলমগীর বলেন, সরাসরি পাঠদানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা মানবীয় গুণাবলি অর্জন করে থাকে। এসব কারণেই শিক্ষার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গমন করে, শুধু পাঠ্যবই পড়ার জন্য নয়। আধুনিক প্রযুক্তি গুণগত উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। গবেষণায় চৌর্যবৃত্তি রোধে অ্যান্টি প্লেজারিজম সফটওয়্যার ‘টার্নিটিন’ অনবদ্য ভূমিকা রাখছে।

তিনি বাংলা গবেষণাপত্র এবং পুস্তক ইত্যাদির জন্য ‘টার্নিটিন’-এর আদলে বাংলা ভাষায় উন্নত একটি সফটওয়্যার তৈরির আহ্বান জানান। এ ক্ষেত্রে তিনি দেশীয় প্রযুক্তিবিদদের এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান।

তিনি আরও বলেন, শ্রেণিকক্ষে নানা ধরনের শিক্ষার্থীরা থাকে, তাদের সমস্যাও ভিন্ন রকম। সরাসরি পাঠদানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষকেরা সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করে সমস্যার সমাধান দিতে পারেন। শিক্ষার্থীদের এসব মানবিক সমস্যা অনলাইনের মাধ্যমে দেওয়া সম্ভব নয়।

সংকটকালে অনলাইন শিক্ষাকে কার্যকর করতে ইউজিসির এ সদস্য বলেন, নানা রকম সংকট ও সীমাবদ্ধতা থাকার পরও এটিকে কার্যকর ও জনপ্রিয় করে তুলতে হবে। অনলাইন শিক্ষা কেবল পাঠদান সর্বস্ব না হয়ে এটিকে অংশগ্রহণমূলক ভার্চ্যুয়াল  ক্লাসরুম করতে হবে। অনলাইনে পাঠদানের চলমান সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে ব্লেন্ডেড লার্নিং ব্যবস্থা প্রবর্তন করতে হবে।

দেশের পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণায় চৌর্যবৃত্তি ঠেকাতে কেন্দ্রীয়ভাবে একটি সফটওয়্যার কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউজিসি। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রমের গুণগত মান সংরক্ষণ ও উন্নয়নে এই উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সমাবেশে টার্নিটিনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ক্রিস ক্যারেন স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন। সভায় ভারত, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপালের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষকরা অংশগ্রহণ করেন।